রক্তক্ষরণ বন্ধের ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে খালেদা জিয়াকে

0

পরিপাকতন্ত্রের রক্তক্ষরণ বন্ধ হওয়ার জন্য ‘লাইফ সেইভিং’ ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে। সোমবার রাতে পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ হয়েছে তাঁর। এর পর থেকে দফায় দফায় রক্তবমি। ফলে যখনই রক্তক্ষরণ হচ্ছে তখনই আবার তাঁকে সেই ‘জীবন-রক্ষা’ ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

জানা গেছে, খালেদা জিয়ার এবারের শারীরিক অবস্থা নিয়ে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরাও টেনশন নিয়েই কাজ করছেন। তারা খালেদা জিয়ার পরিবার এবং এভারকেয়ার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বার বার যত দ্রুত সম্ভব তাঁকে বিশ্বের যে কোনো একটি ‘অ্যাডভান্স হেল্থ সেন্টারে’ নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের মতে, বাংলাদেশে এর বাইরে আর কোনো চিকিৎসা ও প্রযুক্তি নেই বেগম খালেদা জিয়ার জন্য। সর্বোচ্চ চিকিৎসাটাই প্রয়োগ করে যাচ্ছেন তারা। এ ব্যাপারে তাদের অসহায়ত্ব স্বীকার করেছেন মেডিকেল বোর্ডের প্রধান অধ্যাপক ডা. এ এফ এম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, “আমরা এ ক্ষেত্রে বড় অসহায়। আমাদের দেশের সর্বোচ্চ চিকিৎসা পদ্ধতি আমরা বেগম খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছি। এরপর সর্বশেষ চিকিৎসা হলো ‘টিপস’ পদ্ধতি। তাঁর পরিবার এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আমরা এ ব্যাপারে বার বার সাজেস্ট করেছি।”

বিদেশ থেকে চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্ভব নয়- ড্যাব : খালেদা জিয়ার চিকিৎসা বাংলাদেশে সম্ভব বলে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) নেতারা যে দাবি করেছেন, সেটিকে দুঃখজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। ড্যাব সভাপতি হারুন আল রশিদ বলেন, খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডে দেশের প্রথিতযশা যত চিকিৎসক আছেন, তাদের মধ্যে স্বনামধন্য। তারা সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, বাংলাদেশে তাঁর চিকিৎসা এ মুহূর্তে সম্ভব নয়। এমনকি এই উপমহাদেশেও সম্ভব নয়। এর বিপক্ষে সরকারের অবস্থান যা, ঠিক তারই পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে বিএমএ। তারা খালেদা জিয়ার চিকিৎসার মৌলিক অধিকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ড্যাব সভাপতি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা উপস্থাপন, বিদেশে সুচিকিৎসা ও স্থায়ী মুক্তির দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

ড্যাব সভাপতি বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য প্রশিক্ষিত চিকিৎসক দল ও সরঞ্জাম প্রয়োজন। সে জন্য চিকিৎসক এনে তাঁর চিকিৎসা করা সম্ভব নয়। ড্যাব মহাসচিব আবদুস সালাম বলেন, খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিস হয়েছে। লিভার সিরোসিস তো দূরের কথা, বাংলাদেশে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট পর্যন্ত হয় না। আজ পর্যন্ত যে দুটি ট্রান্সপ্লান্ট হয়েছে, এর মধ্যে একজন মারা গেছেন, আরেকজনের অবস্থা ভালো নয়। সুতরাং লিভার সিরোসিসের চিকিৎসা বাংলাদেশে হয়, এটা ভুল তথ্য। খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থার তথ্য তুলে ধরে হারুন আল রশিদ বলেন, ‘যে সর্বশেষ খবর জেনেছি, তাঁর হিমোগ্লোবিনের লেভেল কিছুটা কমেছে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে, সেগুলোর রেজাল্টও এখনো আসেনি। তাঁর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে সোমবার রাতে তাঁর আবারও রক্তক্ষরণ হয়েছে। মঙ্গলবারও রক্তবমি হয়েছে। সে কারণেই হয়তো হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কিছুটা কমেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অবিলম্বে খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার মৌলিক সুযোগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com