সিরিয়ার আলেপ্পোর অর্ধেক এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম
সিরিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর অন্তত অর্ধেক এলাকা দখল করেছে সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা ও তথ্যকেন্দ্র সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটসের পরিচালক রামি আবদুল রাহমান জানিয়েছেন এ তথ্য।
এএফপিকে রামি আবদুল রহমান বলেন, “আলেপ্পো শহরের অর্ধেক অঞ্চল এখন নিয়ন্ত্রণ করছে হায়াতা তাহরির আল-শাম এবং তার সহযোগী গোষ্ঠীগুলো। গত বেশ কিছুক্ষণ ধরে জিহাদিদের দখলকৃত এলাকায় সংঘাত এবং গোলাগুলি বন্ধ রয়েছে। কারণ সরকারের সেনাবাহিনীর সদস্যরা ওই এলাকা থেকে সরে এসেছেন।
সিরিয়ার সরকার ইতোমধ্যে আলেপ্পোর বিমান বন্দর এবং শহরের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সব সংযোগ সড়ক বন্ধ ঘোষণা করেছে। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের নির্দেশেই নেওয়া হয়েছে এসব পদক্ষেপ। সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের কট্টর বিরোধী বলে পরিচিত হায়াত তাহরির আল-শামের জিহাদিরা ইতোমধ্যে শহরের কেন্দ্রস্থলে অবস্থান নিয়েছে বলেও জানা গেছে।
গত সপ্তাহ থেকে সিরিয়ার ছোট-বড় বিভিন্ন শহরের দখল নেওয়া শুরু করে এইটিএস ও তার সহযোগী গোষ্ঠীগুলো। সেই ধারাবাহিকতায় শনিবার রাতে আলেপ্পোতে এসে পৌঁছায় তারা। ২০১৬ সালে এই আলেপ্পোতেই সিরিয়া, রাশিয়া, ইরান ও স্থানীয় শিয়া যোদ্ধাদের সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনীর কাছে পরাজিত হয়ে শহরটি থেকে বিতাড়িত হয়েছিল এইচিএস। প্রায় এক দশক পর ফের সেখানে প্রবেশ করল গোষ্ঠীটি।
রাশিয়া অবশ্য নিজেদের অন্যতম পুরোনো ও বিশ্বস্ত মিত্র বাশার আল আসাদকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে এই বিদ্রোহীদের প্রতিহত করতে নতুন সেনা ইউনিট পাঠানো হবে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিরিয়ায় এসে পৌঁছানোর কথা সেসব ইউনিটের।
সিরিয়ার সেনাবাহিনীর একটি উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, মস্কোর কাছ থেকে এ প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর যেসব এলাকায় বিদ্রোহীরা প্রবেশ করেছে, সেসব স্থান থেকে সেনাদের সরে আসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ।
এইচটিএসের সহযোগী জিহাদি গোষ্ঠী জইশ আল ইজ্জার কমান্ডার মোস্তফা আবদুল জাবের এএফপিকে জানান, গত বুধবার আলেপ্পোর উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন তারা, তারপর শুক্রবার সন্ধ্যাপর পর সেখানে পৌঁছেছেন।
তিনি আরও বলেন, আলেপ্পো প্রদেশ ও শহরের সীমান্ত অঞ্চলে ইরান-সমর্থিত জনবলের স্বল্পতা থাকায় তারা দ্রুত অগ্রসর হতে পেরেছেন।
আলেপ্পোর সীমান্ত অঞ্চল পাহারার কাজে নিযুক্ত ছিলেন ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসলামিক রেজিস্ট্যান্স। তবে সম্প্রতি সিরিয়ায় ইসরায়েলি বাহিনীর কয়েকটি বিমান অভিযানে এই গোষ্ঠীটির উল্লেখযোগ্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সূত্র : এএফপি