ঢাবিতে হলের দরজা ভেঙ্গে শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জগন্নাথ হলের এক শিক্ষার্থীকে রুমে ঢুকে বেধড়ক মারধরের পর হল থেকে বের করে দিয়েছে ওই হলের এক ছাত্রলীগ নেতা। ভবিষ্যতে ওই শিক্ষার্থী হলে ঢুকলে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়ার অভিযোগও উঠেছে ওই নেতার বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের ৭০১২ রুমে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলের বাইরে আছেন।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জগন্নাথ হলের প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগপত্রে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী উল্লেখ করেন, ২৫ থেকে ৩০ জন তার ওপর হামলা করে। এর মধ্যে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করেছেন তিনি।
অভিযুক্তরা হলেন ভূতত্ত্ব বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের সত্যজিৎ দেবনাথ, একই শিক্ষাবর্ষের বাঁধন (বিভাগ জানা যায়নি), ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের সবুজ কুমার, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের শুভ সাহা, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের রাজিব বিশ্বাস, একই শিক্ষাবর্ষের যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের গণেশ ঘোষ, মৎস্য বিজ্ঞান বিভাগের অমিত দে ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের রিভু রিদম।
এছাড়াও লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্বাগতম বাড়ৈ, অর্থনীতি বিভাগের দীপ্ত রায়, উর্দু বিভাগের সবুজ শীল, যোগাযোগ বৈকল্য বিভাগের অভিষেক ভাদুরী, পাপন বর্মন (বিভাগ জানা যায়নি), ইতিহাস বিভাগের সৌরভ সাহা, একই বিভাগের জয় দাস।
২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অপূর্ব দাস, একই বিভাগের পুষ্পেন্দু মণ্ডল, ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স বিভাগের অমৃত মণ্ডল ও ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের প্রিতম আনন্দ। সবাই জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতণু বর্মণের অনুসারী। অতনু কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচর্যের অনুসারী।
ছাত্রলীগ নেতা সত্যজিৎ দেবনাথ পূর্বের হল কমিটিতে জগন্নাথ হল শাখা ছাত্রলীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন এবং ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম উৎসব রায়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি এন্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের ৭০১২ নম্বার রুমে।
ভুক্তভোগী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুরে খাওয়ার পর তার নিজ রুমে (সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ভবনের ৭০১২) বিশ্রাম নিচ্ছিলেন উৎসব রায়। এমন সময় অভিযুক্ত (সত্যজিৎ)-এর নেতৃত্বে ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল তার রুমের দরজার ছিটকিনি ভেঙে ভিতরে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায়। তারা রড,স্ট্যাম্প দিয়ে তাকে বেধড়ক মারপিট করে। তার মাথায়, কানে, পিঠে মারাত্মকভাবে আঘাত করে। এ সময় উৎসব নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। একপর্যায়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে তাকে হুমকি দেয়া হয়,যাতে আর কোনদিন হলে প্রবেশ না করে। হামলার পর ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টার থেকে চিকিৎসা নেন।