রোদে ত্বক পুড়ে গেলে

0

সূর্যের আল্ট্রাভায়োলেট রশ্মি সব সময় ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে গ্রীষ্মের এ সময়ে সূর্যরশ্মির জন্য অনেকের ত্বকে কালো, লালচে, জ্বালাপোড়া বা চুলকানি ও ফোসকা পড়ে। সম্প্রতি গ্রিন হাউস ইফেক্টের জন্য ওজোনস্তর নিচে নেমে এসে তাপমাত্রা অধিক বেড়ে গিয়ে চামড়ায় বিভিন্ন ধরনের ব্যাধি দেখা দিচ্ছে।

সানবার্ন ও সানট্যান কী : সান অর্থ সূর্য, বার্ন অর্থ পোড়া- অর্থাৎ ত্বক লাল হয়ে যাওয়া, একটু ফোলা ভাব থাকা এবং এমন হলে ফোসকা পড়াও বিচিত্র নয়। এ ক্ষেত্রে ত্বকে বেশ জ্বালাপোড়া ও চুলকানি থাকে। কয়েক ঘণ্টা রোদে থাকলেই এ উপসর্গ দেখা দেয়। একে অ্যাকিউট সানবার্ন বলে। ক্রনিক সানবার্ন বলে আরেকটি রোগ আছে। এ ক্ষেত্রে ত্বক কয়েক বছর ধরে তীব্র রোদে ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক্সপোজড হয়। এর ফলে ত্বকের রঙ হয়ে যায় অদ্ভুত ধরনের কালো ও কুঁচকানো। তবে সাদা চামড়াধারীদের চেয়ে আমাদের এ সমস্যা কম হয়। কারণ কালো চামড়াধারীরা প্রাকৃতিকভাবেই সুরক্ষিত থাকে। মেলানিন পিগমেন্ট আমাদের চামড়ায় বেশি থাকে বলেই এ সমস্যা থেকে আমরা মুক্ত। সাদা চামড়াধারীরা তাই চেষ্টা করেন রোদকে একটু একটু করে সইয়ে নিতে। এ জন্য সমুদ্রতীরে তারা সানবাথ নেন। এতে ত্বক ট্যান হয় অর্থাৎ ত্বকে অল্প করে কালো আভা চলে আসে। এই ত্বকের তীব্র রোগ সহ্য করার ক্ষমতা থাকে। রোদে ঘুরে ঘুরে ত্বক কালো হয়ে গেলে তাকে সানট্যান বলে, যা এখন দেখা যাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ত্বকের মেলানোসাইটের সক্রিয়তা বাড়ে। এই কোষ থেকে বেরিয়ে আসে বেশি পরিমাণে মেলানিন। ফলে ত্বকের রঙ কালচে দেখায়। এছাড়া সানট্যানে কালো হয়ে যাওয়া ত্বক কয়েক ঘণ্টা বিশ্রামে চিকিৎসা ছাড়াই স্বাভাবিক হয়।রোদে গেলে মুখ লাল হয় কেন : আলো ও তাপ পেয়ে ত্বকের রক্তবাহী নালীগুলো সাধারণত প্রসারিত হয়, তাই মুখ লাল দেখায়। কারও কারও সূর্যালোকে স্পর্শকাতরতা থাকে। তাদের সূর্যের আলো ত্বকের স্পর্শকাতর কোষ কাইনিন বের করে দেয়, যা রক্তনালীগুলোকে বেশি প্রসারিত করে।

ঝুঁকিপূর্ণ কারা : সুন্দর ও কোমল ত্বক, নীল চোখ, লাল বা সোনালি চুলের অধিকারী অর্থাৎ পশ্চিমা নাগরিকদের এ সমস্যা বেশি হয়। আমাদের দেশেও যেহেতু তাপমাত্রা বাড়ছে, তাই কমবেশি সবাই এতে আক্রান্ত হচ্ছে।

প্রতিরোধের উপায় : সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সূর্যের রশ্মি এড়িয়ে চলুন। একান্তই বের হতে হলে সুতি কাপড় দিয়ে যথাসম্ভব মুখ ও শরীর ঢেকে বের হন। সান প্রটেকটিভ ফ্যাক্টর বা এসপিএফ-৩০ এর ঊর্ধ্বে ক্রিম দেহের যে জায়গা কাপড় দিয়ে ঢাকা থাকে না সেখানে ব্যবহার করুন। চামড়া যত নরম হবে এসপিএফের নম্বর তত বাড়বে। এ ছাড়া মাথায় ক্যাপ, হ্যাট বা টুপি ব্যবহার করতে পারেন।

ঘরে বসে যত্ন : ঠান্ডা পানিতে পরিষ্কার তোয়ালে, গজ বা কাপড় ভিজিয়ে আক্রান্ত স্থানে জড়িয়ে রাখুন। ঠান্ডা পানিতে গোসল করুন। এর সঙ্গে জ্বর, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা থাকলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খান। স্টেরয়েড জাতীয় (১% হাইড্রোকটিসন) ক্রিম আক্রান্ত ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন।

ঠান্ডা, নিরিবিলি কক্ষে বিশ্রাম নিন। লোকাল অ্যানেসথেটিক কোনো ক্রিম বা স্প্রে ব্যবহার করবেন না। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন প্রতিকার নয় প্রতিরোধ সর্বদা উত্তম।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com