সালিশে চুলের মুঠি ধরে মহিলাকে প্রকাশ্যে মারধর
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার উত্তর ত্রিশ গ্রামের সুরুজ মিয়া মার্কেটে ইউপি চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে সামাজিক বিচারে প্রকাশ্যে এক মহিলাকে চুলের মুঠি ধরে লাঠিপিটা করার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন ও তার সাঙ্গপাঙ্গদের বিরুদ্ধে ওই মহিলাকে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে। আহত মরিয়ম বেগম একই গ্রামের শরিফুল ইসলামের স্ত্রী।
সিসিটিভি’র ফুটেজে দেখা গেছে, ১৫নং নবীপুর ইউপি’র চেয়ারম্যান ভিপি জাকির হোসেনের উপস্থিতিতে চেয়ারম্যানের ভাতিজা ইউপি সদস্য দেলোয়ার হোসেন ও তারই ছোট ভাই সুমনসহ ১০/১২জন ওই সালিশে এক মহিলার চুলের মুঠি ধরে কিল ঘুষি, লাথি মুড়া দিচ্ছে এবং লাঠিসোটা দিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে পিটাচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইজবুক, হোয়ার্সআপ, টুইটারে ভাইরাল হলে সুশীল সমাজ কমেন্টে তার নিন্দা ও শাস্তি দাবি করেছে। আবার কেউ কেউ ঘটনাটি কোথায় জানতে চেয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ফুটেজে কাউকে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়নি। সবাই শুধু মারছে। পরে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা দেবিদ্ধার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
মুরাদনগর থানায় দায়ের করা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার (২৭ জুন) রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টায় উত্তর ত্রিশ গ্রামের মরহুম সুরুজ মিয়া মার্কেটে নবীপুর পশ্চিম ইউপি চেয়ারম্যান ভিপি জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে একটি সালিশ বসে। ওই সালিশে উত্তর ত্রিশ গ্রামের মৃত শাহআলম মেম্বারের ছেলে দেলোয়ার হোসেন মেম্বারের নেতৃত্বে সুমন মিয়া, আলাউদ্দিন, সুদন মিয়ার ছেলে হাবিব, রাসেল, ইউনুস মিয়া ছেলে জামাল মিয়া, মৃত লতিফ মিয়ার ছেলে আলমগীর, হাসু মিয়া ছেলে হেলাল, মৃত তবদুল হোসেনের ছেলে রনিসহ আরো ৫/৬জন সালিশের কিছু বুঝে উঠার আগেই পিছন থেকে ওই মহিলার চুলের মুঠি ধরে অতর্কিত হামলা চালায় এবং অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করতে থাকে।
দেবিদ্বার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত মরিয়ম বেগম বলেন, ওরা আমার এক একর জমি দখল করে নিয়েছে। আমি ১৯৯১ সাল থেকে কুমিল্লার বিজ্ঞ আদালতে ওই জমির বাটোয়ারা মামলা চালিয়ে যাচ্ছি। ওরা আপোষ মিমাংশা করবে বলে আমাকে বাড়ী থেকে ডেকে এনে উত্তর ত্রিশ গ্রামের সুরুজ মিয়া মার্কেটে নিয়ে মারধর করে।
আহত মরিয়ম বেগমের স্বামী শরিফুল ইসলাম বলেন, দেলোয়ার হোসেন মেম্বার আমার জমি দখল করে অন্যত্র বিক্রি করে দিয়েছে। জমির মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আপোষ মিমাংশার নামে আমার স্ত্রীকে ডেকে নিয়ে ১০/১২ জন মিলে মারধর ও লঞ্ছিত করেছে। ওরা আমার স্ত্রীকে প্রাণে মেরে ফেলার পরিকল্পনা ছিল। আমরা দূর্বল ও অসহায় প্রকৃতির লোক। এ ভাবে তিলে তিলে না মেরে পরিবারের সকলকে কলেজ মাঠে নিয়ে ব্রাশ ফায়ার করে দিলেও ভাল ছিল, বলেই হাউমাউ করে কাদতে শুরু করেন তিনি।