বিয়ের আগে বেশ কয়েকটি কাজ করা জরুরি, যাতে পরবর্তী সময়ে আফসোস করতে না হয়
বিয়ে মানুষের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে একটি। সবার মধ্যেই নিজের বিয়ে সম্পর্কে নানা পরিকল্পনা থাকে। বিয়ের আগে এ কারণে বর কিংবা কনে উভয়ই হয়ে পড়েন ব্যস্ত।
বিয়ের এক-দু’মাস আগ থেকে শুরু হওয়া তোড়জোড় বিয়ের দিন পর্যন্তও যেন শেষ হয় না! আর বিয়ের পর তো জীবন নতুনভাবে উপভোগ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সবাই।
তাই বিয়ের আগে বেশ কয়েকটি কাজ করা জরুরি, যাতে পরবর্তী সময়ে আফসোস করতে না হয়। চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক বিয়ের আগে কোন কাজগুলো করা জরুরি-
বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে যান
অনেক সময় কিছু মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়েন এই ভেবে যে, তারা কি সঠিক ব্যক্তি বিয়ে করছেন? বর-কনে হয়তো নিজেদের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করতে নাও পারেন! এমন ক্ষেত্রে বন্ধু কিংবা কাজিনরা সাহায্য করতে পারেন, সঠিক পরামর্শ দিয়ে।
যেহেতু তারা আপনাকে ভালোভাবে চেনেন, তাই আপনি বিয়ের জন্য প্রস্তুত কি না কিংবা আপনার হবু বর বা কণে উপযুক্ত কি না তা বুঝতে তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারেন। এজন্য বিয়ের আগে প্রিয় মানুষগুলোর সঙ্গে কিছুটা সময় একাকী কাটান।
সঙ্গীর সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলুন
আপনি যার সঙ্গে বাকি জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তার সঙ্গে আগে থেকে খোলাখুলি সব বিষয়ে কথা বলে নিন। আগে থেকে সঙ্গীকে জানা থাকলে অর্থাৎ লাভ ম্যারেজের ক্ষেত্রে বিষয়টি হয়তো সহজ!
তবে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজের ক্ষেত্রে অনেকেই হবু সঙ্গীর সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলেন না! এ কারণে পরবর্তী সময়ে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই বিয়ের আগেই হবু সঙ্গীর সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন।
রান্না শিখুন
যারা রাঁধতে জানেন না, তারা বিয়ের আগে কিছু সাধারণ রেসিপি রান্না শিখুন। এতে সংসারে বেশ লাভবান হবে।
রান্না শেখা যে শুধু নারীদের জন্যই প্রযোজ্য তা কিন্তু নয়, পুরুষদেরও উচিত কিছু রান্না শেখা।
এতে সঙ্গীকে সাহায্যও করতে পারবেন, আবার মাঝে মধ্যেই বাহারি পদ রেঁধে স্ত্রীকে চমকে দিতে পারবেন।
বিশ্বাস করুন বা না করুন, সঙ্গী আপনাকে স্বাচ্ছন্দ্যে খাবার রান্না করতে দেখে আরও বেশি খুশি হবেন। এতে দাম্পত্য বন্ধনও অটুট হবে।
মায়ের সঙ্গে সময় কাটান
বিয়ের পর নারীরা শ্বশুরবাড়ি যাবেন ও আলাদা একটি সংসার গোছাবেন এমনই রীতি বাঙালিদের মধ্যে।
আপনার ক্ষেত্রেও যদি এমনটি ঘটে, তাহলে উচিত বিয়ের আগে মায়ের সঙ্গে প্রচুর সময় কাটানো। এতে মায়ের মন ভালো থাকবে।
আবার পুরুষরাও হয়তো বিয়ের পর মায়ের সঙ্গে ততটা সময় কাটাতে পারেন না। কারণ কর্মব্যস্ত সময় পার করে মা ও স্ত্রী উভয়কেই সময় দিতে হয় তাদের।
আগে যদি অবসর সময়ের সবটুকু মাকে দিতেন, ওই সময়ের কিছুটা বিয়ের পর স্ত্রীকে দিতে হবে। এজন্য বিয়ের আগে মায়ের সঙ্গে বেশি সময় কাটান।
অ্যাডভেঞ্চার ট্রিপে যান
এমন নয় যে বিয়ের পর অ্যাডভেঞ্চার ট্রিপে যেতে পারবেন না। তবে বিয়ের আগে ভ্রমণে গেলে মানসিকভাবে আরও মজবুত করতে পারবেন নিজেকে।
শুধু তাই নয় নিজের দুর্বলতা ও শক্তির মুখোমুখিও হতে পারবেন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে ও ভালো মানুষ হিসেবে বিকশিত হতে পারবেন।
আপনার শখগুলো পূরণ করুন
আপনার কোনো শখ যদি অপূরণীয় থাকে, তবে তা পূরণের চেষ্টা করুন। যদি কোনো কাজ অসমাপ্ত থাকে সেটিও সমাপ্ত করুন। এতে মানসিকভাবে আপনি রিলিফ পাবেন।
হবু সঙ্গীর সঙ্গে একান্তে সময় কাটান
যার সঙ্গে ঘর বাঁধতে যাচ্ছেন, তার সঙ্গে বিয়ের আগে একান্তে সময় কাটান। এতে আপনাদের সম্পর্ক ঝালিয়ে নিতে পারবেন।
সঙ্গী আপনার প্রতি কেমন মনোভাব পোষণ করেন, সেটিও জানতে পারবেন তার সঙ্গে কিছুটা সময় কাটালে।
সঙ্গীর বন্ধুদের সঙ্গেও দেখা করুন
আপনার স্ত্রী বা স্বামীর বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে বিয়ের আগেই দেখা করুন। এতে করে হবু সঙ্গীর ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে আপনি জানতে পারবেন সহজেই।
সঙ্গীর সঙ্গে ভ্রমণে যান
একদিনের ট্যুরে দুজনে কোথায় নিরিবিলিতে ঘুরে আসতে পারেন বিয়ের আগে। অনেকেই ভাবেন, বিয়ের পর তো হানিমুনে যেতেই হবে তাহলে আবার বিয়ের আগে যাওয়ার কী দরকার? এ ধারণা ভুল।
বিয়ের আগে আপনি হবু সঙ্গর সঙ্গে যতটা সময় কাটাবেন তাকে ততটাই ভালোভাবে চিনবেন ও জানবেন। বিয়ে নিয়ে আপনার হবু সঙ্গীর মনে কী ভাবনা ঘুরপাক খাচ্ছে সে বিষয়েও জানতে পারবেন।
সূত্র: বোল্ডস্কাই