যেসব ভুল ও অন্যায় থেকে বিরত থাকতে বলেছেন নবিজী

0

এমন অনেক কাজ মানুষ করে থাকে, সাধারণ এসব কাজকে ভুল বা অন্যায় মনে করা হয় না বা তাদের কাছে এগুলোকে অন্যায় বা ভুল মনে হয় না। এসব অন্যায় সম্পর্কে কোরআন-সুন্নায় মারাত্মক হুশিয়ারী ও সতর্কবার্তা ঘোষণা করা হয়েছে। যা থেকে বিরত থাকতে কোরআন-সুন্নায় সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা এসেছে। নতুবা এর পরিণাম সুস্পষ্ট জাহান্নাম। কী সেইসব গুনাহ বা অন্যায়?

ভিক্ষুককে সাহায্য

কোনো ভিক্ষুক; চাই সে ভন্ড বা প্রতারক হোক কিংবা সঠিক হোক; সে যদি আল্লাহর দোহাই দিয়ে কোনো কিছু চায় তবে আপনার কিছু হলেও তাকে (সাহায্য) দিতে হবে। এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবদুল্লাহ ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে নিরাপত্তা চায়, তাকে নিরাপত্তা দাও। যে ব্যক্তি আল্লাহর নামে ভিক্ষা চায়, তাকে (সাহায্য) দাও। যে ব্যক্তি তোমাদেরকে দাওয়াত করে তার ডাকে সাড়া দাও। যে ব্যক্তি তোমাদের সাথে সদ্ব্যবহার করে তোমরা তার উত্তম প্রতিদান দাও। প্রতিদান দেয়ার মতো কিছু না পেলে তার জন্য দোয়া করতে থাকো; যতক্ষণ না তোমরা অনুধাবন করতে পারো যে, তোমরা তার প্রতিদান দিতে পেরেছো। (আবু দাউদ, বুখারি, আদাবুল মুফরাদ, ইবনে হিব্বান, বায়হাকি)

২. বাবা-মার দায়িত্ব

স্ত্রী বা শ্বশুর বাড়ীর লোকদের প্ররোচনায় নিজের বাবা-মাকে অবহেলা না করা। আপনি এখনও জাহান্নামে যাননি কারণ আপনি এখনও মরেননি। বাবা-মার অবাধ্যতায় জাহান্নাম সুনিশ্চিত। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আব্দুল্লাহ ইবনু আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘উপকার করে খোঁটাদাতা, বাবা-মার অবাধ্য সন্তান ও সব সময় মদ পানকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না। (নাসাঈ, দারেমি, মুসনাদে আহমাদ, ইবনে হিব্বান, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, মিশকাত)

৩. কাজে ফাঁকি

কাজ যা-ই হোক, ফাঁকি দেওয়া যাবে না। অনেকেই অফিসে কিংবা কর্মস্থলে কাজে ফাঁকি দেয়। মাস গেলে বেতন নেয। কাজের ক্ষেত্রে এই ফাঁকিবাজির খেসারত একদিন সবাইকে তার নেক আমল দিয়ে পূরণ করে দিতে হবে। সবার জন্য যা হবে খুবই ভয়াবহ। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি জান, দেউলিয়া কে? তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের মধ্যে দেউলিয়া হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার দিরহামও (নগদ অর্থ) নেই, কোনো সম্পদও নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আমার উম্মাতের মধ্যে সেই ব্যক্তি হচ্ছে দেউলিয়া; যে কেয়ামতের দিন নামাজ, রোজা, জাকাতসহ বহু আমল নিয়ে উপস্থিত হবে এবং এর সঙ্গে সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, কারো রক্ত প্রবাহিত (হত্যা) করেছে, কাউকে মারধর করেছে, ইত্যাদি অপরাধও নিয়ে আসবে। সে তখন বসবে এবং তার নেক আমল হতে এ ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে, ও ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে। এভাবে সম্পূর্ণ বদলা (বিনিময়) নেয়ার আগেই তার নেক আমল শেষ হয়ে যাবে। পরে তাদের গুনাহসমূহ তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে; তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (তিরমিজি, মুসলিম)

৪. ধূমপান বা নেশা করা

ধূমপান, জরদা বা যে কোনও নেশাদার দ্রব্য দিয়ে নেশা করা। যার ফলে পরবর্তী ৪০ দিন আল্লাহ তাআলা ওই ব্যক্তির উপর নারাজ থাকেন। হাদিসে এসেছে-

হজরত আবদুল্লাহ ইবনু ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মদ পানকারী ব্যক্তির ৪০ দিনের নামাজ কবুল করা হয় না। সে তাওবা করলে তবে আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন।

যদি আবার সে মদ পান করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তার ৪০ দিনের নামাজ কবুল করেন না। যদি সে তাওবা করে তাহলে আল্লাহ তাআলা তার তাওবা গ্রহণ করেন।

সে যদি আবার মদ পানে লিপ্ত হয় তবে তার ৪০ দিনের নামাজ আল্লাহ তাআলা গ্রহণ করেন না। যদি সে তাওবা করে আল্লাহ তা’আলা তার তাওবা কবুল করেন।

আর যদি সে চতুর্থ বার মদ পানে জড়িয়ে পড়লে আল্লাহ তাআলা তার ৪০ দিনের নামাজ গ্রহণ করেন না। যদি সে তাওবা করে আল্লাহ তাআলা তার তাওবা ককুল করবেন না এবং তাকে নাহরুল খাবাল হতে পান করাবেন। প্রশ্ন করা হলো- হে আবু আবদুর রাহমান (ইবনু ওমর) খাবাল নামক ঝর্ণাটি কি? তিনি বললেন, জাহান্নামীদের পূজের ঝর্ণা।’ (তিরমিজি, ইবনু মাজাহ)

৫. ওয়াদা ভঙ্গ করা

নিয়মিত ওয়াদা ভঙ্গ করা মারাত্মক গুনাহ ও মুনাফেকি। জানান্নামের উদ্বোধন হবে মুনাফেক এবং ভ্রান্ত ধারণা-বিশ্বাসের লোক দিয়ে। বরং কাফের, মুশরেক দিয়ে নয়। কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনায় তা প্রমাণিত। তাহলো-

اِنَّ الۡمُنٰفِقِیۡنَ فِی الدَّرۡکِ الۡاَسۡفَلِ مِنَ النَّارِ ۚ وَ لَنۡ تَجِدَ لَهُمۡ نَصِیۡرًا

‘নিশ্চয়ই মুনাফিকরা জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকবে। আর তুমি কখনও তাদের জন্য কোনো সাহায্যকারী পাবে না।’ (সুরা আন-নিসা : আয়াত ১৪৫)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি- যখন কথা বলে মিথ্যা বলে; যখন অঙ্গীকার করে ভঙ্গ করে এবং আমানত রাখা হলে খেয়ানাত করে।’ (মুসলিম, আহমাদ)

সুতরাং বলা চলে যে, সবচেয়ে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে এ তিন শ্রেণীর লোক। ‘দারকুল আসফাল’ বা নিম্নতম স্তর কি এ সম্পর্কে আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, সেটা হবে বদ্ধ সিন্ধুক।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা)

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘দারকুল আসফাল’ হচ্ছে, এমন কিছু ঘর যেগুলোর দরজা বন্ধ করা আছে। আর সেগুলোকে উপর ও নিচ থেকে প্রজ্জলিত করা হবে। ইবনে আব্বাস বলেন, এর অর্থ হলো- জাহান্নামের নীচে থাকবে।’ (তাবারি)

৬. চুক্তির অতিরিক্ত কাজ

কর্মচারীকে চুক্তি ঘণ্টার চেয়ে অতিরিক্ত খাটানো। বিনিময়ে কিছু দেননি। চুক্তির অর্থ একদিন না একদিন ফেরত দিতে হবে। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাহাবাদের প্রশ্ন করলেন, তোমরা কি জান, দেউলিয়া কে? তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাদের মধ্যে দেউলিয়া হচ্ছে সেই ব্যক্তি যার দিরহামও (নগদ অর্থ) নেই, কোনো সম্পদও নেই। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আমার উম্মাতের মধ্যে সেই ব্যক্তি হচ্ছে দেউলিয়া; যে কেয়ামতের দিন নামাজ, রোজা, জাকাতসহ বহু আমল নিয়ে উপস্থিত হবে এবং এর সঙ্গে সে কাউকে গালি দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো সম্পদ আত্মসাৎ করেছে, কারো রক্ত প্রবাহিত (হত্যা) করেছে, কাউকে মারধর করেছে, ইত্যাদি অপরাধও নিয়ে আসবে। সে তখন বসবে এবং তার নেক আমল হতে এ ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে, ও ব্যক্তি কিছু নিয়ে যাবে। এভাবে সম্পূর্ণ বদলা (বিনিময়) নেয়ার আগেই তার নেক আমল শেষ হয়ে যাবে। পরে তাদের গুনাহসমূহ তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হবে; তারপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (তিরমিজি, মুসলিম, মিশকাত)

৭. অন্যায়ভাবে দখলদারিত্ব করা

দলীয় দাপটে কিংবা ক্ষমতার জোরে কারো এক ফুট জায়গা অন্যায়ভাবে দখল করা। কারো ওপর জোর-জবরদস্তি করা। দখলদারিত্ব করা ব্যক্তিদের জন্য আজাবের ফেরেসতারা শুধু মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করছে। হাদিসে এসেছে-

হজরত সাঈদ ইবনু যাইদ ইবনু আমর ইবনু নুফাইল রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কোনো লোক নিজের ধন-সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ করতে গিয়ে মারা গেলে সে শহীদ। যে ব্যক্তি একবিঘত পরিমাণ জমি চুরি করবে কেয়ামত দিন তার গলায় সাত তবক জমি বুলিয়ে দেওয়া হবে।’ (তিরমিজি, বুখারি, ইবনু মাজাহ, নাসাঈ)

৮. দান-সাদকা না করা

গরিব-অসহায় কিংবা সাহায্য প্রার্থীকে দান-সাদকা করার সামর্থ আছে কিন্তু দান করেন না। তাদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ মৃত্যু যন্ত্রণা। কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা-

یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَنۡفِقُوۡا مِمَّا رَزَقۡنٰکُمۡ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ یَوۡمٌ لَّا بَیۡعٌ فِیۡهِ وَ لَا خُلَّۃٌ وَّ لَا شَفَاعَۃٌ ؕ وَ الۡکٰفِرُوۡنَ هُمُ الظّٰلِمُوۡنَ

‘হে মুমিনগণ! আমি তোমাদের যে রিজি দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করো, সে দিন আসার আগে, যে দিন থাকবে না কোনো বেচাকেনা; না কোনো বন্ধুত্ব এবং না কোনো সুপারিশ। আর কাফেররাই জালিম।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৫৪)

وَ اَنۡفِقُوۡا مِنۡ مَّا رَزَقۡنٰکُمۡ مِّنۡ قَبۡلِ اَنۡ یَّاۡتِیَ اَحَدَکُمُ الۡمَوۡتُ فَیَقُوۡلَ رَبِّ لَوۡ لَاۤ اَخَّرۡتَنِیۡۤ اِلٰۤی اَجَلٍ قَرِیۡبٍ ۙ فَاَصَّدَّقَ وَ اَکُنۡ مِّنَ الصّٰلِحِیۡنَ

‘আর আমি তোমাদের যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে ব্যয় করো, তোমাদের কারো মৃত্যু আসার আগে। কেননা তখন সে বলবে, হে আমার রব! যদি আপনি আমাকে আরো কিছু কাল পর্যন্ত অবকাশ দিতেন, তাহলে আমি দান-সদাকা করতাম। আর সৎ লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’ (সুরা মুনাফিকুন : আয়াত ১০)

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, এক সাহাবা আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! কোস সদাকার সওয়াব বেশি পাওয়া যায়? তিনি বললেন, ‘সুস্থ ও কৃপণ অবস্থায় তোমার সাদকাহ করা; যখন তুমি দারিদ্রের আশঙ্কা করবে ও ধনী হওয়ার আশা রাখবে। সাদকা করতে এ পর্যন্ত দেরী করবে না যখন প্রাণবায়ু কণ্ঠাগত হবে, আর তুমি বলতে থাকবে, অমুকের জন্য এতটুকু, অমুকের জন্য এতটুকু, অথচ তা অমুকের জন্য হয়ে গেছে।’ (মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

৯. ঋণ-চাঁদা-ঘুষ ফেরত না দেওয়া

কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়েছেন কিংবা চাঁদাবাজি করেছেন বা ঘুষ নিয়েছেন কিন্তু তা ফেরত দেননি। মনে রাখবেন এতে আমলনামা ভারী হবে। কারণ একদিন এগুলো নেক আমল দিয়েই পরিশোধ করতে হবে। হাদিসে পাকে এসেছে-

হজরত সুহাইব আল খায়ের রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে কোনো ব্যক্তি ঋণ গ্রহণ করলো এবং তা পরিশোধ না করতে সংকল্পবদ্ধ, (কেয়ামতের দিন) সে আল্লাহ সঙ্গে অপহরণকারীরূপে সাক্ষাত করবে।’ (ইবনু মাজাহ, মিশকাত)

১০. ভ্রান্ত পদ্ধতিতে আমল

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দেখানো পদ্ধতি বাদ দিয়ে ভ্রান্ত পদ্ধতিতে আমল করছেন। মনে রাখবেন রাসুলের সুপারিশ আপনার জন্য নয়। কোরআন-সুন্নাহর ঘোষণায় তা প্রমাণিত-

 مَنۡ یُّطِعِ الرَّسُوۡلَ فَقَدۡ اَطَاعَ اللّٰهَ ۚ وَ مَنۡ تَوَلّٰی فَمَاۤ اَرۡسَلۡنٰکَ عَلَیۡهِمۡ حَفِیۡظًا

‘যে রাসুলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে বিমুখ হল, তবে আমি তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক করে প্রেরণ করিনি।’ (সুরা আন-নিসা : আয়াত ৮০)

 یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡۤا اَطِیۡعُوا اللّٰهَ وَ اَطِیۡعُوا الرَّسُوۡلَ وَ لَا تُبۡطِلُوۡۤا اَعۡمَالَکُمۡ

‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসুলের আনুগত্য করো। আর তোমরা তোমাদের আমলসমূহ বিনষ্ট করো না।’ (সুরা মুহাম্মাদ : আয়াত ৩৩)

 یٰۤاَیُّهَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تُقَدِّمُوۡا بَیۡنَ یَدَیِ اللّٰهِ وَ رَسُوۡلِهٖ وَ اتَّقُوا اللّٰهَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ سَمِیۡعٌ عَلِیۡمٌ

‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সামনে অগ্রবর্তী হয়ো না এবং তোমরা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর, নিশ্চয় আল্লাহ সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ। (সুরা হুজরাত : আয়াত ১)

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমাদের এ দ্বীনে নতুন কিছু উদ্ভাবন করেছে যা এতে নেই, তা প্রত্যাখ্যাত।’ (বুখারি ও মুসলিম, মিশকাত)

এ অন্যায়গুলো মানুষ সবচেয়ে বেশি করে থাকে। যার পরিনাম খুবই ভয়াবহ। তাই সময় থাকতে এসব অন্যায় ও গুনাহের কাজ থেকে ফিরে আসা জরুরি। নিজেদের সংশোধন করা জরুরি। কোরআন-সুন্নাহর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা জরুরি। কেননা আল্লাহ তাআলা এসব মানুষকে লক্ষ্য করে ঘোষণা করেন-

اِنَّ اللّٰهَ لَا یَغۡفِرُ اَنۡ یُّشۡرَکَ بِهٖ وَ یَغۡفِرُ مَا دُوۡنَ ذٰلِکَ لِمَنۡ یَّشَآءُ ؕ وَ مَنۡ یُّشۡرِکۡ بِاللّٰهِ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلًۢا بَعِیۡدًا

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমা করেন না তাঁর সঙ্গে শরিক করাকে এবং এ ছাড়া যাকে চান ক্ষমা করেন। আর যে আল্লাহর সঙ্গে শরিক করে সে তো ঘোর পথভ্রষ্টতায় পথভ্রষ্ট হলো।’ (সুরা আন-নিসা : আয়াত ১১৬)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, উল্লেখিত গুনাহগুলো থেকে বিরত থাকা। সঠিক পথে চলা। আল্লাহর সঙ্গে কাউকে সম্পৃক্ত করে শিরক না করা। আল্লাহর কাছে গুনাহ ও অন্যায় থেকে তাওবাহ করা। তবেই আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমা করে দেবেন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত গুনাহ ও অন্যায় থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন। কোরআন-সুন্নাহর উপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com