কাবুল বিস্ফোরণ: বদলার হুমকি আমেরিকার
বৃহস্পতিবার জোড়া বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে কাবুল বিমানবন্দর। মার্কিন সেনাবাহিনীর দেয়া তথ্য অনুযায়ী অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছেন বিস্ফোরণে। আহত ১৪০ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৩ জন মার্কিন সেনার। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যেই জরুরি বৈঠকে বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। পরে হোয়াইট হাউস থেকে এক টেলিভিশন বিবৃতিতে তিনি জানান, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছেড়ে দেয়া হবে না। সমূলে নির্মূল করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এ দিন রাতেই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করে আইএসআইএস খোরাসান গোষ্ঠী। সম্প্রতি এই গোষ্ঠীটিকে নিয়ে সতর্ক করেছিল মার্কিন এবং যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনী। তারা জানিয়েছিল, কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে এ গোষ্ঠীটি অস্ত্র নিয়ে তৈরি হচ্ছে। যেকোনো সময় তারা আক্রমণ চালাতে পারে। বৃহস্পতিবার সে কথাই সত্য হলো। দুই আত্মঘাতী উগ্রবাদী কাবুল বিমানবন্দরের মূল ফটকে এবং বিমানবন্দর থেকে সামান্য দূরে বিস্ফোরণ ঘটায়। দুজনেই মানববোমা ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। একইসাথে গোলাগুলির শব্দও পাওয়া যায়।
মার্কিন সেনাবাহিনীর সদস্য ছাড়াও বহু আফগান নাগরিকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বিমানবন্দরের বাইরে ২৮ জন তালেবান রক্ষীরও মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাইডেন বলেছেন, যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আঘাত হানবে মার্কিন সেনাবাহিনী। তাদের চরম জবাব দেয়া হবে। তবে একইসাথে বাইডেন বলেছেন, বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উদ্ধারকাজ বন্ধ করা যাবে না। যে গতিতে উদ্ধারকাজ চলছে, তা জারি রাখা হবে। একইসাথে মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, এই হামলার ঘটনার তালেবানের কোনো হাত নেই। অর্থাৎ, আইএসআইএস খোরাসানের সাথে তালেবান হাত মেলায়নি। বরং তারা ওই গোষ্ঠীর বিরোধী।
ঘটনার পরে জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের সেনাবাহিনীর কোনো ক্ষতি হয়নি। তবে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তিনি।
বাইডেন জানিয়েছেন, এখনো পর্যন্ত প্রায় এক লাখ মানুষকে আফগানিস্তান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে বিদেশী সংস্থায় কাজ করা বহু আফগানও আছেন। আর এক হাজার মার্কিন নাগরিক এখনো আফগানিস্তানে আটকে আছেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। ৩১ আগস্টের মধ্যই তাদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। ৩১ অগাস্টের পর কোনোভাবেই মার্কিন সেনাবাহিনী আফগানিস্তানে থাকবেন না বলে এদিন ফের জানিয়েছেন বাইডেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবারের ঘটনার নিন্দায় গোটা বিশ্ব। অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ঘটনার নিন্দা করেছেন। তবে দুজনেই জানিয়েছেন, তাদের দেশের নাগরিকদের আগেই উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিল। তাই বিস্ফোরণে তাদের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ক্যানাডাও একই কথা জানিয়েছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে