ফোনে ব্যস্ত নার্স, নার্সদের অবহেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে সন্তানকে নিয়ে ফেরা হয়নি বাবার

0

বিয়ের ১০ বছর পর চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার বাসিন্দা ময়না বেগমের কোলজুড়ে আসে ছেলে আয়ান উদ্দিন। সন্তানের ডায়রিয়া হওয়ায় তাকে নিয়ে ছুটে যান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু নার্সদের অবহেলায় সেই সন্তানকে নিয়ে আর ফেরা হয়নি তার।

শনিবার (১১ জানুয়ারি) চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটে। পরে তিন নার্সকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সিনিয়র স্টাফ নার্স আম্বিয়া খাতুন, মজিদা খাতুন ও আমেনা খাতুন।

১৬ মাস বয়সী শিশু মো. আমান উদ্দিন রহনপুর পৌর এলাকার মুক্তাশা হলপাড়ার আমিন ইসলামের ছেলে।

আমিন ইসলাম বলেন, ৮ জানুয়ারি অসুস্থ অবস্থায় ছেলেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। গত ১০ জানুয়ারি রাতে তার স্যালাইন শেষ হয়ে যায়। রাতেই আমি দৌড়ে নার্সদের কাছে গিয়ে স্যালাইন দিতে বলি এবং চিকিৎসার পরবর্তী কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাই। কিন্তু আমার সন্তানের বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে, তারা মুঠোফোনে ব্যস্ত থাকেন। আমার সাথে কথাই বলেননি। এমনকি এসময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোনো চিকিৎসকও ছিলেন না। পরে শনিবার সকালেই আমার ছেলের মৃত্যু হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক কর্মচারী বলেন, চিকিৎসা কার্যক্রম বাদ দিয়ে মুঠোফোনে ব্যস্ত ছিলেন নার্স। এসময় আমানের বাবা স্যালাইন দিতে বলেন। কিন্তু তার কথায় গুরুত্ব দেননি তারা।

ওই শিশুর মৃত্যুর পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উত্তেজনা দেখা দেয়। এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এসে বিক্ষোভ শুরু করেন। একপর্যায়ে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিন নার্সকে তালাবদ্ধ করে রাখা হয় একটি কক্ষে। পরে তিনজনকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এছাড়া শিশুটির বাবা থানায় মামলাও করেছেন।

গোমস্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল হামিদ বলেন, যারা দায়িত্বে ছিল তাদেরকে দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এমন ঘটনা যেন আর না ঘটে সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com