চট্টগ্রাম বন্দরে জালিয়াতির মাধ্যমে কন্টেইনার খালাসের চেষ্টা
চট্টগ্রাম বন্দরের জালিয়াতের মাধ্যমে আমদানি পণ্য খালাসের চেষ্টাকালে দুইটি কাভার্ড ভ্যান ও একটি কন্টেইনার আটক করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজের জেটি সরকার মো. গোলাম ফারুক খানকেও আটক করা হয়।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) ইয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বন্দরের এনসিটি ইয়ার্ডের ডেলিভারি এলাকায় নিরাপত্তা বিভাগের এএসআই পিয়াস দাস ও নিরাপত্তা রক্ষী নাসির উদ্দীন আবছার গাড়ি তল্লাশি চালায়। এসময় দুইটি খালি গাড়ির (ঢাকা মেট্রো-ট-১৩-৩২৭৮, ঢাকা মেট্রো-ট-১২-৩২৭৭) গেইটপাস (বন্দরের প্রবেশ পাস) চেকিং করতে গিয়ে দেখতে পাওয়া যায় সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজের অধীনে গেইটপাশ ইস্যু হয়। কিন্তু গাড়িগুলো যে কন্টেইনারের মালামাল লোড করবে তা খান এন্টারপ্রাইজের অ্যাসাইনমেন্ট ভুক্ত কন্টেইনার নয়। এসময় বন্দর নিরাপত্তা বিভাগ কাভার্ড ভ্যান দুইটি এবং কন্টেইনারটি আটক করা হয়। একই সঙ্গে কাভার্ড ভ্যান দুটির ড্রাইভার ও সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান খান এন্টারপ্রাইজের জেটি সরকার মো. গোলাম ফারুক খানকেও আটক করা হয়।
জানা যায়, আটককৃত কন্টেইনারটি (MRKU6142156) গত বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বন্দর থেকে ডেলিভারির জন্য (সিরিয়াল -১৩, সিসিটি ইয়ার্ড) কন্টেইনারটির প্রকৃত সিএন্ডএফ এজেন্ট দ্রুত ইন্টারন্যাশনালের অধীনে অ্যাসাইনমেন্টভুক্ত ছিল। আমদানি হওয়া কন্টেইনারটি ছিল কাপড়ের। কন্টেইনারটি গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বন্দরে রিসিভ হয়। বর্তমানে এটি অকশন কন্টেইনার হিসেবে রয়েছে যার রোটেশন নাম্বার ২৭৭৪/২০১৯। গত ১২ মার্চ কন্টেইনারটি ইনভেন্ট্রি হয়েছিল।
সূত্র জানায়, বন্দরের রিভিউটার আক্রশি মারমা নিরাপত্তা রক্ষীদের অবগত না করে কন্টেইনারের ওপেনিং সীল ব্যতিত কন্টেইনারটির সীল কাটে। অপরদিকে সিএন্ডএফ এজেন্ট খান এন্টারপ্রাইজের ৩টি কন্টেইনার শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এনসিটি ইয়ার্ডের ডেলিভারি এসাইনমেন্ট ভুক্ত ছিল। কন্টেইনারগুলোর মালামাল ছিল বেবি ডায়াপার। খান এন্টারপ্রাইজের ৩টি কন্টেইনারের মালামাল লোড দেবার জন্য ৯টি খালি কাভার্ড ভ্যান বন্দর অভ্যন্তরে প্রবেশ করায়। কিন্তু ৭টি গাড়িতে তাদের মালামাল পূর্ণ হয়ে যায়। অর্থাৎ অতিরিক্ত ২টি খালি কাভার্ড ভ্যান তারা বন্দরে প্রবেশ করায়। পরে গাড়ি দুটিকে আটক করা হয়। আটককৃত ড্রাইভার ও জেটি সরকারকে নিরাপত্তা আশ্রয়ে প্রেরণ করা হয়।
এ বিষয়ে বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, সিএন্ডএফ এজেন্ট দ্রুত ইন্টারন্যাশনাল কন্টেইনারের পণ্য খালাসের জন্য অ্যাসাইনমেন্ট দেয়। কিন্তু খান এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সিএন্ডএফ এজেন্ট কনটেইনারটি ডেলিভারি নিয়ে যাবার চেষ্টা করে। বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের কর্মকর্তারা সেটি চ্যালেঞ্জ করে আটকে দেয়। এখানে বড় ধরনের জালিয়াতির চেষ্টা হয়েছে। আটক জেটি সরকারকে বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
তিনি জানান, এ ঘটনায় বন্দরের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। তারা আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানগুলোকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।