বালু উত্তোলনে ঝুঁকির মুখে রেলসেতু, বেড়িবাঁধ
চট্টগ্রামের পটিয়ায় শ্রীমাই খাল ও ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের কারণে ঝুঁকির মুখে পড়েছে শ্রীমাই রেলসেতু ও খালের বেড়িবাঁধ। এ ছাড়া প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে খালের বেড়িবাঁধ ভেঙে পাহাড়ি ঢলে উপজেলার হাইদগাঁও, কচুয়াই, ভাটিখাইন, ছনহরা ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবার গৃহহীন ও কোটি কোটি টাকার ফসল নষ্ট হয়।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার শ্রীমাই খাল থেকে অবৈধভাবে প্রতিদিন ৫০০ থেকে ৭০০ ট্রাক বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে এলেও উপজেলা প্রশাসন রহস্যজনক কারণে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। বালু উত্তোলনের ঘটনায় চারপাশের পরিবেশে মারাত্মক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে স্থানীয় কৃষকরা জানান। ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে প্রশাসন নীরব থাকায় হতাশা দেখা দিয়েছে কৃষকদের মাঝে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন পটিয়া উপজেলার চারটি পয়েন্টে সরকারিভাবে ইজারা দিলেও নির্দিষ্ট সীমানার বাইরে থেকেও ড্রেজার ও এক্সকাভেটর দিয়ে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে। উপজেলার তিনটি খালের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে বালু উত্তোলনের পাশাপাশি খালের মাটি প্রকাশ্যে লুট করে নেওয়া হচ্ছে।
সরকারি দলের ছত্রচ্ছায়ায় থেকে একটি প্রভাবশালী মহল দাপট দেখিয়ে কিছুদিন ধরে উপজেলার বাহুলী, শ্রীমাই, হাইদগাঁও, ভাটিখাইন, খরনা এলাকা থেকে প্রতিদিন বালু তুলছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে ড্রেজার মেশিন ও সরঞ্জামাদি জব্দ করে তা নষ্ট করে দেওয়ার পরও বালু উত্তোলন অব্যাহত আছে। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালত বালু উত্তোলন চক্রের কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। সরকারি নীতিমালা না মেনে বালু উত্তোলনের কারণে বর্ষা মৌসুমে শ্রীমাই খাল, চানখালী খাল ও খরনা খালের দুই পাড় ভেঙে বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে খরনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান বলেন, শ্রীমাই খালের ওপর খরনা রেলসেতুর দুই পাশ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে এলাকার রাস্তাঘাটসহ শ্রীমাই ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কে বা কারা রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু তুলছে তা আপনাদের লিখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করে প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করছি।
পটিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফয়সাল আহমেদ বলেন, মাস দুয়েক হলো এখানে এসেছি। আপনার মাধ্যমে জানতে পেরেছি যে শ্রীমাই খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।