নির্যাতনে গ্যারেজ মেকানিক আসাদের মৃত্যুর দাবি নাকচ র‌্যাবের

0

গাজীপুরের টঙ্গীতে নির্যাতনে গ্যারেজ মেকানিক আসাদের মৃত্যুর দাবি নাকচ করেছে র‌্যাব। র‌্যাবের দাবি মাদকবিরোধী অভিযানের সময় পালাতে গিয়ে র‌্যাব সদস্যদের সাথে ধস্তাধস্তিতে আসাদ আহত হয়ে হাসপাতালে মারা গেছে। তবে আসাদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, র‌্যাব সদস্যরা আসাদকে পিটিয়ে মেরেছে।

নিহত আসাদের পরিবারের সদস্যরা জানায়, আসাদের বিরুদ্ধে মাদক বিক্রির অভিযোগ সত্য নয়। তার বিরুদ্ধে থানায় বা এলাকায় মাদক বিক্রির কোনো রেকর্ড নেই। শনিবার বিকেলে আসাদ এরশাদ নগরের নিজ ঘরে র‌্যাবের নির্যাতনে গুরুতর আহত হন। ওই দিন রাতেই হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। গাড়ির গ্যারেজ মেকানিক আসাদ মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি থানার ভাসাইল গ্রামের মৃত আব্দুল হাইয়ের ছেলে। তিনি টঙ্গী পূর্ব থানাধীন এরশাদনগর ৫ নম্বর ব্লকে পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। এ বাসায়ই মাদকের সন্ধানে অভিযান চালায় র‌্যাব -১ এর সদস্যরা।

নিহত আসাদের পরিবারের সূত্রে জানা যায়, আসাদের এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। তারা লেখাপড়া করে। আসাদ কোনো অবৈধ কাজের সাথে জড়িত ছিল না। তাকে ফাঁসানো হয়েছে। মালিবাগ চৌধুরী পাড়ায় গাড়ির গ্যারেজ চালাতো। সেখান থেকে গাজীপুর মহানগরের গাছা বড়বাড়ি এসে নিজে গ্যারেজ দেয়। করোনার কারণে সেই গ্যারেজটিও বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে আসাদ বিভিন্ন স্থানে অস্থায়ী কাজ করে পরিবারের ভরন পোষণ করতো। আসাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের অভিমত ভালো। আসাদ নিহতের ঘটনায় নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীরা বিক্ষোভ করেছে। এ সময় তারা দোষী র‌্যাব সদস্যদের বিচারও দাবি করেন।

এদিকে থানায় র‌্যাবের দায়েরকৃত মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এরশাদনগর ৫ নম্বর ব্লকে অভিযানকালে দৌড়ে পালানোর সময় আসাদুল ইসলাম আসাদকে আটক করা হয়। এ সময় তার দেহ তল্লাশি চালিয়ে ৬ শ’ ৩ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, তার বাসায় আরো ৪ হাজার ৪ শ’ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট রয়েছে। আসাদকে নিয়ে বাসায় অভিযান চালানোর সময় আসাদ পালানোর চেষ্টা করলে র‌্যাব সদস্যদের সাথে তার ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে তার শোয়ার ঘরের খাট ও দেয়ালের সাথে ধাক্কা খেয়ে আহত হয় সে। পরে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার এমপি জেনারেল হাসপাতালে নেয়ার কিছুক্ষণ পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। ধস্তাধস্তিকালে র‌্যাব সদস্য সরোয়ার হোসেন ও হুমায়ুন কবিরও আহত হয়ে একই হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণ করে।

নিহত লাশের টঙ্গী থানার সুরতহাল প্রতিবেদনকারী এসআই সজল জানান, নিহতের ডান পায়ের হাঁটুর নিচে আঘাতের চিহ্ন ও বুকের বাম পাশে কালো দাগ ছিল। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর ১ নম্বর মামলা রেকর্ড হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক নুসরাত বলেন, হাসপাতালে আনার পূর্বেই আসাদের মৃত্যু হয়েছে।

জরুরি বিভাগে নুসরাতের ডিউটি পালার পরবর্তী দায়িত্বরত চিকিৎসক বদরুন্নেছা বলেন, আমি ডিউটিতে এসে হাসপাতালের খাতায় যা লেখা দেখলাম, তাতে লেখা আছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আসাদ মারা গেছেন।

নিহত আসাদের শ্যালক আলম জানান, মামলা করে আমাদের তো কোনো লাভ হবে না। যে চলে গেছে সে তো আর ফিরে আসবে না। আমরা এ নিয়ে আর ঝামেলায় জড়াতে চাই না।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com