আওয়ামী লীগের সভাপতির অবহেলায় পানিবন্দি ২ হাজার মানুষ

0

খুলনার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সরদার নুরুল ইসলাম কম্পানির অবহেলায় পানিতে ডুবেছে ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের দুই হাজার মানুষের বাড়িঘর। ইউনিয়নের হাজতখালী বাজারের পুব পাশে কাশির হাটখোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙে  জোয়ারের পানিতে সকাল-বিকেল ডুবছে গ্রামগুলো। গত তিন মাসে প্রায় ৭০ একর জমি ও ৫টি বাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো শেষ হয়নি বাঁধের কাজ।

উত্তর বেদকাশী, হাজতখালী, কাটমার চর, গাজীপাড়া ঘুরে দেখা গেছে, জোয়ারের পানিতে তলিয়ে আছে ঘরবাড়ি। অনেকে ঘরের মধ্যে মাচা করে বসবাস করছে। কেউ কেউ অন্যত্র চলে যাচ্ছে জোয়ারের সময়। লবণ পানিতে এলাকার গাছপালা মরতে শুরু করেছে। ভাঙা বাঁধ দিয়ে হু হু করে পানি ঢুকে পড়ছে এলাকায়।

এলাকাবাসী জানান, চলতি বছরের ২০ মে রাতে আম্পানে কপোতাক্ষ নদের ভাঙনে হাজতখালী বাজারের পূর্ব পাশের পাউবোর বেড়িবাঁধটি ১ ফুটের মতো ভেঙে বদ্ধ দেওয়ানি খালের সঙ্গে মিশে যায়। কিছু দিনের মধ্যে জোয়ারের পানির চাপে ওই স্থানের দেড় শ ফুট ভেঙে যায়। তখন থেকে জোয়ারের পানিতে ডুবতে থাকে উত্তর বেদকাশী, হাজতখালী, কাটমার চর, গাজীপাড়া, শেখপাড়া, সরদারপাড়া গ্রামগুলো। সেই সঙ্গে পানির চাপে দেওয়ানি খালের দুই পাশ ভাঙতে থাকে। অনেকে ঘরের মধ্যে মাচা করে বসবাস করলেও বেশির ভাগ মানুষ গ্রাম ছেড়ে কাশির হাটখোলায় পাউবোর বেডিবাঁধের ওপর আশ্রয় নিয়েছে। অনেকে আবার ইউনিয়ন ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করতে শুরু করেছে। বাজারঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বাজার করতে প্রায় ৬ কিলোমিটার যেতে হচ্ছে এলাকার বাসিন্দাদের। গত তিন মাসের ভাঙনে ৭০ একর জমি ও ৫টি বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। কিছু দিন আগে বাঁধ নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে।

১৮ কাঠা জমি হারানো বিনয় কৃষ্ণ সরকার বলেন, আম্পানের রাতে হাত দুই বাঁধ ভাঙে। চেয়ারম্যান সাহেবকে কতবার আমরা বলেছি, কিন্তু তিনি বাঁধ দিলেন না। তখন যদি ওই স্থানে বাঁধটি দিতেন, তবে আমাদের আজ সব হারিয়ে পানির তলে বসবাস করতে হতো না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, আজকের এই দুর্ভোগের জন্য দায়ী চেয়ারম্যান। তিনি ওই কাজ নিজে করতে চেয়েছিলেন। বড় করে ভাঙলে বড় প্রকল্প পাওয়া যাবে সেই আশায় ছোট অবস্থায় বাঁধ দেননি। তার লোভের কারণে আজ দুই হাজার মানুষের ভোগান্তি চরমে। 

ইউনিয়নের সাবেক মহিলা মেম্বর (১, ২, ৩ নম্বর ওয়ার্ড) কল্পনা রানী সরকার বলেন, চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি বলেন, এমপির অনুমতি ছাড়া এখানে মাটি  দিলে মামলা খেতে হবে। কয়েক দিন পরে এমপি সাহেব এসে বললেন, এত বড় ক্ষতি কেন করলেন চেয়ারম্যান সাহেব।

অভিযোগ অস্বীকার করে সরদার নুরুল ইসলাম কম্পানি বলেন, আমি চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু পারিনি। এখানে দলাদলি আছে, তাই আমার বিরোধীরা এসব মিথ্যা কথা বলছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com