যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন
ভোলার চরফ্যাশনের দুলারহাটে যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে।
সোমবার আহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে স্বামীর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর বাবা আইয়ুব আলী বাদী হয়ে জামাতা নুরে আলম, শাশুড়ি ফিরোজা ও দেবর বাবুলকে আসামি করে দুলারহাট থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগের পরপরই দুলারহাট থানা পুলিশ স্বামীর বাড়ি থেকে গৃহবধূকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেন। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূ তানিয়া নীলকমল ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মো. আইয়ুব আলীর মেয়ে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তানিয়া জানান, আট মাস আগে আহাম্মদপুর ইউনিয়নের শাহাজাহান দেওয়ানের ছেলে নুরে আলমের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী নুরে আলমকে তার বাবা ব্যবসা করার জন্য এক লাখ ২০ হাজার টাকা দেন। বিয়ের ৮ মাসের মধ্যেই স্বামী নুরে আলম, শাশুড়ি ফিরোজা ও দেবর বাবুল ফের আরও ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। বাবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা এনে দিতে অস্বীকার করলে এ নিয়ে তাদের দম্পত্য কলহ শুরু হয়। গত বুধবার তার বাবা বোন ও ভাবিকে দিয়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে তার স্বামীর বাড়িতে একটি খাসি ছাগল পাঠান। এতে মন ভরেনি স্বামী ও শ্বশুরের পরিবারের সদস্যদের। স্বামী ও শ্বশুর পরিবারের সদস্যদের দাবি করা ৫০ হাজার টাকা দেয়নি এ নিয়ে ফের বিরোধ সৃষ্টি হয়। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। যৌতুকের টাকা নিয়ে তর্কের জের ধরে স্বামী-শাশুড়ি ও দেবর তাকে হাত-পা বেঁধে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। এ সময় তার বোন ও ভাবি তাকে মারধরের হাত থেকে রক্ষা করতে এলে তাদেরও মারধর করে স্বামী, দেবর ও শাশুড়ি।
এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে ওই দিন দুলারহাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। পুলিশ স্বামীর বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
দুলারহাট থানার ওসি মোরাদ হোসেন জানান, এ ঘটনায় গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।