বগুড়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিডির চাল আত্মসাতের অভিযোগ

0

বগুড়ার সারিয়াকান্দির কাজলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৫ জুলাই) সকালে সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে কাজলা ইউপির টেংরাকুড়া গ্রামের কয়েকজন ভুক্তভোগী অভিযোগ দিয়েছেন।

প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। তবে বিষয়টির সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন ইউএনও।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলার কাজলা ইউপির প্রায় অর্ধশতাধিক দুস্থের ভিজিডি কার্ডের চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে। ভিজিডি কার্ডের উপকারভোগীদের নামে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাল উত্তোলন করা হয়েছে। কিন্তু কার্ডের বিষয়ে কিছুই জানেন না উপকারভোগীরা।

তাদের কাছে কোনো কার্ডই হস্তান্তর করা হয়নি। তারা শুধু জানেন যে, ভিজিডি কার্ডের জন্য তারা ছবিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে জমা দিয়েছিলেন। তবে তাদের নামে যে কার্ড হয়েছে সে বিষয়টি আর জানানো হয়নি।

অভিযোগকারীরা হলেন- কাজলা ইউপির টেংরাকুড়া গ্রামের করিম খানের স্ত্রী গোলাপি বেগম (কাজলা ইউপির ভিজিডি কার্ড নং- ৭৩), মন্টু খানের স্ত্রী আরজিনা বেগম (কার্ড নং- ৭৮) শফিকুল ইসলামের স্ত্রী মোর্শেদা বেগম (কার্ড নং- ২০২), জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী নুরেদা বেগম (কার্ড নং- ৫০), আবুল কালামের স্ত্রী স্বপ্না বেগম (কার্ড নং- ৫৯), সাইফুল খানের স্ত্রী চান বানু (কার্ড নং- ৬১), আলিম উদ্দিনের স্ত্রী স্বরভানু বেগম (কার্ড নং- ২০০), নব্বইয়ের চরের লেবু মিয়ার স্ত্রী স্বপ্না খাতুন (কার্ড নং ২০৩), বেড়াপাঁচবাড়িয়া চরের রাসেল মিয়ার স্ত্রী হিরা বেগম (কার্ড নং ২০৭)।

অভিযোগকারী করিম খাঁনের স্ত্রী গোলাপি বেগম জানান, কয়েকমাস আগে তিনি ভিজিডি কার্ডের জন্য তার ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) ফটোকপি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ারম্যানের কাছে জমা দিয়েছিলেন। পরবর্তীসময়ে তিনি জানতে পারেন যে তার কার্ডটি পাস হয়নি। তিনি বলেন, ‘কয়দিন ধরে শুনিচ্চি হামাগিরে নামে প্রতিমাসে ভিজিডির চাল তোলা হচ্চে। অথচ আজও হামরা কার্ডটাও হাতে পালেম না।’

একই গ্রামের অপর অভিযোগকারী জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী নূরেদা বেগম বলেন, ‘হামরা গরিব মানুষ না খায়া থাকি। আর বড় নোকেরা হামাগিরে চাউল মারে খায়। এর বিচের মানুষ না করলে আল্লাহ ঠিকই করবি। আজ পর্যন্ত একমুঠ চালও কুন্টি থাকে সাহায্য পালেম না।’

অপর অভিযোগকারী একই গ্রামের আবুল কালামের স্ত্রী স্বপ্না বেগম বলেন, ‘ভিজিডি কার্ডের জন্যে হামি ট্যাকাও দিছিলেম। আজ পর্যন্ত ট্যাকাডাও ঘুরে (ফেরত) পাইনি। কত বড় বাটপার আবার হামার নামে প্রতি মাসে ৩০ কেজি করে চাউল মারে খাইছে। আর হামরা ১৮ মাস পর বুজপার পারনু।’

এ বিষয়ে কাজলা ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি তো নতুন চেয়ারম্যান। এ কাজ সাবেক চেয়ারম্যানের হতে পারে।

তবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর চার মাসের চাল তিনিই বিতরণ করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।

জানতে চাইলে সারিয়াকান্দির কাজলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাশেদ মোশারফ দাবি করেন, অভিযোগকারীরা যে ভিজিডি কার্ডের চাল পেতেন না সেটি তিনি জানেন না। তবে চাল আত্মসাতের সঙ্গে তিনি জড়িত নন। এ কাজটি তার অজান্তে কেউ করে থাকতে পারে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, এ বিষয়ে লিখিত একটি অভিযোগ আমরা পেয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com