লাখ টাকা না দেওয়ায় পুলিশের নির্যাতনে হিমাংশুর মৃত্যু, দাবি বাবার

0

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া হিমাশু বর্মণ (৩৫) ও তার বাবার কাছে পুলিশ এক লাখ টাকা দাবি করেছিল বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার। পরিবারের অভিযোগ, টাকা দিতে না পারায় তাকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছে পুলিশ।

শনিবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে নিহত হিমাংশুর বাড়ি উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পুর্ব কাদমা গ্রামে গেলে তার বাবা বিশ্বেশ্বর বর্মণ এ অভিযোগ করেন।

নিহত হিমাংশুর বাবা বিশ্বেশ্বর বর্মণের ভাষ্যমতে, শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে ছেলেকে থানায় দেখতে গেলে পুলিশ তার কাছে এক লাখ টাকা দাবি করে। টাকা দিতে পারলে ছেলে ও নাতনি পিংকীকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। অন্যথায় তাদের জেলে পাঠানো হবে বলে হুমকি দেয় পুলিশ। থানা থেকে ফেরার আগে ওইদিন দুপুর দেড়টার দিকে হিমাংশুর সঙ্গে সর্বশেষ দেখা করেন বাবা বিশ্বেশ্বর। ওই সময় হিমাংশু তার বাবাকে বলেন, ‘বাবা, পুলিশ আমার কাছে এক লাখ টাকা চেয়েছে। টাকা দিলে ছেড়ে দেবে, না দিলে আমাকে ও আমার মেয়েকে জেলে পাঠিয়ে দেবে। কথাগুলো বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন বিশ্বেশ্বর বর্মণ।’

তবে টাকা চাওয়ার বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম। তিনি বলেন, ‘হিমাংশু থানার কক্ষে থাকা ওয়াই-ফাইয়ের তার গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।’

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, শুক্রবার সকালে হিমাংশুর স্ত্রী সাবিত্রী রানী নিজ বাড়িতে খুন হন বলে জানতে পারেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে হিমাংশুকে তার স্ত্রীর মরদেহের পাশে দেখতে পান। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাতীবান্ধা থানার ওসি এরশাদুল আলমসহ একদল পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। একপর্যায়ে ওই মরদেহসহ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হিমাংশু ও তার বড় মেয়ে পিংকীকে (১৩) থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

স্থানীয় সন্তোষ কুমার রায় বলেন, ‘আমরা ভালো সুস্থ মানুষকে পুলিশভ্যানে উঠিয়ে দিলাম। পরে বিকেলে শুনি তার মৃত্যু হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। প্রশাসনের ঘরে তার মৃত্যু হয়েছে শুনে আমরা হতবাক হয়ে গেছি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।’

শুক্রবার রাত ১১টায় হাতীবান্ধা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সামিউল আমিনের নির্দেশে হিমাংশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাটে পাঠায় পুলিশ। এর আগে রাত ৯টায় লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, থানার কক্ষে আত্মহত্যা করেন হিমাংশু।

হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. হিরন্ময় বর্মণ বলেন, শুক্রবার বিকেল ৪টা ৫ মিনিটে পুলিশ হিমাংশুকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসে। তার গলায় একটি দাগ রয়েছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com