পণ্য পরিবহণে চাঁদাবাজি: ভোক্তা ও কৃষকের স্বার্থ রক্ষার পদক্ষেপ নিন

0

নিত্যপণ্য, বিশেষত কৃষিপণ্যের উচ্চমূল্যের রহস্য ভেদ করা গেছে। বস্তুত এক দুষ্টচক্রের কবলে পড়ে পণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে এবং এতে ঠকছেন উৎপাদনকারী কৃষক ও রাজধানীর খুচরা বাজারের সাধারণ ক্রেতা। এজন্য মূলত দায়ী পণ্য পরিবহণে পথে পথে চাঁদাবাজি। উদাহরণ হিসাবে বলা যেতে পারে, রাজশাহীর বানেশ্বর বাজার থেকে রাজধানীর কাওরানবাজার পর্যন্ত পণ্য পরিবহণে ট্রাকভাড়া ১৭ হাজার টাকা। কিন্তু দেখা গেছে, রাজশাহীর আমচত্বর, বেলপুকুরিয়া, নাটোর বাইপাস, এলেঙ্গা বাইপাস, টাঙ্গাইল বাইপাস, কাওরানবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে চাঁদা দিতে হয় দেড় থেকে দুই হাজার টাকা। বলা বাহুল্য, এই বাড়তি টাকার চাপ শেষ পর্যন্ত সহ্য করতে হচ্ছে ভোক্তা শ্রেণিকে। ওদিকে দেখা গেছে, উৎপাদনকারী থেকে ভোক্তা পর্যায়ে পণ্য আসতে বেশ কয়েকটি ধাপ পেরোতে হয়। এগুলো হচ্ছে-স্থানীয় ব্যবসায়ী, স্থানীয় মজুতদার, স্থানীয় খুচরা বাজার, বেপারি, পাইকারি ব্যবসায়ী, কেন্দ্রীয় বাজার বা টার্মিনাল, আড়তদার, প্রক্রিয়াজাতকারী, খুচরা বাজার ইত্যাদি। প্রতিটি ধাপেই পণ্যের মূল্য বাড়ে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নামে-বেনামে চাঁদাবাজি। মহাসড়কে, টার্মিনালে, ফেরিঘাটে, নগরীর প্রবেশপথে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।

পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি নিয়মিত ঘটনা হলেও বর্তমান সময়ে তা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। অথচ হাইওয়ে পুলিশ এই সত্য মানতে চাইছে না। হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপারেশনস) বলেছেন, ঢালাওভাবে হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির যে অভিযোগ আনা হচ্ছে, তা সত্য নয়। তিনি আরও বলেন, সড়কে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে আমরা শক্ত অবস্থানে আছি, যেখানেই এ ধরনের ঘটনা ঘটুক না কেন, আমাদের জানালে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। আমাদের কথা হলো, মহাসড়কে চাঁদাবাজি তো নতুন কিছু নয় এবং পুলিশের তা অজানা থাকার কথা নয়। এতকাল পর যদি তাদের চাঁদাবাজির খবর জানাতে হয়, তাহলে তা হাস্যকর বৈকি।

আসলে এটাই সত্য যে, নানা ধরনের চাঁদাবাজের তালিকায় পুলিশের একাংশও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, পুলিশ নিজেই যদি চাঁদা আদায় করে, তাহলে অন্য চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে তারা অবস্থান নেবে কীভাবে? আমাদের শেষ কথা হলো, উৎপাদক অর্থাৎ কৃষক সমাজকে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য পেতে হবে যেমন, তেমনি রাজধানীর সাধারণ ভোক্তা শ্রেণিও যাতে যৌক্তিক মূল্যে তা ক্রয় করতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে। মধ্যস্বত্বভোগী বা চাঁদাবাজদের কারণে পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বাড়বে, এটা হতে পারে ন। এ ব্যাপারে সরকারের উচ্চ মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আমরা।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com