জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি কখনো পিছপা হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না: তারেক রহমান
জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি কখনো পিছপা হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জনগণের জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত গণতন্ত্র ঝুঁকিমুক্ত নয়। অশুভ অদৃশ্য শক্তির তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে; কোনো কোনো দল নানা শর্ত আরোপ পরিকল্পিতভাবে নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
তারেক রহমান বলেন, পুঁথিগত সংস্কারের চেয়ে কার্যকর গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক চর্চার মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা বেশি জরুরি। রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে সংস্কারে বিএনপি সম্পূর্ণ একমত। সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে; তবে জনগণের অধিকার চর্চা ও প্রয়োগের পথে বাধা সৃষ্টি করে কোনও সংস্কার টেকসই করা যাবে না।
রোববার (৩১ আগস্ট) বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় সভায় ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের অভিপ্রায়ের সরকার। তবে এই সরকারের কাছে অবশ্যই একটি দক্ষ ও জবাবদিহি মূলক রাজনৈতিক সরকারের মতো পারফরম্যান্স আশা করার যৌক্তিক কারণ নেই। এইজন্য এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, তত তাদের দূর্বলতা তত বেশি দৃশ্যমান হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান উপায় হলো জাতীয় নির্বাচন। প্রায় এক বছর আগে আমি বলেছিলাম আগামী নির্বাচনকে ঘিরে অদৃশ্য শক্তি কাজ করছে। জনগণ লক্ষ্য করতে শুরু করেছে। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের বাংলাদেশের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ বিনষ্ট করা, এর ক্ষেত্র প্রস্তুতে অশুভ শক্তির অপতৎপরতা সাম্প্রতিক সময়ে ধীরে ধীরে দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার সুযোগে ষড়যন্ত্রকারীরা সক্রিয় হতে পারে উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, সঙ্গত কারণেই এ সরকার যত বেশি দিন ক্ষমতায় থাকবে, তাদের দুর্বলতা তত বেশি দৃশ্যমান হতে থাকবে। বিভিন্ন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতা যত বেশি প্রতীয়মান হবে, জুলাই বিরোধী অপশক্তি ৫ আগস্ট নিয়ে তত বেশি বিভ্রান্তি সৃষ্টির সুযোগ পাবে। দেশে স্থিতিশীল পরিস্থিতিকে ক্রমেই জটিল করে তোলা হচ্ছে। এখনো সময় আছে, আমাদের সতর্ক হওয়া দরকার। পরাজিত, পলায়নপর অপশক্তি কিন্তু সুযোগের অপেক্ষায় ওঁৎ পেতে রয়েছে।
এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের পথ হিসেবে জনগণের শক্তিকেই মূল ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা রকম ষড়যন্ত্রের জাল বোনা শুরু করেছে। তবে জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক থাকলে আমরা বিশ্বাস করি, কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপির অগ্রযাত্রাকে রুখতে পারবে না।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আরও বলেন, পলাতক স্বৈরাচারের মতো বিএনপিরও বিজয় ঠেকানোর অপরাজনীতির পরিবর্তে আসুন আগে নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের বাংলাদেশের কাছে দায়বদ্ধ সরকার গঠন করি সকলে মিলে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে একটি নির্বাচনকেন্দ্রীক গণতন্ত্র চর্চার পথেই হাঁটতে হবে। জনগণের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক আমাদের বজায় রাখতে হবে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি আরও বলেন, বিএনপি মনে করে রাজনীতি মানে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি নয়। বরং জনগণের জীবনমানের উন্নয়ন এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা। সে লক্ষ্যে বিএনপি বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কীভাবে এগুলো কাজ করবে তা পেপারওয়ার্কের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
আসন্ন নির্বাচনে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে তারেক রহমান আরও বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানারকম ষড়যন্ত্র ডালপালা মেলতে শুরু করেছে। গণতন্ত্র, ন্যায়, বিচার, আইনের শাসন এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি কখনো পিছপা হয়নি, ভবিষ্যতেও হবে না।