সালাম না দেয়ায় ঢাবি ছাত্রকে ছাত্রলীগ কর্মীর থাপ্পড়-লাথি
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক শিক্ষার্থীকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে মাস্টারদা’ সূর্যসেন হলের ২৪৯ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে।
নির্যাতনের শিকার ওই শিক্ষার্থীর নাম সাজ্জাদুল হক সাঈদি। তিনি ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, হলের কক্ষে বসে অনলাইনে টিউশনের ক্লাস নিচ্ছিলেন সাজ্জাদুল হক। এ সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী তার কক্ষে যান। ক্লাস চলছিল বলে ওই ছাত্রলীগ কর্মীদের সালাম দিয়ে তাদের সাথে করমর্দন করতে দেরি হয় তার। এই ‘অপরাধে’ ওই ছাত্রকে থাপ্পড়, কিল-ঘুষি ও লাথি মেরেছেন এক ছাত্রলীগ কর্মী। এ ঘটনায় আজ বুধবার হল প্রাধ্যক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্র।
সাজ্জাদুলকে মারধরে অভিযুক্ত মানিকুর রহমান ওরফে মানিক রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের (২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ) ছাত্র। তিনি হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে ভুক্তভোগী সাজ্জাদুল হক বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার রাতে আমি আমার কক্ষে (২৪৯ নম্বর) অনলাইনে একটি টিউশনের ক্লাস নিচ্ছিলাম। এর মধ্যে মানিকুর রহমানসহ চতুর্থ বর্ষের কয়েকজন ছাত্র আমাদের কক্ষে আসেন। তারা আমাকে ডাকেন। তারা চাচ্ছিলেন, আমি উঠে গিয়ে তাদের সালাম দেই এবং হ্যান্ডশেক করি। কিন্তু অনলাইনে ক্লাস চলায় আমি তাদের বলি যে ক্লাসটা শেষ করে আমি উঠছি। ক্লাস চলার সময়ই মানিকুর আমাকে কলার ধরে টান দেন। একটু পরে ক্লাস শেষ করে খাটের সামনে যেতে না যেতেই মানিকুর আমার কানে ও মুখে সজোরে থাপ্পড় দেন। তিনি আমাকে অকথ্য গালিগালাজ করতে থাকেন। মানিকুর আমাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন এবং একপর্যায়ে জোরে লাথিও দেন।’
এ ঘটনায় আজ বুধবার সকালে সূর্যসেন হলের প্রাধ্যক্ষ মোঃ মকবুল হোসেন ভূঁইয়া বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানান সাজ্জাদুল হক। তিনি বলেন, আমি আমার সঙ্গে ঘটে যাওয়া অন্যায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের বিচার চাই। আজ (বুধবার) সকালে হল কার্যালয়ে গিয়ে একজন আবাসিক শিক্ষকের কাছে প্রাধ্যক্ষ বরাবর লেখা অভিযোগটি জমা দিয়েছি। তিনি বলেছেন, ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে সূর্যসেন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিয়াম রহমান বলেছেন, সাজ্জাদুলকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত মানিকুর রহমান ‘দুঃখপ্রকাশ’ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘যে ঘটনাটি ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এ রকমটা আগে কখনো হয়নি। কথা-কাটাকাটি থেকে থাপ্পড় দেয়ার ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর মানিকুর রহমান দুঃখ প্রকাশও করেছেন। দু’জনের সঙ্গে (অভিযোগকারী ও অভিযুক্ত) কথা বলে আমরা বিষয়টি ঠিক করে নেব।’