তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে তিস্তা অভিমুখে রোডমার্চ

0

তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে তিস্তা অভিমুখে রোডমার্চ করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)।

রোববার (২১ এপ্রিল) সকালে ঢাকা থেকে শুরু হওয়া রোডমার্চ রাতে বগুড়ায় এসে পৌঁছায়। পরে সোমবার (২২ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে শহরের সাতমাথায় মুজিব মঞ্চের সামনে পথসভার আয়োজন করে দলটি।

তিস্তা অভিমুখে রোডমার্চের এ পথসভায় বক্তব্য দেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, রংপুর বিভাগের সমন্বয়ক আব্দুল কুদ্দুস ও বাসদ বগুড়া জেলার সদস্য সচিব দিলরুবা নূরীসহ প্রমুখ।

পথসভায় বক্তারা বলেন, ভূগর্ভস্থ ও ভূ-উপরিভাগের জলপ্রবাহ নিয়ে অববাহিকার পরিমাণ প্রায় ৩০ হাজার বর্গকিলোমিটার। যার মধ্যে বাংলাদেশে ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার এবং ভারতে ১০ হাজার বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উজানে ভারত গজলডোবায় বাঁধ দেওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে শুকিয়ে যাচ্ছে তিস্তা নদী। খরা মৌসুমে আসতে না আসতেই পানি প্রবাহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে কখনও ৫০০ কিউসেকের নিচে নেমে যায়। অথচ ঐতিহাসিক গড় (১৯৭৩-১৯৮৫) অনুযায়ী পানির প্রবাহ থাকার কথা কমপক্ষে ১০ হাজার কিউসেক।

বক্তারা আরও বলেন, চলতি মৌসুমে রংপুর, দিনাজপুর ও নীলফামারি এলাকায় এক লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পানির অভাবে তা কমে আট হাজার হেক্টরে নেমে এসেছে। তাই আমরা রাজনৈতিক দল, তিস্তা পাড়ের মানুষ, কৃষকদের নিয়ে তিস্তার পানি ন্যায্য হিস্যা আদায়ে মাঠে নেমেছি। এ দাবি বাস্তবায়নে সকলের অংশ নেওয়া প্রয়োজন।

পথসভায় বাসদ নেতারা বলেন, ভারত ৫৪টি নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে একতরফাভাবে পানি প্রত্যাহার করছে। আন্তর্জাতিক আইন ও নীতি লঙ্ঘন করে পানি প্রত্যাহার করায় সব নদীতে পানির প্রবাহ কমে গেছে। ফলে নদীগুলো এখন মরতে বসেছে। দেশের অভ্যন্তরে নদী দখল ও দূষণ চলছে অবাধে।

বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ভাত, পানি ও শিক্ষার অভাবের সঙ্গে তীব্র তাপদাহে আমরা এমনিতেই মরতে বসেছি। নতজানু সরকার আর আরেক দল বিএনপি শুধু ক্ষমতার লড়াইয়ে ব্যস্ত। দেশের মানুষের অধিকার ও প্রয়োজন নিয়ে তাদের কোন মাথা ব্যাথা নেই। ফলশ্রুতিতে বন্ধু রাষ্ট্র খ্যাত ভারত আমাদের সুরমা ও কুশিয়ারাসহ সব নদ-নদীর পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফারাক্কা বাধের ফলে রাজশাহীসহ পুরো বরেন্দ্র অঞ্চল মরভূমিতে পরিণত হয়েছে। এখন গভীর নলকূপেও পানি পাওয়া যাচ্ছে না। ভারত পদ্মার পানি প্রবাহ আটকে দেওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের কৃষিতে এক বিরুপ প্রভাপ পরেছে। ভারত আসলে কোন বন্ধু রাষ্ট্র নয়। তারা একটি সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র।

পথসভা শেষে রোডমার্চ বগুড়া শহরের সাতমাথা, থানার মোড়, কাঠালতলা ও নবাববাড়ীসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে কালিতলা মোড় থেকে তিস্তা ব্যারাজ অভিমুখে যাত্রা শুরু করে। এসময় তিস্তা পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে স্লোগান তোলেন অংশগ্রহণকারীরা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com