হজের প্রস্তুতিতে যেসব কাজ করতে হবে
জিলহজ মাসের ৯ তারিখ আরাফার ময়দানে অনুষ্ঠিত হয় মহাসম্মিলন হজ। বৈধ অর্থের মালিকদের ওপর এ মহাসম্মিলনে উপস্থিত হওয়া ফরজ। জাবালে রহমতের পাদদেশে ঐতিহাসিক আরাফাতের ময়দানে এ মহাসম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়। এ জন্যই হাদিসে বলা হয়েছে, আরাফায় উপস্থিত হওয়াই হজ।
হজে রওয়ানা হওয়ার আগে হজ পালনকারীদের শারীরিক ও মানসিক বিশেষ কিছু প্রস্তুতি গ্রহণ করা আবশ্যক। আবার এমন কিছু অভ্যাস রয়েছে যেগুলো পরিত্যাগ করাও জরুরি। প্রস্তুতির বিষয়গুলো কী?
হজে যাওয়ার আগে যে প্রস্তুতি জরুরি
১. হজের প্রয়োজনীয় খরচ বৈধ অর্থের উৎস থেকে করা।
২. হজের সময় প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র কেনা-কাটা করা।
৩. পাসপোর্ট, টাকা-পয়সা ও জরুরি কাপজপত্র রাখার ব্যাগ এবং বেল্ট সংগ্রহ করা।
৪. আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছে দায়-দাবি মুক্ত হওয়া জরুরি।
৫. অসিয়ত থাকলে তা সম্পাদন করা।
৬. অবশ্যই হজে যাওয়ার আগে ঋণ পরিশোধ করা।
৭. হজের আগেই দুনিয়ার কাজ-কারবার থেকে পেরশানিমুক্ত হওয়া।
৮. ইবাদত-বন্দেগির মন-মানসিকতা তৈরির অভ্যাগ গড়ে তোলা।
৯. হজের নিয়ম-কানুনগুলো ভালোভাবে জেনে নেয়া।
১০. কোরআন তেলাওয়াত সহিহ না হলে, তা গুরুত্বসহকারে শিখে নেয়া।
১১. সব ধরনের লোভ-লালসা ত্যাগ করা।
১২. সব ধরনের খারাপ কাজ থেকে বিরত নেওয়া।
১৩. বিলাসিতা, পদমর্যাদা, গর্ব ও অহংকার ত্যাগ করা।
১৪. ইবাদত-বন্দেগির প্রতিটি মুহূর্তে তাড়াহুড়া না করে বিনয়ী হওয়া।
১৫. দুনিয়ার সব ধরনের অন্যায় কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা।
মনে রাখতে হবে
হজ মহান আল্লাহ তাআলার এক মহানির্দশন। এ ইবাদত পালনে যেমন অর্থের প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা ও পরিশুদ্ধতার। গুনাহমুক্ত মন নিয়ে হজের প্রস্তুতি গ্রহণ করা ঈমানের একান্ত দাবি।
বিশেষ করে –
হজের তালবিয়া সহিহ করে শিখে নেয়ার পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ দোয়াগুলোও শিখে নেয়া।
তালবিয়া
لَبَّيْكَ ا للّهُمَّ لَبَّيْكَ – لَبَّيْكَ لاَ شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ – اِنَّ الْحَمدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ – لاَ شَرِيْكَ لَكَ
তালবিয়ার উচ্চারণ : ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক, লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান্ নিমাতা লাকা ওয়াল মুলক্, লা শারিকা লাক।’
তালবিয়ার অর্থ : ‘আমি হাজির হে আল্লাহ! আমি উপস্থিত! আপনার ডাকে সাড়া দিতে আমি হাজির। আপনার কোনো অংশীদার নেই। নিঃসন্দেহে সমস্ত প্রশংসা ও সম্পদরাজি আপনার এবং একচ্ছত্র আধিপত্য আপনার। আপনার কোনো অংশীদার নেই।’
সর্বোপরি নিজেকে হজের জন্য এভাবে তৈরি করা যে-
‘হজ হলো দুনিয়ার জীবনের শেষ সফর। তাই মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়েই বাইতুল্লায় যাত্রার প্রস্তুতি গ্রহণ করা।’
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে হজের জন্য শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক প্রস্তুতি গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।