দেশের ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থীই দ্রুত স্কুল খোলার পক্ষে

0

করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দফায় দফায় ছুটি বাড়াচ্ছে সরকার। গেল বছরের ১৭ মার্চ থেকে এ ছুটি শুরু হয়। সবশেষ ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছুটি আছে।

করোনাকালীন শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি ও সংক্রমণ এড়াতে সরকার দফায় দফায় ছুটি বাড়ালেও দেশের বেশিরভাগ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষা কর্মকর্তারা স্কুল খুলে দেয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। 

৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী চাইছে দ্রুত ক্লাসে ফিরতে, ৭৬ শতাংশ অভিভাবক ও ৭৩ শতাংশ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা চাইছেন- স্কুল খুলে দেয়া হোক। আর ৫৮ শতাংশ শিক্ষক ও ৫২ শতাংশ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সতর্কতার সঙ্গে স্কুল খোলার পক্ষে মত দিয়েছেন। 

মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) শিক্ষা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংস্থাগুলোর মোর্চা গণসাক্ষরতা অভিযানের ‘এডুকেশন ওয়াচ ২০২০-২১ সমীক্ষার অন্তর্বর্তীকালীন প্রতিবেদনে’ এ তথ্য উঠে এসেছে। 

আজ এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার এ তথ্য তুলে ধরেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। দেশের ৮টি বিভাগের ৮টি জেলার ২১টি উপজেলা নির্বাচন করে নির্ধারিত সূচকের ভিত্তিতে এ গবেষণা চালানো হয়। 

সমীক্ষায় মোট ২ হাজার ৯৯২ জন উত্তরদাতার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১ হাজার ৭০৯ জন শিক্ষার্থী (ছেলে ও মেয়ে সমসংখ্যক), ৫৭৮ জন শিক্ষক, ৫৭৬ জন অভিভাবক রয়েছেন। এছাড়াও জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারাও এ সমীক্ষায় নিজেদের মত দিয়েছেন। 

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, দূরশিক্ষণের (সংসদ টিভি, অনলাইন, রেডিও ও মোবাইল) মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কম ছিল। দূরশিক্ষণে ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। ৬৯ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থীই তাতে অংশ নিতে পারেনি। ৬২ শতাংশের বেশি শিক্ষক মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পাঠ্যসূচি সংক্ষিপ্ত করা প্রয়োজন।

সমীক্ষায় করোনার প্রভাবে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া, অনুপস্থিতি, বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রম বাড়বে। বিদ্যালয় খোলার পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, আসনবিন্যাস পরিবর্তন করে এক বেঞ্চে দুজন করে বসানো এবং পালাক্রমে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস নেয়ার বিষয়ে মতামত এসেছে।

এছাড়াও করোনার বর্তমান প্রেক্ষাপটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আসছে ফেব্রুয়ারি থেকে ধাপে ধাপে বিদ্যালয় খুলে দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। তুলনামূলকবাবে সংক্রমণ কম, এসব অঞ্চলের স্কুলগুলো আগে খুলে দেয়া এবং মার্চ থেকে সব স্কুল খোলারও সুপারিশ এসেছে।

গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীর সঞ্চালনায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, ব্র্যাকের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও এডুকেশন ওয়াচের প্রধান গবেষক মনজুর আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষক ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সৈয়দ শাহাদৎ হোসেন, এডুকেশন ওয়াচের আহ্বায়ক আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী, এডুকেশন ওয়াচের সদস্য ও প্রবীণ শিক্ষক নেতা কাজী ফারুক আহমেদ ও এডুকেশন ওয়াচের সদস্য মোহাম্মদ মোহসীন প্রমুখ।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.