সংসদে শীর্ষ ৩০০ ঋণখেলাপির নাম প্রকাশ অর্থমন্ত্রীর
জেটিভি রিপোর্ট : বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে দেশের শীর্ষ ৩০০ ঋণখেলাপির তালিকা প্রকাশ করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। একইসঙ্গে ২০০৯ সাল থেকে বিভিন্ন ব্যাংক ও লিজিং কোম্পানির কাছ থেকে পাঁচ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছেন, এমন ১৪ হাজার ৬১৭ জনের পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিয়েছেন মন্ত্রী। শনিবার (২২ জুন) সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মো. ইসরাফিল আলমের (নওগাঁ-৬) প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী লিখিত উত্তরে এ তালিকা দেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, তালিকায় উল্লিখিত এই ৩০০ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা আর পরিশোধ করেননি।
তিনি আরও তথ্য দেন, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নেয়া ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মোট ঋণের পরিমাণ ৭০ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি রয়েছে ৫০ হাজার ৯৪২ কোটি টাকা।
এর পর সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম লুৎফুন নেসা খানের টেবিলে উত্থাপিত অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপির সংখ্যা এক লাখ ৭০ হাজার ৩৯০ জন এবং অর্থের পরিমাণ এক লাখ দুই হাজার ৩১৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ তালিকায় শীর্ষ ১০ ঋণখেলাপির মধ্যে আছে, চট্টগ্রামের সামানাজ সুপার অয়েল (এক হাজার ৪৯ কোটি টাকা), গাজীপুরের গ্যালাক্সি সোয়েটার অ্যান্ড ইয়ার্ন ডায়িং (৯৮৪ কোটি), ঢাকা সাভারের রিমেক্স ফুটওয়্যার (৯৭৬ কোটি), ঢাকার কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেম (৮২৮ কোটি), চট্টগ্রামের মাহিন এন্টারপ্রাইজ (৮২৫ কোটি), ঢাকার রূপালী কম্পোজিট (৭৯৮ কোটি), ঢাকার ক্রিসেন্ট লেদার ওয়্যার (৭৭৬ কোটি), চট্টগ্রামের এসএ অয়েল রিফাইনারি (৭০৭ কোটি), গাজীপুরের সুপ্রভ কম্পোজিট নিট (৬১০ কোটি), গ্রামীণ শক্তি (৬০১ কোটি)।
অর্থমন্ত্রী জানান, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৫ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছেন ১৪ হাজার ৬১৭ জন। তাদের নেয়া ঋণের মোট পরিমাণ ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৩৪৮ কোটি টাকা। তাদের মোট ঋণের মধ্যে বড় একটি অংশ খেলাপি রয়েছে। এর পরিমাণ এক লাখ ১৮৩ কোটি টাকা।
এর পর সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম লুৎফুন নেসা খানের টেবিলে উত্থাপিত অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের সব তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণখেলাপির সংখ্যা এক লাখ ৭০ হাজার ৩৯০ জন এবং অর্থের পরিমাণ এক লাখ দুই হাজার ৩১৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা।
এদিকে জাতীয় সংসদে ঋণখেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে বিশ্লেষকরা বলেছেন, শুধু সংসদে তালিকা প্রকাশ করলেই হবে না, খেলাপিদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিতে হবে। ঋণখেলাপিদের সামাজিকভাবে বর্জন করতে হবে।
শীর্ষ ঋণখেলাপি ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান
সামানাজ সুপার ওয়েল লিমিটেড এক হাজার ৪৯ কোটি, গ্যালাক্সি সোয়েটার অ্যান্ড ইয়ার্ন ডাইং ৯৮৪ কোটি টাকা, রিমেক্স ফুডওয়্যার লিমিটেড ৯৭৬ কোটি টাকা, কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেম লিমিটে ৮২৮ কোটি টাকা, মাহিন এন্টারপ্রাইজ লিমিটেড ৮২৫ কোটি, রূপালী কম্পোজিট লেদার ওয়্যার লিমিটেড ৭৯৮ কোটি টাকা, ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস লিমিটেড ৭৭৬ কোটি টাকা, এসএ ওয়েল রিফাইনারি লিমিটেড ৭০৭ কোটি, সুপ্রভ কম্পোজিট নিট লিমিটেড ৬১০ কোটি, গ্রামীণ শক্তি ৬০১ কোটি, সুপ্রভ স্পিনিং লিমিটেড ৫৮২ কোটি, কম্পিউটিার সোর্স লিমিটেড ৫৭৫ কোটি, সিমরান কম্পোজিট লিমিটেড ৫৬৪ কোটি টাকা, ম্যাক্স স্পিনিং মিলস ৫২৬ কোটি, বেনটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ৫২৩ কোটি, আলফা কম্পোজিট টাওয়েলস লিমিটেড ৫২৩ কোটি, সিদ্দিক ট্রেডার্স ৫১১ কোটি, রুবাইয়া ভেজিটেবল ওয়েলস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ৫০১ কোটি, রাইজিং স্টিল লি. ৪৯৫ কোটি টাকা।
এছাড়া এস কে এন্টারপ্রাইজ ৮৮ কোটি টাকা, সাফিন শিপিং লাইন লিমিটেড ৮৮ কোটি, সুপ্রিম জুট অ্যান্ড নিটেক্স লিমিটেড ৮৮ কোটি, ফরচুন স্টিল ৮৭ কোটি, মোস্তফা ওয়েল প্রোডাক্টস লিমিটেড ৮৬ কোটি, এম এস হাবিবুল ইসলাম ৮৬ কোটি, মাবিয়া স্টিল কমপ্লেক্স লিমিটেড ৮৬ কোটি, পদ্মা এগ্রো ট্রেডার্স ৮৬ কোটি, আমান ট্রেডিং কর্পোরেশন ৮৫ কোটি, পলিমার নিটওয়ার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ৮৫ কোটি, ইমারাল্ড অটোব্রিকস লিমিটেড ৮৫ কোটি, ম্যাজেস্টিক হোল্ডিং লিমিটেড ৮৫ কোটি, ওয়াফা এন্টারপ্রাইজ ৮৪ কোটি, দেশবন্ধু সুগার মিল লিমিটেড ৮৪ কোটি, মনিকা ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল ৮৩ কোটি, এস এ ট্রেডার্স ৮৩ কোটি, দ্য অ্যারিস্টক্র্যাট এগ্রো লিমিটেড ৮৩ কোটি, ইউরোপা বেভারেজ অ্যান্ড ফুডস লিমিটেড ৮৩ কোটি, ফ্যাশন ক্রাফট নিটওয়্যার লিমিটেড ৮৩ কোটি, এটলাস গ্রিনপেক লিমিটেড ৮৩ কোটি।
ইমারাল্ড স্পেশালাইজড কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেড ৮৩ কোটি, শাহনেওয়াজ জুট মিলস প্রাইভেট লিমিটেড ৮২ কোটি, মার লিমিটেড ৮২ কোটি, ড্রেস মি ফ্যাশনস লিমিটেড ৮২ কোটি, মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্স পো ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান লিমিটেড ৮১ কোটি, শাহিল ফ্যাশনস লিমিটেড ৮১ কোটি, ফস্টার রিয়েল এস্টেট লিমিটেড ৮১ কোটি, ইমাম ট্রেডার্স ৮১ কোটি, স্মাহ লিমিটেড ৮০ কোটি, গ্লোব জনকণ্ঠ শিল্প পরিবার ৮০ কোটি, ফিয়াজ এন্টারপ্রাইজ ৮০ কোটি, এম নূর সোয়েটার্স লিমিটেড ৭৯ কোটি, খান সন্স টেক্সটাইলস লিমিটেড ৭৯ কোটি, ঝুমা এন্টারপ্রাইজ ৭৯ কোটি, এন এইচ কে ফেব্রিক্স অ্যান্ড টেক্সটাইল ৭৮ কোটি, গ্রান্ডেউর শিপিং লাইন্স লিমিটেড ৭৮ কোটি।