থামছে না কুরিয়ারে মাদক পাচার

0

চলতি মাসে কক্সবাজার থেকে ঢাকার ঠিকানায় পাঠানো হয় পানি উত্তোলনের সাবমারসিবল পাইপ। আপাত দৃশ্যে এটি পাইপ মনে হলেও এর ভেতরে করে পাঠানো হয়েছিল ইয়াবা। এসএ পরিবহনের যাত্রাবাড়ী থেকে যন্ত্রাংশটি সংগ্রহ করেন চার যুবক। খবর পেয়ে আগে থেকে ওত পেতে ছিল গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। এরপর সাবমারসিবল পাইপের বিভিন্ন অংশ আলাদা করে তল্লাশি করলে মেলে ১১ হাজার পিস ইয়াবা। চালানটি তিনভাগ হয়ে মুন্সীগঞ্জ, পাবনা, ও বাগেরহাটে পাঠানোর পরিকল্পনা ছিল। অভিনব কৌশলে পাইপের ভেতরে সাজানো ছিল ইয়াবা। বাইরে থেকে বোঝার কোনো উপায় ছিল না ভেতরে কি আছে। দেশে এই প্রথম সাবমারসিবল পাইপের মধ্যে দিয়ে ইয়াবা চোরাচালান জব্দ করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। এখন হালকা যন্ত্রের মধ্যেই ইয়াবা ঢুকিয়ে পরিবহনের প্রবণতা বেড়েছে।

স্ক্যানিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় চোরাচালানের জন্য কুরিয়ার সার্ভিসকে বেছে নিচ্ছে মাদক কারবারিরা। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিতে নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে মাদক ব্যবসায়ীরা। এই ঘটনায় চার মাদক কারবারিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। শুধু সাবমারসিবল পাইপ নয়, কমলা লেবুসহ সুবিধা অনুযায়ী বিভিন্ন পণ্যের প্যাকেটে ভরে চোরাচালান হচ্ছে ইয়াবা।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, মাদক বহন করার জন্য ঢাকাগামী অনেক পরিবহনের হেলপার, লাইনম্যানরা গাড়ির ইঞ্জিন, সাউন্ড বক্স, এসি, ফ্যানসহ যাবতীয় স্থানে লুকিয়ে নিয়ে আসে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে যতগুলো কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি আছে তারা ইন্টারনাল কোনো স্ক্যানিং মেশিন ব্যবহার করে না। সেই সুযোগটি নিয়েই এ সকল চক্র বিভিন্ন জিনিসের মধ্যে মাদক পাচার করছে।

কুরিয়ার সার্ভিসেস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (সিএসএবি) সভাপতি হাফিজুর রহমান পুলক বলেন, দেশে ১৭০টির মতো এসোসিয়েশনভুক্ত কুরিয়ার সার্ভিস আছে যারা সেবা দিচ্ছে। এখান থেকে দেশের অসংখ্য মানুষ সেবা গ্রহণ করছে। কুরিয়ারের মাধ্যমে সারা দেশে পণ্য পাঠিয়ে অনেক বেকার যুবক-যুবতী ব্যবসা করে সফল হচ্ছে। এরই মধ্যে কিছু চোরাকারবারিরা দিন দিন এমন কৌশল অবলম্বন করছে তাতে মাদকদ্রব্য পণ্যের সঙ্গে চলে আসছে। এটি কখনো কখনো আমাদের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে। দুই একজন কুরিয়ার কর্মীর ভুলেও চলে আসে। কারবারিদের পাঠানোর সিস্টেম পরিবর্তন বোঝা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। এটি নির্মূল করার জন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে এবং কুরিয়ারের কর্মীদেরও সৎ এবং সচেতন থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, স্ক্যানার মেশিনের ব্যাপারে আমরা সরকারের কাছে আবেদন করেছিলাম। এটা যাতে একটা প্রজেক্ট করে দেশের এবং মানুষের স্বার্থে যেন স্ক্যানারগুলো বড় বড় কুরিয়ারগুলোকে দেয়া হয়। এবং ছোট ছোট কুরিয়ার সার্ভিসগুলোকে একটি গ্রুপ করে একটা স্ক্যানার দ্বারা চেক করিয়ে পণ্যগুলো পাঠানোর সুযোগ পায়। কিন্তু সেটা এখনো আমরা সফল হতে পারিনি। এ সকল বিষয়ে আলোচনা চলছে। কুরিয়ার সার্ভিসগুলো শুধু টাকা আয়ের জন্য পণ্য না পাঠিয়ে চেকের বিষয়ে আরও তৎপর হতে হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com