বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠাতে মমতার দাবির বিষয়ে যা বললেন শশী থারুর
কথিত সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। তার ওই বক্তব্যে এরই মধ্যে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ঢাকা। এবার তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন তারই দেশের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ শশী থারুর। তিনি বলেছেন, মমতা ব্যানার্জী হয়তো জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেননি।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বার্তা সংস্থা পিটিআই’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কংগ্রেস নেতা শশী থারুর বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীরা সাধারণত কোনো দেশের ভেতরে প্রবেশ করে না, যদি না সেই দেশের সরকার নিজে থেকে অনুরোধ জানায়।
গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী কেন্দ্রীয় সরকারকে আহ্বান জানান, তারা যেন জাতিসংঘের কাছে অনুরোধ করে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের জন্য। তার বক্তব্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
মমতা বলেন, যদি প্রয়োজন হয়, তবে (অন্তর্বর্তী) সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো হোক, যাতে তারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সহায়তা করতে পারে।
এই প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়ায় কেরালার তিরুবনন্তপুরমের সংসদ সদস্য শশী থারুর বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের ভূমিকা সম্পর্কে হয়তো তিনি (মমতা) পুরোপুরি অবগত নন। দীর্ঘদিন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, এ ধরনের বাহিনী কেবলমাত্র কোনো দেশের অনুরোধেই পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, কোনো দেশ সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়লে এবং দেশটির সরকার নিজ থেকে অনুরোধ করলে শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়। তবে, আমি একমত যে, বাংলাদেশে কী ঘটছে তা নজরদারি করা জরুরি।
এর আগে, বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মোতায়েন প্রসঙ্গে মমতার বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এমন বক্তব্য তার জন্য ‘সঠিক পদক্ষেপ নয়’ বলে উল্লেখ করেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
মমতার বক্তব্য বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মমতা ব্যানার্জীর বক্তব্যকে আমি ‘মমতা ব্যানার্জী ধরনের বক্তব্য’ হিসেবেই দেখতে চাই। কারণ, উনি এই বক্তব্য কেন দিলেন সেটি বুঝতে পারছি না।
তিনি বলেন, আমি মনে করি এটি তার জন্য সঠিক পদক্ষেপ নয়। রাজনীতিকরা তো রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই বক্তব্য দিয়ে থাকেন। আমি মনে করি, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এটি (বক্তব্য) হয়তো তাকে সহায়তা করবে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস