পুরোনো গাড়ি কেনার আগে যে কাগজগুলো অবশ্যই দেখবেন
যাতায়াতের সুবিধা ও সময় বাঁচাতে নিজের একটি গাড়ি খুবই জরুরি। তবে গাড়ি প্রয়োজনের চেয়ে শখ পূরণের জন্যই কেনেন বেশিরভাগ মানুষ। শুরুতেই ব্র্যান্ড নিউ গাড়ি কিনতে না পারলে একটি সেকেন্ডহ্যান্ড গাড়ি কিনে ফেলতে পারেন। শখ ও প্রয়োজন দুটোই মিটবে সাধ্যের মধ্যে।
নতুন গাড়ি আর পুরোনো গাড়ি কেনার ব্যাপার কিন্তু আলাদা। নতুন গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে অতসব ভাবনা খুব একটা জরুরি নয়। যদি পুরোনো গাড়ি কেনার পরিকল্পনা করে থাকেন, তাহলে কিছু কাগজপত্র অবশ্যই আগে দেখে নিন। জেনে নিন কোন কাগজগুলো দেখা খুবই জরুরি-
রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট
এই রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট বা আরসি (RC) বুক হলো গাড়ির একটি অতি প্রয়োজনীয় কাগজ। বলা ভালো এটি গাড়ি ও তার মালিকের পরিচয় পত্র। এই রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট দেখে বোঝা যাবে এই গাড়িটি ও তার মালিক প্রকৃতপক্ষে সঠিক কি না। অবশ্য এই ব্যাপারে আরও একটি সাবধানতা অবলম্বন করার প্রয়োজন। অসাধু গাড়ির মালিক কিন্তু এই RC বুকে কোনো কারসাজি করে রাখতে পারেন সে ক্ষেত্রে আপনাকে সতর্কভাবে এটির সত্যতা যাচাই করতে হবে।
গাড়ি কেনার ইনভয়েস বা রশিদ
শোরুম থেকে কেনার সময় সেই গাড়ির সঙ্গে সব তথ্যসমৃদ্ধ একটি চালান বা ইনভয়েস দেওয়া হয়। এর মধ্যে গাড়ি কেনার তারিখ, ইঞ্জিন ও চ্যাসিস নম্বরসহ আরও বেশ কিছু তথ্য দেওয়া থাকে। তাই এর সাহায্যে সহজেই কোন গোলমাল আপনি আন্দাজ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে গাড়ি কেনার চালান ছাড়া কোনো সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কেনা থেকে বিরত থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
ইন্স্যরেন্স পেপার
মোটর ভেহিকেলস অ্যাক্ট অনুযায়ী সমস্ত গাড়ির ক্ষেত্রেই বিমা করা বাধ্যতামূলক। এই ইন্সুরেন্স পেপার সঠিকভাবে পুনর্নবীকরণ করা আছে কি না সেটি দেখে নিন। এছাড়াও কোনো গাড়ি পূর্বে অ্যাক্সিডেন্টের সম্মুখীন হয়েছে কি না সে ব্যাপারেও সঠিক তথ্য ইন্সুরেন্স পেপারের মধ্যেই পাবেন।
সার্ভিস বুক
পুরোনো গাড়ি কেনার সময় এর সার্ভিস বুকটি অবশ্যই দেখে নিন। এতে থাকা তথ্য অনুসারে আপনি গাড়ি সার্ভিসিংয়ের ইতিহাস সম্পর্কে সম্যক একটি ধারণা পাবেন। গাড়িটির রক্ষণাবেক্ষণ এবং সার্ভিসিং কত দিন অন্তর করা হয়েছে তার সঠিক রেকর্ড থাকে এই বইয়ের ভেতরে। তাছাড়াও গাড়ির ওডোমিটারে থাকা রিডিং দেখে সেই গাড়ির ইঞ্জিনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কেও আন্দাজ করা যায়।
রোড ট্যাক্স চালান
যে কোনো গাড়ির প্রথম ক্রেতা সরকারের নিয়ম অনুসারে সেই গাড়ির রোড ট্যাক্সের টাকা দিয়ে থাকেন। ওয়ান টাইম ট্যাক্স হওয়ার কারণে সেকেন্ড হ্যান্ড ক্রেতাকে সেই গাড়ির রোড ট্যাক্স পুনরায় দেওয়ার কোনো প্রয়োজন হয় না। তাই রোড ট্যাক্সের কাগজপত্র সঠিকভাবে যাচাই করে নিন। ডেখে নিন সেটি দেওয়া আছে কি না।
গাড়ির নো অবজেকশন সার্টিফিকেট
বেশিরভাগ মানুষই মাসিক কিস্তিতে গাড়ি কেনেন। ধার করা এই অংক শোধ হয়ে গেলে তবেই ঋণপ্রদানকারী ব্যাংক থেকে এনওসি বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। তাই আপনি সেকেন্ড হ্যান্ড যে গাড়িটা কিনতে চলেছেন তার এই সার্টিফিকেট আছে কি না। তা না হলে কিন্তু সেই গাড়ির বাকি ঋণের বোঝা আপনাকেই বহন করতে হবে।
পলিউশন সার্টিফিকেট
পিইউসি বা পলিউশন সার্টিফিকেট হলো গাড়ির আরও একটি প্রয়োজনীয় কাগজ। পরিবেশ দূষণ থেকে বাঁচার লক্ষ্যে জীবাশ্ম জ্বালানিচালিত সব যানবাহনকেই একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর সরকার নির্ধারিত কেন্দ্র থেকে ধোঁয়া পরীক্ষা করাতে হয়। পলিউশন সার্টিফিকেট সময়মতো পুনর্নবীকরণ না করলে ট্রাফিক আইন মোতাবেক তা দণ্ডনীয় অপরাধ এবং তার জন্য গাড়ির মালিককে জরিমানা করা হয়। তাছাড়াও যে সমস্ত গাড়ির ইঞ্জিন পরিবেশের পক্ষে ভালো নয় তাদেরকে পলিউশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয় না।