স্বৈরশাসক হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তাদের দোসররা এখনো সক্রিয়: সেলিমা রহমান
স্বৈরশাসক হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তাদের দোসররা এখনো সক্রিয় জানিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এবং তার দলের অন্য নেতারা ভারতসহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান।
সেলিমা রহমান বলেন, যে লক্ষ্যে বৈষম্যবিরোধীরা আন্দোলন করেছে, বিএনপি গত ১৭ বছর ধরে জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করছে, তা এখনো পূরণ হয়নি। হ্যাঁ, আমাদের একটা সরকার আছে৷ তারা কাজ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু স্বৈরশাসক যিনি পালিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে আশ্রয় নিয়েছেন, তিনি সেখানে বসে একেকদিন একেকটা ফোনকল ছাড়ছেন, আর তাতে পালিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নেতারা দেশের মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। এতে দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি হচ্ছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, মাহিদুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে সংবর্ধনা এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সকল রাজনীতিবিদদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহরের দাবিতে’ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যদিয়ে স্বৈরশাসক দেশ থেকে পালিয়ে গেলেও তাদের দোসররা এখনো সক্রিয়। তারা বিভিন্নভাবে নানা ধরনের সংকট তৈরির চেষ্টা করছে।
বিএনপি ক্ষমতার জন্য লড়াই করে না জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি লড়াই করে জনগণের কল্যাণের জন্য। ১৭ বছরে কত নেতাকর্মী গুম-খুন ও হত্যার শিকার হয়েছে তার হিসাব নেই। আমাদের ওপর দিয়ে কত ঝড় বয়ে গেছে। তারপরও বিএনপি বারবার জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
সেলিমা রহমান আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন ছিল মেইন, তারপর সেটা এক দফা আন্দোলনে পরিণত হয়। সেই আন্দোলনে অনেক মা তার সন্তান হারিয়েছে। অনেক ছেলে তার বাবা হারিয়েছে। আজ অনেকে আহত, তাদের ভবিষ্যৎ এখনো আমরা জানি না। চেষ্টা করা হচ্ছে তাদের সুস্থ করে যেন একটা ভবিষ্যৎ দেওয়া যায়।
তিনি বলেন, এত কষ্টের পর আমরা স্বাধীনতা পেয়েছিলাম, কিন্তু সেই স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ আমরা উপভোগ করতে পারিনি। কারণ, চক্রান্তকারীরা বারবার তা ধ্বংস করেছে।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলেরও সংস্কার করতে হবে। শুধু মঞ্চে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে কোনো লাভ হবে না। এসব ছবি কোনো কাজে আসবে না। আমাদের জনগণের কল্যাণে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, খালেদা জিয়া অনেক কষ্ট করেছেন, তবু তিনি মাথা নত করেননি। দেশের মানুষের জন্য তিনি আজীবন লড়াই করেছেন।
ভারতের প্রতি ইঙ্গিত করে বিএনপির এই নেতা বলেন, বাংলাদেশকে একটি অঙ্গরাজ্যে পরিণত করতে পার্শ্ববর্তী দেশ সবসময় চেষ্টা করছে। সেজন্যই তারা চাইতো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকুক। কিন্তু বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা তাদের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে।
আলোচনা সভার এ আয়োজন করে ‘মহিদুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আয়োজক কমিটি’।