যে ৫ টি বাজে অভ্যাসের কারণে বয়সের ছাপ পড়ে দ্রুত!

0

আমরা প্রত্যেকেই যার যার রুপ, রঙ ও সৌন্দর্য নিয়ে বেশ সচেতন। কেউ কেউ খুব বেশি সময় দিই এগুলোতে, আবার কেউ বা যতোটুকু যত্ন না নিলেই নয়, ততোটুকুই নিই। কিন্তু বয়সের ছাপ এক সময় পড়েই যায় ত্বকে। একটি নির্দিষ্ট বয়স পার হলে আমরা সকলেই বয়স্ক হতে থাকি। সেটিরও একটি সময়সীমা আছে। নিত্যদিনের কিছু ছোটখাটো অভ্যাসই আমাদের দ্রুত বুড়িয়ে ফেলতে পারে, তা কী আপনি জানেন?


যেহেতু বয়সের ওপর আমাদের কারো হাত নেই, সেহেতু কিছু ছোটখাটো ব্যাপার মেনে চললেই আমরা সুন্দর ও শুভ্র থাকতে পারি। বদভ্যাসগুলো বাদ দিলেই ভালো একটি জীবন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেক সমস্যাও কমে যাবে। চলুন তবে সেগুলো জেনে আসা যাক-


নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার না করা
আপনি কি এমন কেউ যে শুধুমাত্র সমুদ্র সৈকতে গেলেই সানস্ক্রিন ব্যবহার করেন? এটি কিন্তু একদম ভুল। ঘর থেকে বের হওয়া মাত্রই সানব্লক ক্রিম লাগাতে হবে এবং অবশ্যই সঠিক পরিমাণে। তা না হলে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি খুব বিশ্রীভাবে ত্বকের ক্ষতি করে। এমনকি ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে।


অতিরিক্ত তাপে অবস্থান করা
রুম হিটার এবং এয়ারকন্ডিশনার আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে গিয়েছে। কিন্তু আমরা এটা বারংবার ভুলে যাই যে এ দুটোই বাতাস থেকে আর্দ্রতা শুষে নেয়। এতে করে আমাদের ত্বকও প্রচণ্ড শুষ্ক হয়ে যায়। ফলে অল্প বয়সেই বলিরেখা ও ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। খুব বেশি ঠাণ্ডা কিংবা গরমে অবস্থান করা কমিয়ে ফেলুন।


যথেষ্ট না ঘুমানো
শরীরে কর্মশক্তি যোগানোর জন্য ঘুম খুব প্রয়োজনীয়। ঘুমানোর সঙ্গে সঙ্গে আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষ সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং যেকোন ক্ষয়ক্ষতি পুনর্গঠন করে। প্রতিনিয়ত পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরে প্রচণ্ড ধকলের সৃষ্টি হয় এবং সেটি কর্টিসল নামে একটি হরমোন উৎপাদন করে। এটি রক্তে যথাযথ পরিমাণ অক্সিজেন পৌছতে দেয়না এবং ত্বক অপুষ্টিতে ভুগে ক্লান্ত ও নির্জীব হয়ে পড়ে। সেজন্যেই প্রতিদিন নিয়ম করে আট ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন।


চোখের নিচের পর্যাপ্ত যত্ন না নেওয়া
চোখের নিচের ত্বক সবচেয়ে পাতলা এবং সংবেদনশীল হয়ে থাকে। এজন্যেই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়লে চোখের নিচেই সবার আগে দেখা দেয়। ভালো একটি আই ক্রিম ব্যবহার করা শুরু করে দিন নিয়ম মতন কিংবা প্রতি রাতে বাদাম তেল আলতোভাবে ম্যাসাজ করুন। এতে করে ত্বক সুস্থ থাকবে।


অতিরিক্ত মেকআপ ব্যবহার করা
আমরা সকলেই জানি মেকআপ করে একটু গুছিয়ে বের হলে আমাদের আত্মবিশ্বাস বহুগুণে বেড়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে মেকআপ ব্যবহার করা ত্বকের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। এতে করে ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বলিরেখা দেখা দেয়। মাঝেমধ্যে স্বল্প মেকআপ করে কিংবা মেকআপ না করে ত্বককে নিঃশ্বাস নেওয়ার সুযোগ দিন।
আজ থেকেই এই বদভ্যাসগুলো ত্যাগ করুন এবং খুঁজে নিন একটি নতুন নিজেকে। ভালো থাকবেন আপনিই।

ব্যায়াম ও ডায়েট ছাড়াই ওজন কমান ৩টি উপায়ে

ওজন কমানোর ক্ষেত্রে কোনো একটি উপায় সবার কাজে আসে না। কারো কারো ডায়েট করে উপকার হয়, কেউ কেউ ব্যায়াম করে উপকার পান। এসবের পাশাপাশি আপনি আরো একটি পদ্ধতিতে ওজন কমাতে পারেন, আর তা হলো মেডিটেশন বা ধ্যান।


আপনার কাছে অবাক লাগতে পারে, ভাবতে পারেন, ধ্যান তো মানসিক প্রশান্তি নিয়ে আসে, এটা কী করে ওজন কমাতে পারে? রহস্যটা হলো, প্রতিদিনকার জীবনে নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য যে মানসিক শক্তিটা দরকার, সেটা আপনি পেতে পারেন ধ্যান থেকে।


পুষ্টিবিদ কিম্বারলি স্নাইডার প্রচুর মানুষের সাথে কাজ করেছেন ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে। তিনি দেখেন, এই প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে ধ্যান বা মেডিটেশন। নিজের আশেপাশের পরিবর্তন যেন আপনার খাদ্যভ্যাস এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের পথে বাধা তৈরি করতে না পারে, সেক্ষেত্রে আপনাকে সাহায্য করবে মেডিটেশন।


ওজন বাড়ার জন্য যে ব্যাপারটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দায়ী, তা হলো অতিরিক্ত খেয়ে ফেলা। অতিরিক্ত খাওয়ার জন্য কিন্তু আমাদের আবেগ-অনুভুতিকেই দায়ী করা যায়। এ কারণে নিজের মানসিক অবস্থাকে স্থিতিশীল রাখার মাধ্যমে ওজন কমাতে কাজে আসে কিছু ধ্যান। এসব মেডিটেশন যে কোনো সময়ে, যে কোনো জায়গায় করতে পারেন আপনি। চলুন দেখে নিই খাওয়া কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে এমন তিনটি মেডিটেশনের উপায়-


১) অপরিকল্পিত ডায়েটিং বাদ দেবার মেডিটেশন
ইন্টারনেটে খুঁজলে আপনি শত শত ডায়েটিং মেথড দেখতে পারবেন। এই মাসে একটি ডায়েট শুরু করলেন তো পরের মাসে মনে হবে আরেকটি শুরু করি। এভাবে আসলে কোনো ডায়েটই আমরা ধরে রাখতে পারি না, কোনটারই সুফল পাই না। এই ধ্যানটি এমন এলোমেলো অবস্থা থেকে আপনাকে বের হয়ে আসতে সাহায্য করবে। আপনি নিজে কী করে ওজন কমাতে চান সেদিকে মন দিতে এবং আশেপাশের মানুষ কি করছে তা অগ্রাহ্য করতে কাজে আসবে।


যা করতে হবে
মেঝেতে পা ভাঁজ করে আরামদায়ক অবস্থানে বসুন। আপনার মেরুদন্ড সোজা রাখুন। মেঝের সাথে সমান্তরাল রাখুন আপনার থুতনি। চোখ বন্ধ করুন।
বাম হাত পেটের ওপর এবং ডান হাত হৃৎপিণ্ডের ওপর রাখুন।


ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নিন। নিজের শরীরকে কল্পনার চোখে দেখুন। ভাবুন, আপনার হৃৎপিণ্ড থেকে পেটে এরপর আবার পেট থেকে হৃৎপিণ্ডে আসছে আপনার নিঃশ্বাস, পেট ও হৃৎপিণ্ড একে অপরের সাথে এভাবে যুক্ত।


এভাবে ১০ বার নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসের পর হাত নামিয়ে উরুর ওপর রাখুন, কিন্তু নিঃশ্বাস নিতে থাকুন একইভাবে। সবশেষে আবার বাম হাত পেটে ও ডান হাত হৃৎপিণ্ডের ওপর রাখুন।

২) স্ট্রেস ইটিং কমানোর মেডিটেশন
জীবনে যখন প্রচন্ড স্ট্রেস যাচ্ছে, নিজের জন্য একটুও সময় পাচ্ছেন না, তখন তেল চুপচুপে ভাজা খাবার, বেশি করে মশলা বা চিনি দেওয়া খাবার একটু বেশিই আকর্ষণীয় লাগে। এই মেডিটেশনটি করলে আপনার স্ট্রেস কমে আসবে এবং অস্বাস্থ্যকর খাবারের প্রতি আকর্ষণটি কমে আসবে।


যা করতে হবে
আগের মতই মেঝেতে পা ভাঁজ করে আরামদায়ক অবস্থানে বসুন। আপনার মেরুদন্ড সোজা রাখুন। মেঝের সাথে সমান্তরাল রাখুন আপনার থুতনি। চোখ বন্ধ করুন।
নাক দিয়ে গভীর করে কিছু নিঃশ্বাস নিন। প্রতিটি নিঃশ্বাসের সাথে আপনার পেটের ওঠানামাকে অনুভব করুন। শ্বাস ছাড়ার সময়ে কল্পনা করুন আপনার পুরো শরীর থেকে স্ট্রেস বের হয়ে যাচ্ছে বাতাসের সাথে।


নিজের মাথা থেকে পা পর্যন্ত কোথায় স্ট্রেস আছে, কল্পনা করুন। চিন্তা করুন একটু একটু করে নিঃশ্বাসের সাথে চলে যাচ্ছে এই স্ট্রেস। নিজের মনোযোগ নিয়ে আসুন দুই ভ্রুর মাঝখানে। ভাবুন, শান্তির একটা অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ছে সারা শরীরে।


৩) ইমোশনাল ইটিং কমানোর মেডিটেশন
আপনার আবেগের প্রভাব পড়ে স্নায়ুতন্ত্রের ওপর, আর তখনই আমাদের ইচ্ছে করে বেশি বেশি ফ্যাটি খাবার খেতে। আপনি যখন আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না, তখন দেখবেন বেশি বেশি অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া হয়ে যায়। এই সমস্যাটি থেকে বের হয়ে আসার মেডিটেশন দেখে নিন-


যা করতে হবে
আগের মতই মেঝেতে পা ভাঁজ করে আরামদায়ক অবস্থানে বসুন। আপনার মেরুদন্ড সোজা রাখুন। মেঝের সাথে সমান্তরাল রাখুন আপনার থুতনি। চোখ বন্ধ করুন।
হাতের তালু ওপরের দিকে দিয়ে হাঁটুর ওপর রাখুন। গভীর শ্বাস নিন। শ্বাস টানার সময়ে হাতের আঙ্গুল ভেতরের দিকে ভাঁজ করুন, আর শ্বাস ছাড়ার সময়ে আবার আঙ্গুল খুলে দিন। কয়েকবার এমনটা করার পর আঙ্গুল স্থির রাখুন, কিন্তু গভীর নিঃশ্বাস নিতে থাকুন। কল্পনা করুন, আপনার প্রাণশক্তি (ধ্যানের ভাষায় ‘চি’) আপনার মাথার তালু থেকে শরীরের বাকি সব অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে, পুরো শরীরকে প্রাণবন্ত করে তুলছে, দূর করছে রোগশোক। কয়েক দফা নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস শেষে হৃৎপিণ্ডের সামনে হাত এনে করজোড় করে ধরুন। নিজের জীবনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com