অপহরণের পর ১৫ দিন আটকে রেখে মাদরাসাছাত্রীকে গণধর্ষণ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় বিয়েতে রাজি না হওয়ায় মাদরাসার সপ্তম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে অপহরণ করে ১৫ দিন আটকে রেখে চারজন মিলে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। সেখান থেকে পালিয়ে বাড়িতে এসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে মেয়েটি। বর্তমানে ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে চিকিৎসাধীন রয়েছে সে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের ওই কিশোরী গ্রামের দাখিল মাদরাসার ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী। গত ২৪ এপ্রিল সন্ধ্যার সময় খালার বাড়িতে ইফতার করে ফেরার সময় কালিকাপুর মাঝাপাড়া আজিজার রহমানের বাশঁঝাড়ের কাছে পৌঁছলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা একই ইউনিয়নের বড়বাড়ী বালাপাড়া গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে মানিক মিয়া ও জলঢাকা উপজেলার টেংগনমারী খুটামারা দীঘলটারী গ্রামের কামরুল ইসলামের ছেলে জীবন মেয়েটির ওপর হামলে পড়ে। তারা তাকে ভুট্টাক্ষেতে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে সেখান থেকে মেয়েটির চোখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে একটি ঘরের মধ্যে আটকে রেখে একজন অজ্ঞাত লোকসহ সারারাত তাকে আবারো ধর্ষণ করে। পরদিন ওই ছাত্রীর দূরসম্পর্কের এক বোন দুলাভাই তারজিনা ও রশিদুলের সহযোগিতায় তাকে রংপুরের সুঠিবাড়িতে একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে মানিক, জীবন ও দুলাভাই দিনের পর দিন ধর্ষণ করে।
গত রোববার পালিয়ে এসে বাড়িতে ফোন দিলে পুটিমারী ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বার আহাদ আলী তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ মোড় থেকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছান। বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কিশোরগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। জরুরী বিভাগের ডাক্তার গুরুতর শারীরিক অবস্থার কারণে তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে রেফার করেন।
ধর্ষিতার বাবা বলেন, আমি সাত বছর থেকে প্যারালাইজড হয়ে আছি। একা চলতে পারি না। মেয়ের কাছে ঘটনা শুনে কান্নায় আমার বুক ফেটে যাচ্ছে।
ভুক্তভোগী মেয়েটি জানায়, রংপুর সুঠিবাড়িতে মাহমুদুল নামে একটি লোকের বাড়িতে আমাকে আটকে রেখে নরপশুরা দিনের পর দিন খুবলে খেয়েছে। বাড়িওয়ালার হাতে-পায়ে ধরে আমি কোনো রকমে পালিয়ে এসে এখন পর্যন্ত বেঁচে আছি। ঘটনার প্রাথমিক পর্যায়ে মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে মেয়ের বাবা জড়িত মানিক মিয়া ও জীবন মিয়াকে আসামি করে ও আরো তিনজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রাজীব কুমার রায় বলেন, অপহরণের অভিযোগ পেয়েছি কিন্তু এখন পর্যন্ত ধর্ষণের অভিযোগ পাইনি। অপহরণের বিষয়ে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) সাক্ষ্য দিতে গেছে। তার কাছ থেকে জানার পর বলতে পারব।