দেশে ১ দিনে করোনায় নতুন শনাক্ত ৩১২
মহামারি করোনাভাইরাস দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও সাতজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯১ জনে। করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৩১২ জন। ফলে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল দুই হাজার ৪৫৬ জনে।
রোববার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। নিজের বাসা থেকে এতে সংযুক্ত হন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বুলেটিন উপস্থাপনকালে করোনার বিস্তাররোধে সবাইকে বাড়িতে থাকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়।
গত ডিসেম্বরের শেষে চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস এখন গোটা বিশ্বে তাণ্ডব চালাচ্ছে। চীন পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দিয়ে উঠলেও এখন ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সাড়ে ২৩ লাখ ৩৩ হাজারেরও বেশি। মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে এক লাখ ৬০ হাজার। তবে ছয় লক্ষাধিক রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন।
গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। সবশেষ হিসাবে দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দুই হাজার ৪৫৬। মারা গেছেন ৯১ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭৫ জন।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সাধারণ ছুটি ঘোষণার পাশাপাশি নানা সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে; যার মূলে রয়েছে মানুষে মানুষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা। মানুষকে ঘরে রাখতে রাজপথের পাশাপাশি পাড়া-মহল্লায় টহল দিচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী, র্যাব ও পুলিশ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জানাজায় লাখো মানুষ : ৭ গ্রাম বাসিন্দা হোমকোয়ারেন্টাইনে
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইলে লকডাউনের মধ্যেই মাওলানা জুবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষ জমায়েত হওয়ায় সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে।এ ঘটনায় ৭ গ্রাম বাসিন্দাদের হোমকোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ এএসপি সার্কেলকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরের আদেশে তাদের প্রত্যাহার করা হয়।
প্রত্যাহার করে নেওয়া কর্মকর্তারা হলেন, সরাইল থানার সহকারী পুলিশ সুপার (সরাইল সার্কেল) মাসুদ রানা, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন টিটু এবং ওসি (তদন্ত) নূরুল হক।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, শনিবারের ঘটনা তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম রেঞ্জের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হোসেনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্যদিকে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭ টি গ্রামকে লক ডাউন করা হয়েছে। এসব গ্রামের সকল বাসিন্দাদের হোমকোয়ারেন্টাইনের থাকার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা ও চালানো হয়েছে। আগামী ১৪ দিন তারা হোমকোয়ারেন্টাইনে থাকবে।
লকডাউনে থাকা বাসিন্দাদের দাবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা তারা জানে না। রবিবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে পুলিশ যানবাহনের চলাচল নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। তবে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত যাত্রীরা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে পায়ে হেটে পার্শ্ববর্তী হবিগঞ্জ, মাধবপুর, ভৈরব ও নরসিংদীর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। এছাড়াও ১১ এপ্রিল থেকে লক ডাউন শুরু হলেও রবিবার শহরে যানবাহন এবং জনসাধারণের চলাচল অনেকটাই বেড়েছে।