চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্রাশ করা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তথ্য-
মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত একাধিকবার ব্রাশ করার বিকল্প নেই। প্রতিদিন অন্তত দুবার দাঁত ব্রাশ করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। আজ কিন্তু ব্রাশ করার দিন। প্রতিবছর নভেম্বরের ১ তারিখ পালিত হয় ন্যাশনাল ব্রাশ ডে।
দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে নিয়মিত ব্রাশ করার সুফল ও গুরুত্ব সম্পর্কে জনসচেনতা বাড়াতেই পালিত হয় দিবসটি। চলুন আজকের এ দিনে জেনে নেওয়া যাক ব্রাশ করা সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি তথ্য-
খাওয়ার আগে না পরে ব্রাশ করবেন?
আমেরিকান ডেন্টাল অ্যাসোসিয়েশন প্রতিবার দুই মিনিটের জন্য ফ্লোরাইড টুথপেস্ট দিয়ে দিনে অন্তত দু’বার দাঁত ব্রাশ করার পরামর্শ দেয়। আপনি কখন দাঁত ব্রাশ করবেন তা কিন্তু নির্ভর করে কী খাবার খাচ্ছেন তার ওপরে।
আপনি যদি অ্যাসিডিক খাবার বা পানীয় পান করেন তাহলে খাওয়ার পরপরই দাঁত ব্রাশ করবেন না। খাবারের অ্যাসিডগুলো দাঁতের এনামেল দুর্বল করে দেয়। চিকিৎসকদের মতে, দিনে দু’বার দাঁত ব্রাশ করাই যথেষ্ট। ঘুম থেকে উঠে ও ঘুমাতে যাওয়ার আগে। তবে দাঁত ভালো রাখতে প্রতিবার খাওয়ার পরে দাঁত ব্রাশ অথবা ফ্লস করা জরুরি।
ব্রাশ করার সঠিক নিয়ম
আপনি একটি নরম, সম্ভব হলে ছোট টুথব্রাশ ও ফ্লোরাইড জাতীয় টুথপেস্ট বেছে নিন।
২. অল্প পরিমাণ টুথপেস্ট ব্রাশে লাগিয়ে একটু ভিজিয়ে নিন।
৩. ব্রাশ এমনভাবে ধরুন, যাতে অ্যাংগেলটা হয় ৪৫ ডিগ্রি পরিমাণে।
৪. ওপর থেকে নিচ এবং নিচ থেকে ওপরে ব্রাশ করুন।
৫. সামনে-পেছনে দাঁত ব্রাশ করলে দাঁতের গোড়া ক্ষয় হয়ে যেতে পারে।
৬. ওপর এবং নিচের মাড়ির প্রতিটি অংশে যাতে ব্রাশ পৌঁছতে পারে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৭. পেছনের দাঁতের বাইটগুলোতে ওপর-নিচ করে আলতোভাবে ব্রাশ করুন।
৮. একই সঙ্গে সামনের দাঁতগুলোও ভালোভাবে ব্রাশ করে নিন।
৯. সব সময় একই পেস্ট ও ব্রাশ ব্যবহার করবেন না। কেননা একই পেস্ট ব্যবহার করলে মুখে যে জার্ম থাকে, তা পেস্টের সঙ্গে সহনীয় হয়ে যায়।
১০. প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে এবং সকালে নাস্তা করার পরে ব্রাশ করুন।
১১. মিষ্টি বা আঠালো জাতীয় খাবার খাওয়ার পর ব্রাশ করে নিতে পারেন।
১২. ব্রাশ করার ক্ষেত্রে তড়িগড়ি না করে একটু সময় নিয়ে ব্রাশ করুন। তবে ২-৩ মিনিটের মধ্যে করবেন।
এক টুথব্রাশ কতদিন ব্যবহার করবেন?
বেশ কিছু গবেষণা অনুসারে, টুথব্রাশের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে সেটি দাঁতের প্লেক, দাঁত ক্ষয় ও মাড়ির রোগের কারণ হতে পারে। এমনকি কিছু গবেষণা অনুসারে ইনসুলিন বেড়ে বা কমে যাওয়ার সঙ্গেও টুথব্রাশের সম্পৃক্ততা আছে।
নিয়মিত টুথব্রাশ পরিবর্তন না করলে দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা বেড়ে যায়। টুথব্রাশের কার্যকারিতা নিয়ে করা ২০১৩ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৩ মাস ব্যবহারের পরে টুথব্রাশ দাঁতের ফলক অপসারণের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একটি টুথব্রাশ কার্যক্ষমতা হারায়। ফলে দাঁতের বিভিন্ন জায়গাগুলো পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হয় ওই ব্রাশ। একটানা টুথব্রাশ ব্যবহার করার ৪০ দিন পর ব্রিসলস নষ্ট হতে শুরু করে।
ইথিওপিয়ান জার্নাল অব হেলথ সায়েন্সে প্রকাশিত একটি পিয়ার পর্যালোচিত গবেষণায় দখা গেছে, যারা নিয়মিত টুথব্রাশ পরিবর্তন করেন না, তাদের দাঁতে প্লেক জমে বেশি। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, নারীরা গড়ে প্রতি ৯২ দিনে তাদের টুথব্রাশ পরিবর্তন করেন। অনদিকে পুরুষরা গড়ে ১৮৫ দিনে তা করেন।
সূত্র: মায়োক্লিনিক/টাইমস নাউ নিউজ