‘সরকার পতনের জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে হবে’
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ (বীর বিক্রম) বলেছেন, সরকার ঢাক-ঢোল পিটিয়ে বলছে, আইএমএফ থেকে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ঋণ পেয়েছি। এ টাকা শুধু সংস্কার ও প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয় হবে।
এ টাকা অন্য খাতে ব্যয় হবে না। যেমন আমদানি-রফতানি ও উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা যাবে না। অন্যদিকে দুর্নীতি ও দুঃশাসন সর্বস্তরে ব্যাপকতা লাভ করেছে। মনে হয় সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা গরিবের টাকা লুট পাটের জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর পূর্বপান্থপথ এফডিসি সংলগ্ন এলডিপির কার্যালয়ের সামনে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পদযাত্রা কর্মসূচি এলডিপির কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়ে মালিবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
অলি আহমদ বলেন, প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনী দেশের উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সভা, সমাবেশ, মিছিল, মিটিং করতে দিচ্ছে না। তারা সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে কাজ করছে। পুলিশ বাহিনী জনগণের পুলিশ হতে পারেনি। দেশে সবার প্রতি সমান আচরণ করা হচ্ছে না। জনগণকে মনের কথা প্রকাশ করতে দিচ্ছে না। মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ অবস্থায় দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এ সরকারের পতনের জন্য দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে হবে।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের খেলাফি ঋণের শীর্ষে আছে ১০টি ব্যাংক। যার মধ্যে ৩টি ব্যাংকই সরকারি। মুদি ও পান দোকানদারের নামে হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ উত্তোলনের প্রমাণ রয়েছে। এগুলোর সঙ্গে সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা জড়িত না থাকলে তা কখনই সম্ভব নয়। দেশে আমদানি হ্রাস পেয়েছে। অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। রফতানিও কমে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের বর্হিনোঙরের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১১টি জাহাজ পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে। কয়েক মাস ধরে তারা জরিমানা দিয়ে আসছে। ডলারের অভাবে মালামাল খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন কমে যাচ্ছে। প্রবাসীরা আগের মতো সরকারকে বিশ্বাস করতে পারছে না। আগের মতো বৈধ পথে টাকা পাঠাচ্ছে না। কারণ তারা মনে করে আমরা গরিবরা অমানসিক পরিশ্রম করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশে পাঠাই। আর ধনীরা বিলাস বহুল জীবনযাপনের জন্য তা বিদেশে পাচার করে।
অলি আহমদ বলেন, দিন দিন বৈদেশিক মুদ্রা আয় ও ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্য বাড়ছে। সর্বোপরি বিদেশি ঋণের কিস্তি ও সুদ নিয়মিত পরিশোধ করা হচ্ছে না। যাতে অর্থনীতিতে অব্যাহতভাবে ধস নামছে। বর্তমানে মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৭৪০ টাকা।
তিনি বলেন, সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা বৈদেশিক মুদ্রা পাচারের জন্য বিভিন্নভাবে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ৫০ থেকে শতভাগ বাড়ার কারণে ব্যয়ের পরিমাণও ২ থকে ৪ গুণ বাড়ছে। এ টাকা তারা মিলে মিশে লোপাট করছে।