স্বামীর হাত-পা ভেঙে দিলেন তমা মির্জা
গেল বছরের ৯ মার্চ পারিবারিক আয়োজনে ব্যবসায়ী পাত্র কানাডার টরেন্টো প্রবাসী হিশাম চিশতীর সঙ্গে ঢাকাই নায়িকা তমা মির্জার বাগদান হয়। বিয়ে হয় ৭ মে। সবকিছুই যখন ঠিকঠাক চলছিল, তখন হঠাৎই মধুর দাম্পত্য জীবনে ছেদ পড়লো। শুরু হলো ছন্দপতন। গত শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী তমা মির্জার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার মামলা ঠুঁকেছেন তার স্বামী।
এবার হিশাম চিশতীকে মারধরের কিছু ছবি মিডিয়ায় এসেছে। হিশাম চিশতী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তিনি আগেই বিচ্ছেদ চেয়েছিলেন, তার জের ধরেই হামলার শিকার হতে হয়েছে তাকে। হিশাম চান, তার এ ঘটনা থেকে লোক শিক্ষা নিক।
প্রকাশিত ছবিতে দেখা গেছে, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যান্ডেজ নিয়ে রয়েছেন তিনি। শরীরে মারধরের অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে। এসব তমা মির্জার নির্যাতনের চিত্র বলে তিনি জানান।
তবে সম্প্রতি স্বামী-স্ত্রীর বনিবনা না হওয়া প্রসঙ্গে তমা মির্জা বলেছেন, ‘প্রতিটি সংসারেই এমন টুকটাক সমস্যা হয়। সেটি আবার মিটেও যায়। অনেকদিন ধরেই ওর সঙ্গে নানা বিষয়ে আমার ঝামেলা চলছিল। এক পর্যায়ে সে আমার কাছে যৌতুক দাবি করে এবং যৌতুকের জন্য চাপ দেয়। মানসিক ও শারীরিকভাবে আমাকে নির্যাতন করা হচ্ছিল। বাধ্য হয়েই মাসখানেক আগে আমি বাড্ডা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি।’
তমা আরও বলেন, ‘অভিযোগ দায়েরের পর থেকেই সে আমার ওপর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। লোকজন নিয়ে আমার বাসায় এসে আমাকে হুমকি দেয়া শুরু করে। গত ৫ ডিসেম্বর সে লোকজন নিয়ে এসে আমার বাসায় হট্টগোল করে। আমাকে ও আমার বাবার শরীরে হাত তোলে। উপায় না দেখে আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিই। এরপর পুলিশ আসে, পুলিশের সামনেও সে দুর্ব্যবহার করে।’
তিনি বলেন, ‘এরপর পুলিশই আমাকে ওর বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য বলে। পরদিন (৬ ডিসেম্বর) আমি ওপর বিরুদ্ধে বাড্ডা থানায় যৌতুক, নারী নির্যাতন ও সাইবার ক্রাইম আইনে মামলা করি। বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসা হবে বলে ওর বোন আমাদের জানায়। তাই আমি চুপ ছিলাম। কিন্তু মীমাংসা না করে উল্টো তারা আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের নামে মিথ্যা মামলা করেছে। মামলার পরই সে কানাডায় চলে গেছে।’
এদিকে তমার স্বামী হিশাম চিশতির অভিযোগ, তমা তার কাছ থেকে মোট ২০ লাখ টাকা ধার নিয়েছেন। সেই টাকা ফেরত দেয়ার নামে টালবাহানা করছেন। একপর্যায়ে টাকা দেয়ার নামে হিশামকে বাসায় ডেকে মারধর করা হয়।
এমন অভিযোগের জবাবে তমা মির্জা বলেন, ‘২০ লাখ টাকার অংকটা সে উল্টো সাজিয়েছে। সে আমার কাছ থেকে যৌতুকের জন্য ২০ লাখ টাকা দাবি করে। মেয়ের সুখের কথা ভেবে বাবা বিভিন্ন সময়ে ওকে ১০ লাখ টাকা দেয়। ওইদিন (৫ ডিসেম্বর) বাকি ১০ লাখ টাকার জন্য সে আমার বাসায় আসে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় সে আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং গায়ে হাত তোলে। বাধ্য হয়ে আমি ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিই।’
তমার ভাষ্য- ‘আমিও আসামি, সেও আসামি। সে যদি নিরপরাধ হতো তবে কেন কানাডায় চলে গেল। সে আমাকে ও আমার পরিবারকে ফাঁসানোর জন্যই এ মামলা করেছে।’
এমবি মানিকের ‘বলো না তুমি আমার’ ছবির মধ্য দিয়ে রুপালি পর্দায় ক্যারিয়ার শুরু করা তমা মির্জা ২০১৫ সালে শাহনেওয়াজ কাকলীর ‘নদীজন’ ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান।