ক্যানসার কেন হয়

0

মানবদেহ অসংখ্য ক্ষুদ্র কোষ দিয়ে তৈরি। একই ধরনের অনেক কোষ মিলে দেহে কলা ও গ্রন্থ তৈরি হয়। এগুলো নির্দিষ্ট সময় পরপর মারা যায়। পুরনো কোষ ভরে ওঠে নতুন কোষে। কোষগুলো নিজেই বিভক্ত হয়ে বৃদ্ধি ঘটায়। এ বৃদ্ধি স্বাভাবিক, নির্দিষ্ট ও নিয়মিতভাবে সংগঠিত হয়। এর মাধ্যমে মানুষের শরীরের কলাগুলোর কোষসংখ্যা বজায় থাকে।

ক্যানসার কেন হয় : ক্যানসার হওয়ার কারণ নিয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মধ্যে মতভেদ আছে। তবে সাধারণ কিছু বিষয় ক্যানসার তৈরির কারণ হতে পারে বলে মনে করা হয়।

বয়স : বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমে কমতে থাকে। এতে স্বাভাবিক ক্ষমতা হারিয়ে কোষে টিউমার তৈরির আশঙ্কা দেখা দেয়। ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে সাধারণত বয়স্কদের ক্যানসার হতে দেখা দেয়।

খাবার : খাবার ও জীবনযাপন ধারা আরেকটি কারণ। যেমন ধূমপান, মদ্যপানের সঙ্গে ফুসফুস, মুখ, কণ্ঠনালি ও যকৃৎ বা লিভার ক্যানসারের যোগসূত্র রয়েছে। একইভাবে পান-সুপারি, জর্দা, মাংস, অতিরিক্ত লবণ, চিনি ইত্যাদি খাবারের সঙ্গেও ক্যানসারের গভীর সম্পর্ক রয়েছে।

শারীরিক পরিশ্রম : শারীরিক পরিশ্রম কম করলে ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা বাড়তে থাকে। পারিবারিক ইতিহাস আরও একটি কারণ। ক্যানসারের সঙ্গে জিনগত সম্পর্ক রয়েছে বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে পরিবারের কারও যদি ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা থাকে, তাহলে অন্যদেরও ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়।

পরিবেশ ও পেশা : পরিবেশ ও পেশাগত কারণও দায়ী। রাসায়নিক পদার্থের কারণেও ক্যানসার হতে পারে। যেমন- মেসোথেলিওমিয়ায় (এক ধরনের দুর্লভ ক্যানসার। এতে ফুসফুসের চারপাশ এবং পেটের দিকের কোষগুলো আক্রান্ত হয়) আক্রান্তদের ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই এসবেস্টস ধাতুর সংস্পর্শে আসার কারণে এ ক্যানসারে আক্রান্ত হন। পরিবেশগত কারণের অন্যতম একটা সূর্য। রোদে বেশিক্ষণ থাকার কারণে ত্বকের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তেজস্ক্রিয়তার কারণেও বিভিন্ন ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।

ক্যানসার প্রতিরোধে প্রাকব্যবস্থা : নিয়মিত কিছু বিষয় মেনে চললে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি কমানো যায়। যেমন প্রতিদিন নিয়মিত কিছু সময় ব্যায়াম করা। মাংস খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া বা কমিয়ে দেওয়া। প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি, ফলমূল ও আঁশজাতীয় খাবার খাওয়া। চর্বিজাতীয় খাবার কম খাওয়া। ধূমপান বা মদ্যপান ছেড়ে দেওয়া বা পরিমাণ কমিয়ে আনা। পান-সুপারি, জর্দা, তামাকপাতা খাওয়া বন্ধ করা। রোদে বের হওয়ার সময় সানস্ক্রিন মেখে বের হওয়া। নিয়মিত ডাক্তার দেখানো। তা সম্ভব না হলে শরীরে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখা দিলেই ডাক্তারের কাছে যাওয়া। বয়স পঞ্চাশের বেশি হলে অবশ্যই নিয়মিত ডাক্তারের কাছে গিয়ে শরীর পরীক্ষা করানো।

অধ্যাপক ডা. মো. ইয়াকুব আলী

টিউমার ও ক্যানসার রোগ বিশেষজ্ঞ

অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান

শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, শেরেবাংলানগর, ঢাকা

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com