‘করোনা’ সংকটে একাধিক তারকা
করোনার আতঙ্ক যখন দূর হতে চলছিল ঠিক এমন সময় আবারো এ নিয়ে আতঙ্ক সবার মাঝে। শোবিজের শুটিংসেট থেকেও অনেক তারকা আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়। এছাড়াও অনেক সিনিয়র তারকা সম্প্রতি আক্রান্ত হয়েছেন। অনেকে রয়েছেন চিকিৎসাধীন অবস্থায়, আবার অনেকে সুস্থ ঘরে ফিরেছেন। পরিবারের সবাই প্রার্থনা চাইছেন তাদের জন্য। দ্রুত যেন ঘরে ফেরেন প্রিয় মানুষটি। আক্রান্তদের বর্তমান অবস্থা নিয়ে সাজানো হয়েছে লেখাটি—
চিকিৎসাধীন রয়েছেন ফারুক
কিছুদিন আগেই সিঙ্গাপুর থেকে এলেন কালজয়ী চিত্র অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। এরপর আবারো মন খারাপের খবর। করোনা আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় রয়েছেন তিনি। জানা যায়, ৯ নভেম্বর সংসদ অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন ফারুক। এর পরদিন জ্বর আসে তার। সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
সিঙ্গাপুর থেকে আসার পর করোনা আক্রান্ত হন তার স্ত্রী ও মেয়ে। পরবর্তীতে তারা সুস্থ হলেও হাসপাতালে ভর্তি করতে হয় ফারুককে। ফারুকের সঙ্গে হাসপাতালেই থাকছেন তার স্ত্রী। অন্যদিকে, বাসায় আইসোলেশনে আছেন তুলসী।
শঙ্কামুক্ত আজিজুল হাকিম
অভিনেতা আজিজুল হাকিম করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন। জানা যায়, এখন তিনি হাঁটাহাঁটি করতে পারছেন ও স্বাভাবিকভাবে খাবার খেতে পারছেন। তার ফুঁসফুসের সংক্রমণও এখন নিয়ন্ত্রণে। আজিজুল হাকিমের জ্বর ও ঠাণ্ডা কমেছে। তার আর কোনো শারীরিক জটিলতা দেখা না দিলে খুব শিগগিরই তিনি বাসায় ফিরতে পারবেন বলে জানান তার ছোট ভাই সোহেল হাকিম।
করোনা আক্রান্ত হয়ে গত ১২ নভেম্বর রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন আজিজুল হাকিম। তার অবস্থার অবনতি হলে পরদিন তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। এরপর গত ১৫ নভেম্বর এই অভিনেতাকে লাইফ সাপোর্ট থেকে সরিয়ে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে নেওয়া হয়। এরপর স্থানান্তর করা হয় কেবিনে।
হাসপাতালটিতে ড. মহিউদ্দীনের তত্ত্বাবধানে আজিজুল হাকিমের চিকিত্সা চলছে। জানা যায়, নিয়মিত পরিচর্যায় দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন তিনি।
শঙ্কামুক্ত নন জুয়েল আইচ
করোনামুক্ত হয়েছেন জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ। আক্রান্ত হওয়ার পর তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। এরপর অবস্থার উন্নতি হলে কেবিনে নিয়ে আসা হয় তাকে। তবে এখনো শঙ্কামুক্ত নন তিনি। তবে চিকিত্সকরা জানাচ্ছেন শিগগিরই তাকে বাড়ি নেওয়া যাবে। গত ৪ নভেম্বর জ্বরে আক্রান্ত হন জুয়েল আইচ। জ্বরের মাত্রা বাড়তে থাকায় চিকিত্সকের পরামর্শে তিনি করোনা পরীক্ষা করান। পরীক্ষায় জানা যায় তিনি করোনা পজিটিভ। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে নেওয়া হয় সিএমএইচে। তার ফুঁসফুস ৪০ শতাংশের মতো সংক্রমিত হয়েছিল করোনায়। করোনা ছাড়াও জুয়েল আইচ ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছেন। বিপাশা আইচ ও তার মেয়ে খেয়া বর্তমানে সুস্থ হয়ে বাড়িতেই রয়েছেন। তবে জুয়েল আইচের অসুস্থতায় উদ্বিগ্ন তারা।
পরিবারের একাধিক সদস্যসহ আক্রান্ত বাপ্পারাজ ও সম্রাট
শোবিজ তারকাদের মধ্যে খবর অনুযায়ী সব শেষ করোনা আক্রান্তে খবর পাওয়া যায় বাপ্পারাজ ও সম্রাটের। এছাড়াও তাদের পরিবারের একাধিক সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বর্তমানে তারা গুলশানের লক্ষ্মীকুঞ্জে আইসোলেশনে আছেন। দুই ছেলে আক্রান্ত হলেও এখনো নিরাপদে আছেন তাদের মা খায়রুন্নেছা লক্ষ্মী। সম্রাট জানান, তার মা ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় বোনের বাসায় আছেন। তিনি বলেন, ‘শুক্রবার আমাদের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পুরো করোনাকালে আমরা সবাই বাসায় খুব সতর্কতার সঙ্গে চলেছি। তারপরও কীভাবে কী হলো বুঝিনি। আমার কথা হলো, করোনাকে কেউ হালকাভাবে নেবেন না। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মানুন। আমরা সবাই ডাক্তারের পরামর্শ মতো বাসায় আছি। সবার শারীরিক অবস্থা ভালো। দোয়া করবেন আমাদের জন্য।’ সপ্তাহখানেক আগে নায়ক সম্রাট, বাপ্পারাজ এবং তাদের স্ত্রী-সন্তানরা করোনায় আক্রান্ত হন। বাদ যাননি তাদের গৃহপরিচারিকাও।
করোনা আতঙ্ক থেকে রেহাই বেবী নাজনীনের
বহুদিন ধরেই আমেরিকার নিউ জার্সিতে বসবাস করছেন বেবী নাজনীন। হঠাত্ তার জ্বরের মাত্রা বেড়ে গেলে সেখানকারই একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে জ্বরের মাত্রা ১০৫ ডিগ্রি। তবে পরীক্ষা করে জানা গেছে, তিনি করোনায় আক্রান্ত নন। হাসপাতালে বেবী নাজনীনের সঙ্গে রয়েছেন তার ছেলে মহারাজ অমিতাভ ও মেয়ে রিনি সাবরিন। গত ১৯ নভেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের মাকে হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিত্সকরা বেবী নাজনীনের শারীরিক নানা পরীক্ষা করছেন। বেবী নাজনীনের কিডনিতে কিছু জটিলতা রয়েছে বলে জানান তার সন্তানরা।