ঠিকাদারের দখলে স্কুলমাঠ, দুর্ভোগে শিক্ষার্থীরা

0

বিদ্যালয়ের মাঠে পাথর, বিটুমিনসহ নানা নির্মাণ সামগ্রী রেখে চলছে রাস্তার কাজ। সেখানে জ্বালানো হচ্ছে বিটুমিন, বড় মেশিন রেখে মোশানো হচ্ছে নির্মাণ সামগ্রী। এতে বিকট শব্দ ও ধুলায় ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান, স্কুল মাঠে যেতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। ঘটনা ঝিনাইদহ সদরের রাজধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

অভিযোগ রয়েছে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখানোর পাশাপাশি শিক্ষকদের নানাভাবে হয়রানি করছে ঠিকাদারের লোকজন। প্রশাসন ও থানা পুলিশের নিষেধের পরও নিয়মিতই মেশিন দিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছেন ঠিকাদার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলা সদরের রাজধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখোর থাকলেও এখন আর সেটির দেখা মিলছে না। বর্তমানে অনেক শিক্ষার্থীই অনুপস্থিত থাকছে স্কুলে। বিকট শব্দে থাকা যাচ্ছে না সেখানে। ধুলায় ছেয়ে যাচ্ছে স্কুলসহ আশপাশের এলাকা।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে শহরের পবহাটি এলাকার ঠিকাদার ফিরোজ কবির রাস্তার ঠিকাদারি কাজের কিছু পাথর রাখেন বিদ্যালয় মাঠে। কয়েকদিন পর শিক্ষকরা সেখানে মালামাল রাখতে নিষেধ করেন। সেই নিষেধাজ্ঞা না শুনে মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে ছোট-বড় মিলিয়ে ট্রাকে করে ক্রমাগত পাথর আনতে থাকেন। স্কুলের প্রবেশ মুখেই পিচ (বিটুমিন) রেখে জ্বালাতে শুরু করেন। এরপর ২২ তারিখ থেকে বড় মিক্সার মেশিনে কাজ করছেন।

রাজধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী লাবনী আক্তার জানায়, আমাদের স্কুলে একটা গাড়ি আছে, সেখানে খুব শব্দ আর প্রচুর ধুলা হয়। মাঠে যেতে পারি না। খেলা করতে পারি না।

৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিংকি খাতুন বলে, ধুলো বালির জন্য ক্লাসরুমে বসা যায় না। আমরা মাঠে গেলে ওরা বকা দেয়। ধুলোয় টিফিনের খাবার খাওয়া যায় না।

স্থানীয় বাসিন্দা কাশেম মিয়া জানান, ওরা স্কুলের মাঠে মালামাল নিয়ে এসে যে অত্যাচার শুরু করেছে তাতে আমাদের বাড়ি-ঘরে থাকার কায়দা নেই। স্কুলে ছেলে-মেয়েরা চলাচল করতে পারে না। পরিস্থিতি খুবই খারাপ। এদেরকে এখান থেকে সরিয়ে দেওয়া দরকার।

রাজধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শারমিন আক্তার জানান, বিকট শব্দে ঠিকমতো পাঠদান করা যায় না। আমরা কী বলছি তা শিক্ষার্থীরা শুনতে পায় না। তাদের মনোযোগও পড়াশুনার দিকে থাকে না। আবার ধুলায় ক্লাসরুমে তো সমস্যা হয়ই। মাঠেও যাওয়া যাচ্ছে না। খুবই সমস্যার মধ্যে সময় যাচ্ছে আমাদের।

প্রধান শিক্ষক শাহিনা আফরোজ জানান, ঠিকাদার যখন কাজ শুরু করেন তখন নিষেধ করেছিলাম। তারা ভুল স্বীকার করে বলেছিল এখানে আর কাজ করবেন না। কিন্তু ঠিক তারপরই আবার মালামাল এনে স্কুলমাঠে রাখেন আর পাশেই বড় মেশিনে তা মিক্সড করে ও বিটুমিন জ্বালায়। কোনোভাবেই তারা আমাদের কথা শুনছে না। বিষয়টি সামাধানে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

প্রধান শিক্ষক আরো জানান, ঠিকাদারের লোকজন আমাদের কোনো কথাই শুনছে না, বরং নানাভাবে হয়রারি করছে। এলাকায় ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে আমরা নাকি তাদের থেকে সুবিধা নিয়ে স্কুলমাঠে কাজ করতে অনুমতি দিয়েছি। এটা এখন আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

 

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com