আফ্রিকায় চূড়ান্ত পতনের দ্বারপ্রান্তে ফরাসি নীতি!
২০২৫ সালের শুরুতে ফ্রান্স আফ্রিকার সাবেক উপনিবেশগুলোতে তাদের সামরিক উপস্থিতি আরও কমাতে শুরু করেছে, এবং এই সপ্তাহে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর বিতর্কিত মন্তব্য নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
মালি, নিজার এবং বুরকিনা ফাসোর পর এবার চাদ, সেনেগাল এবং আইভরি কোস্টও ফ্রান্সকে তাদের ভূখণ্ড থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। এর পিছনে ক্রমবর্ধমান ফ্রান্স-বিরোধী মনোভাব থেকে শুরু করে বৃহত্তর সার্বভৌমত্বের দাবি এবং অন্যান্য বিদেশি শক্তির সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা পর্যন্ত বিভিন্ন কারণ বিদ্যমান। কিন্তু, কারণগুলোর প্রভাব একই রকম।
‘ফ্রেঞ্চ ইন্সটিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস’ আফ্রিকা সেন্টারের গবেষক থিয়েরি ভিরকুলন বলেন, আফ্রিকায় ফরাসি নীতির স্পষ্ট পতন ঘটেছে। ফ্রান্সের সৈন্য প্রত্যাহার এবং মূলত আফ্রিকায় ফ্রান্সের সামরিক উপস্থিতির সমাপ্তি সেই পতনের প্রতীক।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ফ্রান্স-আফ্রিকার মধ্যেকার সম্পর্কের কোনো উন্নতি হয়নি। সোমবার ম্যাক্রোঁ বলেন, সাহেল অঞ্চলের কিছু দেশ ইসলামপন্থি বিদ্রোহের বিরুদ্ধে এক দশকব্যাপী লড়াইয়ের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ফ্রান্সের সেনাদের ধন্যবাদ জানাতে ভুলে গেছে।
এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে চাদ এবং সেনেগালের নেতারা তীব্র সমালোচনা করেন। তবে ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ দাবি করে, ম্যাক্রোঁর মন্তব্যগুলো প্রসঙ্গ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
ম্যাক্রোঁর সরকার গত বছর মহাদেশটিতে তাদের সামরিক উপস্থিতি কমানোর পরিকল্পনা ঘোষণা করেন এবং দেশগুলোর দাবির প্রতি আরও দ্রুত সাড়া দেওয়ার পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। গ্যাবন এবং জিবুতিতেও ফ্রান্সের সৈন্য রয়েছে।
ফ্রান্স ফরাসি ভাষী আফ্রিকার দেশগুলোর বাইরেও সম্পর্ক প্রসারিত করেছে। উদাহরণস্বরূপ, তাদের দু’টি বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার হল নাইজেরিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা।
তবে বিশ্লেষক ভিরকুলন ভবিষ্যদ্বাণী করেন, আফ্রিকায় ফ্রান্সের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব বড়জোর সীমিত থাকবে।
তিনি বলেন, ফ্রান্সের সরকারের এখানে খুব কমই কিছু করার আছে, এবং তারা রাশিয়া ও পশ্চিমা নয় এমন অন্যান্য দেশের পক্ষে কাজ করছে।
তিনি বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন ফ্রান্সের কৌশলগত অগ্রাধিকার ইউরোপে সম্ভাব্য সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবে।