সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছিল সিনহাকে
সেনাবাহিনীর (অব.) মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকত পরস্পর যোগসাজশে এ হত্যাকাণ্ডটি ঘটায় এবং হত্যাকাণ্ডের পর আসামিরা আলামত নষ্ট করে ফেলে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।
রোববার (৯ জানুয়ারি) কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে মেজর সিনহা হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এ তথ্য উপস্থাপন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, আদালতে মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের তথ্যপ্রমাণ দাখিল করা হয়েছে। আসামি প্রদীপ ও লিয়কত সুপরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার আগে বাহারছড়া পুলিশ ক্যাম্প এবং টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকত ডায়েরি করেন। ডায়েরিতে তারা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্হলে আসার কারণ বর্ণনা দিয়েছিলেন।
মামলার যুক্তিতর্ক শুরুর দিন রোববার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা ও বাদীপক্ষের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
রোববার সকাল সোয়া ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলে মামলাটির যুক্তিতর্ক।
আদালত থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম সাংবাদিকদের জানান, মেজর সিনহা হত্যা মামলার অভিযুক্ত আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ তথ্য গোপন করে সম্পূর্ণ প্রতারণার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পিপিএম ও বিপিএম হাতিয়ে নিয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাকরিকালীন বিভিন্ন অভিযোগ ছিল।
অপরদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত জানান, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা তিনজন সাক্ষী ও আসামিদের জেরা ও সাক্ষ্য প্রমাণে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এর আগে সকাল সোয়া ১০টার দিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলমের যুক্তিতর্কের মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।
সকাল ৯টার দিকে এ মামলার আসামি ওসি প্রদীপসহ এ মামলার ১৫ জনকে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, সর্বশেষ ৮ দফায় গত ৭ ডিসেম্বর ৮৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন, জেরা শেষ হয়েছে। মোট ৬৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হওয়ার পর কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় আসামিদের বক্তব্য গ্রহণ করেছিল আদালত। একইঙ্গে ৯ জানুয়ারি থেকে আগামী ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তিতর্কের জন্য দিন ধার্য করেছিল আদালত।
গত বছরের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।