স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমাতে হলে অবশ্যই ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিতে হবে
শরীরের অতিরিক্ত মেদ-চর্বি কমাতে কতজনই না কতকিছু করেন। কেউ দোড়ান জিমে, আবার কেউ না খেয়ে করেন কঠোর ডায়েট। তবে অতিরিক্ত শরীরচর্চাও যেমন শরীরের জন্য ভালো নয়, তেমনই দিনের পর দিন না খেয়ে ওজন কমানোর প্রয়াসও সঠিক নয়।
এতে শরীরে পুষ্টির ঘাটতি হতে পারে। তাই স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমাতে হলে অবশ্যই আপনাকে একজন ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ তিনিই আপনার শারীরিক অবস্থা বুঝে ব্যবস্থাপত্র দিতে পারবেন।
সম্প্রতি ভারতীয় এক পুষ্টিবিদ ও হরমোন বিশেষজ্ঞ হিনা কৌর বেদীর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। ওই ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি জানিয়েছেন খুব সহজেই মাত্র চার পদ্ধ অনুসরণ করেই ১০-১২ কেজি ওজন কমানো সম্ভব। চাইলে আপনি এই পুষ্টিবিদের পরামর্শ আমলে নিতে পারেন।
ডায়েটে সামঞ্জস্যতা রাখুন
>> কম ক্যালোরি গ্রহণ করুন- ধীরে ধীরে ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন ৫০০-৭০০ ক্যালোরি গ্রহণ করুন।
>> প্রোটিন-সমৃদ্ধ খাবার খান- প্রতিদিনের খাবারে ডিম, পনির ও চর্বিহীন মুরগির মাংস রাখুন। এতে করে ক্ষুদা কমবে ও পেশি উন্নত হবে।
>> সবজি ও ফাইবার গ্রহণ করুন- আপনার প্লেটের অর্ধেক ভরাট করুন ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার দিয়ে। এক্ষেত্রে শাক-সবজি ছাড়া ফাইবারের ভালো উৎস খুব কমই আছে।
>> স্বাস্থ্যকর চর্বি খান- শরীরের শক্তি বজায় রাখতে পরিমিত পরিমাণে বাদাম, বীজ ও অ্যাভোকাডো অন্তর্ভুক্ত করুন।
>> লো-কার্ব খাবার খান- সাদা ভাত-রুটি খাওয়ার পরিবর্তে গমের রুটি কিংবা ব্রাউন রাইস খাওয়ার অভ্যাস করুন। এগুলোতে ফাইবার বেশি থাকে।
খাবারের সময়সূচি মানুন
>> ফাস্টিং করুন- ১৬:৮ বা ১৪:১০ ফাস্টিং উইন্ডো অনুসরণ করুন। অর্থাৎ ১৬ ঘণ্টা না খেয়ে থাকুন, বাকি ৮ ঘণ্টার মধ্যে পুষ্টিকর সব খাবার খান। অন্যদিকে ১৪ ঘণ্টা ফাস্টিং করুন, বাকি ১০ ঘণ্টার মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করুন।
>> অল্প অল্প খাবার খান- একবারেই অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার পরিবর্তে অল্প অল্প করে খাবার খান। এতে সহজেই খাবার হজম হবে।
ব্যায়াম আবশ্যক
>> ওয়েট ট্রেনিং (সপ্তাহে ৩-৪ বার)- ক্যালোরি পোড়াতে ও চর্বিহীন পেশী তৈরি করতে স্কোয়াট, পুশ-আপ ও ডাম্বেল ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করুন।
>> কার্ডিও (সপ্তাহে ৫ বার)- দ্রুত ওজন কমাতে হিট এক্সারসাইজের উপর ফোকাস করুন।
>> হাঁটুন- সক্রিয় থাকার জন্য প্রতিদিন ১০-১২ হাজার স্টেপ হাঁটুন।
ঘুম ও মানসিক সুস্থতা জরুরি
>> ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমান- শরীরের বিপাকক্রিয়া বাড়াতে ও কর্টিসল নিয়ন্ত্রণের জন্য দৈনিক ৭-৮ ঘণ্টা গভীর ঘুম জরুরি।
>> মেডিটেশন করুন- মানসিক চাপ কমাতে ও খাওয়ার প্রবণতা এড়াতে যোগব্যায়াম বা ধ্যান অন্তর্ভুক্ত করুন। এটি সত্যিই কার্যকরী ওজন কমানোর ক্ষেত্রে।
এই ডায়েট প্ল্যানও অনুসরণ করতে পারেন-
>> সকালে লেবু দিয়ে গরম পানি পান করুন। এরপর একমুঠো ভেজানো কাঠবাদাম খান।
>> সকালের নাশতায় সেদ্ধ বা ডিম পোচ রাখুন। সঙ্গে একটি ব্রাউন ব্রেড বা একটি গমের রুটিও খেতে পারে সবজি দিয়ে।
>> মধ্য-সকালে সবুজ স্মুদি পান করুন (পালংশাক, শসা, আদা, চিয়া বীজ) ব্লেন্ড করে।
>> দুপুরের খাবারে খান একটি বড় সালাদসহ গ্রিলড চিকেন।
>> সন্ধ্যার নাশতায় রাখুন একটি সেদ্ধ ডিম বা প্রোটিন শেক।
>> রাতের খাবার হোক হালকা। এক্ষেত্রে রাখুন হালকা ভেজিটেবল স্যুপ।
সূত্র: পুষ্টিবিদ ও হরমোন বিশেষজ্ঞ হিনা কৌর বেদীর ইনস্টাগ্রাম পোস্ট