পার্থ-পিকের মধ্যে কি কোনো যোগসাজশ খুঁজে পাচ্ছে ইডি?
সাময়িক বহিষ্কৃত পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও বাংলাদেশের পি কে হালদারের মধ্যে কি কোনো যোগসাজশ খুঁজে পাচ্ছে ইডি? পৃথক ঘটনায় গ্রেফতার হলেও দুজনের মধ্যে কোনো যোগসূত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হালদারদের বিরুদ্ধে ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) দাবি, বাংলাদেশের টাকা আত্মসাৎ করে অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা।
তাদের সহযোগিতা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালীরা।
অপরদিকে, পশ্চিমবঙ্গের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বান্ধবী, অভিনেত্রী অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে পাওয়া গেছে রাশি রাশি রুপি, বিপুল পরিমাণে স্বর্ণ, বৈদেশিক মুদ্রা, জমির দলিল। ইডির জেরায় অর্পিতা জানিয়েছেন, শিল্পমন্ত্রীর কথায় অর্থ-স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রা ফ্ল্যাটে রেখেছিলেন তিনি। আবার শিল্পমন্ত্রীর দাবি, ওই অর্থ তার নয়। জেরায় উঠে আসছে এমনই নানান তথ্য। পাশাপাশি শিল্পমন্ত্রীর বাংলাদেশের সঙ্গে অবৈধ যোগাযোগের সন্ধান পাচ্ছে ভারতের তদন্তকারী সংস্থাটি।
অর্থাৎ, হুন্ডির মাধ্যমে বাংলাদেশের অবৈধ টাকা যেমন হালদারদের হাত ধরে ভারতে এসেছে ঠিক তেমনভাবে পশ্চিমবঙ্গের টাকা শিল্পমন্ত্রীর সহযোগিতায় বাংলাদেশ গেছে। তবে ইডির দাবি, শুধু বাংলাদেশে যায়নি, বাংলাদেশ হয়ে বিদেশেও গেছে। তবে বাংলাদেশ বাদে কালো টাকা সরাসরি বিদেশে কেন যায়নি এ কথাও ভাবাচ্ছে ইডিকে। তদন্তকারী সংস্থাটি মনে করছে অবৈধ অর্থ একটি টেক্সটাইল সংস্থার খাতে বিনিয়োগ হয়েছে বা সেটারর মাধ্যমে আদান প্রদান হয়েছে এবং সেই প্রতিষ্ঠানটি উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে।
ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে সুম্পর্ক ছিল পার্থ-অর্পিতার। আবার কলকাতার পর পার্থ-অর্পিতার সবচেয়ে বেশি অবৈধ অর্থ পাওয়া গিয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার বেলঘরিয়া থেকে। পাশাপাশি বাংলাদেশি পিকে হালদার ও তার ৬ সহযোগীদের গত ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা থেকেই গ্রেফতার করেছে ইডি। এই মুহূর্তে তারা কলকাতার জেল হেফাজতে। পিকে-অর্পিতা ইডির হেফাজতে। ফলে দেখা যাচ্ছে ইডির যত কাণ্ড পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা ঘিরে।
হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ইডির পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভারতে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি পি কে হালদার ওরফে শিবশঙ্কর হালদার ও তার পরিবারের নামে। পিকে হালদার ওরফে শিবশঙ্কর হালদার নামে ভারতে ১৩টি ভুয়া কোম্পানি রয়েছে। বাংলাদেশের অবৈধ অর্থ পশ্চিমবঙ্গে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। তার ও পরিবারের নামে ৮৮টি ভারতীয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। মালয়েশিয়ায় সম্পত্তির হদিস পাওয়া গছে। দুবাইতে ব্যবসা। ভারত, বাংলাদেশ, গ্রানাডার পাসপোর্ট এবং কানাডায় নাগরিকত্বের নথি। ৮১টি ইলেকট্রনিক গ্যাজেট। হালদারের মোবাইল ঘেঁটে সিঙ্গাপুর, কানাডাসহ কয়েকটি রাষ্ট্রে ফোন কলের হদিস। পাশাপাশি পাওয়া গেছে পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালীদের যোগসাজশ।