মাস্ক পরা অপরাধীদের নিয়ে বিপাকে পুলিশ

0

প্রাণঘাতী করোনা থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে মাস্ক পরছেন সবাই। কিন্তু, এটি পরে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে সন্ত্রাসীরা। তাদের চিহ্নিত করতে বেগ পেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। এমনকি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরায়ও তাদের চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। করোনার সময় সন্ধ্যার পর থেকেই ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য এলাকা ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ওইসব সড়কে আগে থেকেই ওত পেতে থাকছে অপরাধীরা। তারা পথচারীদের মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগসহ অন্যান্য মালামাল লুটে নিচ্ছে। ঢাকার একাধিক এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনা আসার পর অনেকাংশে পুলিশের টহল বেড়ে গেছে।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে যে, করোনাভাইরাসের সুযোগে অপরাধীরা মাস্ক পরে অপরাধের সুযোগ তৈরি করার চেষ্টা করছে। কিন্তু, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক। সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো বিশেষ নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।

অপরাধী চক্র যাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি না ঘটাতে পারে সেজন্য পুলিশ, র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে। গত কয়েক মাস দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালোই ছিল। তবে হঠাৎ কিছুদিন ধরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অপরাধ কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। তাদের দমাতে ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল বেড়েছে। তাদের কোনোভাবে ছাড় দেয়া যাবে না।  
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন) এম খুরশীদ হোসেন জানান, মাস্কের আড়ালে অপরাধীরা সুযোগ নিচ্ছে। তবে পুলিশের টহল ও ফুট পেট্রোলিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। অপরাধীদের ধরতে পুলিশও নানা কর্মকৌশলের উদ্যোগ নিয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, অপরাধীরা বিভিন্ন পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে তাদের কৌশল পরিবর্তন করে। করোনা আসার পর তারা সুযোগ নিচ্ছে। রাস্তায় সবাই মাস্ক পরার কারণে সাধারণ মানুষ দ্রুত আঁচ করতে পারছে না যে, কে অপরাধী আর কে অপরাধী নয়।

সূত্র জানায়, কয়েকদিন আগে বাড়ির সামনে হেঁটে যাওয়ার সময় তিন যুবক রাজধানীর রূপনগর এলাকায় ঝুট ব্যবসায়ী আবদুল সাত্তার মাতুব্বরকে গুলি করে। আক্রমণকারীরা মাস্ক পরে ছিলেন। তারা সেখান থেকে দ্রুত পালিয়ে যান।
৩রা মে যাত্রাবাড়ীর মীরহাজিরবাগের একটি চিকিৎসা সামগ্রীর দোকানের শাটার ভেঙে ৩ লাখ টাকা মূল্যের মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। ওই দোকানের ফুটেজে দেখা গেছে যে, দুর্বৃত্তরা মাস্ক পরে ছিলেন।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, অপরাধীরা সবাই মাস্ক পরে ছিল। তারা একটি গাড়ি ব্যবহার করেছে।  ওই ঘটনায় একাধিকজনকে গ্রেপ্তার করা হলেও তাদের ওই ঘটনার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। পুলিশ প্রথাগত সোর্স দিয়ে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছে।

সূত্র জানায়, গত ১৬ই মে  বকশীবাজার এলাকায় রিকশাযাত্রীর কাছ থেকে ১ লাখ ৮২ হাজার টাকা লুট করা হয়। এ সময় অপরাধীদের মাস্ক পরে থাকতে দেখা গেছে। গত ২১শে মে রাজধানীর বেগমবাজারে একটি কাভার্ড ভ্যান থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র লুটের ঘটনা ঘটে। ওইসব ঘটনার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। ফুটেজে দেখা গেছে, অপরাধীরা মাস্ক পরে ছিল। তারা অপরাধ সংঘটিত করে দ্রুত ওই এলাকা থেকে পালিয়ে গেছে। তারা যখন লুট করছিল তখন আশপাশের মানুষ চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ঢাকার ছিনতাই স্পট জোনগুলোতে মাস্ক পরে অপরাধ সংঘটিত করছে দুর্বৃত্তরা। এতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে। এইসব দুর্বৃত্তদের দমনে পুলিশের পক্ষ থেকে  নানামুখী কর্মকৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। এলাকা ভিত্তিক পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের মোবাইল পার্টি, হাঁটা পার্টি ও গাড়ি টহল পার্টিকে সক্রিয় করা হয়েছে। পাশাপাশি এলাকা ভিত্তিক যেসব অপরাধীদের তালিকা থানা পুলিশের কাছে রয়েছে তারা কারাগারে না বাইরে আছে তার হালনাগাদ তথ্য আপডেট করছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানের পুলিশের জোনগুলো।  

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com