নবিজী (সা.) যে ৪ অবস্থা থেকে আশ্রয় চাইতেন
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এই শব্দগুলো দ্বারা (৪ অবস্থা থেকে বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহর কাছে) আশ্রয় চাইতেন। তিনি বলতেন-
اللَّهُمَّ إنِّي أعُوذُ بكَ مِن فِتْنَةِ النَّارِ وعَذابِ النَّارِ، وَ مِنْ شَرِّ الغِنَى وَالْفَقر
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন ফিতনাতিন নারি ওয়া আজাবিন নারি ওয়া মিন শাররিল গানিয়্যি ওয়াল ফাকর।‘
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমি জাহান্নামের ফেতনা, জাহান্নামের শাস্তি এবং সম্পদ ও দারিদ্রতার ফেতনা থেকে সুরক্ষা চাই।’
হাদিসের শিক্ষা ও নির্দেশনা
আল্লাহর মনোনীত নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চারটি বস্তু হতে পানাহ চাইতেন। তিনি বলতেন-
১. ‘হে আল্লাহ! তোমার কাছে আমি জাহান্নামের ফেতনা থেকে সুরক্ষা চাই।’
অর্থাৎ এমন (কাজের) ফেতনা থেকে মুক্তি চাই; যা জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আবার জাহান্নামের এ ফেতনা দ্বারা জাহান্নামের দারোগার ধমকের সুরে প্রশ্নও হতে পারে। কেননা আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে সে সতর্কবাণীও ঘোষণা করেছিলেন এভাবে-
تَکَادُ تَمَیَّزُ مِنَ الۡغَیۡظِ ؕ کُلَّمَاۤ اُلۡقِیَ فِیۡهَا فَوۡجٌ سَاَلَهُمۡ خَزَنَتُهَاۤ اَلَمۡ یَاۡتِکُمۡ نَذِیۡرٌ
‘রাগে জাহান্নাম যেন ফেটে পড়বে, যখনই তাতে কোনো দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তখনই তাদেরকে তার রক্ষীরা জিজ্ঞাসা করবে, ‘তোমাদের কাছে কি কোনো সতর্ককারী আসেনি?’ (সুরা মুলক : আয়াত ৮)
২. ‘জাহান্নামের আজাব/শাস্তি থেকে পানাহ চাই।
অর্থাৎ আমি জাহান্নামী হওয়া থেকে তোমার কাছে পানাহ চাই। জাহান্নামী কাফিররাই হবে, কারণ আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী মুমিনগণকে সংশোধন করা হবে; আগুন দিয়ে পবিত্র করা হবে কিন্তু আগুনের দ্বারা শাস্তি দেওয়া হবে না।
৩. ’আর সম্পদের ফেতনা থেকে আশ্রয় চাই।’
অর্থাৎ সম্পদের অহমিকা, সীমালঙ্ঘন এবং হারাম পথে সম্পদ উপার্জন ও হারাম পথে সম্পদ ব্যয় এবং ধন-সম্পদ ও মর্যাদার কারণে সৃষ্ট অহংকার থেকে পানাহ চাই।
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পদের ফেতনা থেকে পানাহ চেয়েছেন। অর্থাৎ অবৈধভাবে সম্পদ সংগ্রহ করা, সম্পদের প্রতি অনুচিত মহব্বত ও ওয়াজিব খরচ ও হক থেকে বিরত থাকা থেকে পানাহ চেয়েছেন।
৪. ‘দারিদ্রতার ফেতনা থেকেও পানাহ চাই।’
অর্থাৎ ধনীদেরকে হিংসা করা, তাদের সম্পদের প্রতি লোভ করা কিংবা তাদের সামনে নীচু হওয়া থেকে পানাহ চাই, যা ব্যক্তির সম্মান ও ধর্মকে বিনষ্ট করে এবং তা আল্লাহর বণ্টনে সন্তুষ্ট না হওয়ার প্রমাণ; যার পরিণতি ভালো নয়।
তাছাড়া দারিদ্রতার ফেতনা দ্বারা ধৈর্যহীনতা ও পরহেযগারী না থাকা বুঝায়। কারণ, অভাবের কারণে ব্যক্তি এমন জায়গায় উপনীত হয়, যেখানে যাওয়া তার রুচি ও ধর্মের পরিপন্থী। আর তার কারণে হারামে লিপ্ত হওয়াকেও কোনো পরোয়া করে না।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, উল্লেখিত হাদিসের ওপর আমল করে এ ৪ জিনিসের অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া। আল্লাহ তাআলাই বান্দাকে এ জিনিসগুলো থেকে আশ্রয় দিতে পারেন।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এ হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। সব সময় আল্লাহর কাছে এ জিনিসগুলো থেকে আশ্রয় চাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।