ঘুষ ছাড়া কিছুই বোঝে না হামিদ মেম্বর

0

বয়স্ক, বিধবা বা প্রতিবন্ধি ভাতা। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তার সব ভাতার জন্য ৫ হাজার টাকা । আর ঘর বরাদ্দের জন্য ১৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা করে ঘুষ নেন মেজবাউল হোসেন হামিদ নামে মাগুরার এক ইউপি মেম্বর। আর এই ঘুষের টাকা ভাগ বাটোয়ারা করেন চেয়ারম্যান মিজান শিকদারের সাথে। হামিদ  মেম্বর এর দুনীতির বিরুদ্ধে এলাকাবাসী  মানববন্ধন, বিক্ষোভ, সমাবেশ ও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ পর্যন্ত করেছেন। কিন্তু তাতে টনক নড়েনি প্রশাসনের।  
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়ন পষিদের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বর মেজবাউল হোসেন হামিদ এর বিরুদ্ধে ব্যাপক অর্থিক দুনীর্তি, অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগিদের অভিযোগ- হামিদ মেম্বর এলাকার অসহায় দরিদ্র মানুষদের বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধি ভাতাসহ সরকারের সামাজিক নিরাপত্তার সব ভাতার কার্ড করে দেওয়ার নাম করে পাঁচ হাজার টাকা করে ঘুষ গ্রহন করেন।

এছাড়া সরকারি ঘর বরাদ্দের জন্য নিচ্ছেন ১৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। এভাবে তিনি কমপক্ষে শতাধিক লেকের কাছ থেকে হাতিয়ে নিয়েছেন মোটা অংকের অর্থ। এদের মধ্যে দুই-একজনের কপালে ভাতার কার্ড বা ঘর জুটলেও অধিকাংশ দরিদ্র মানুষই হয়েছেন বঞ্চিত। তবে যাদের ভাতা বা ঘর বরাদ্দ হচ্ছে না, তারা আর কেউ ঘুষের টাকা ফেরৎ পাননি। এজন্য এলাকার বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার মানুষ অবশ্য দুষছেন, ইউনিয়র পরিষদের চেয়ারম্যান মিজান শিকদারকে। কারণ মিজান শিকদার হামিদ মেম্বরকে প্যানেল চেয়ারম্যান বানিয়েছেন।
ভুক্তোভোগী এলাকাবসীর মধ্যে ইয়াকুব মোল্লা অভিযোগ করেন, প্রতিবন্ধি ভাতার কার্ড করে দেওয়ার জন্য হামিদ মেম্বর তার কাছ থেকে নিয়েছেন পাঁচ হাজার টাকা। রেশমা খাতুন বলেন, তিনি হতদরিদ্র মানুষ। তার প্রতিবন্ধি মেয়ের ভাতার জন্য পাঁচ হাজার টাকা, বিধবা ভাতার জন্য হালিমা বেগমের কাছ থেকে চার হাজার, ফাতেমা বেগমের কাছ থেকে তিন হাজার, ওমেলা খাতুনের কাছ থেকে চার হাজার, ফুলজানের কাছ থেকে পাঁচ হাজার, সবুরন বেগমের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন হামিদ মেম্বর। এদের মধ্যে টাকা দেওয়া দুই-একজনের কপালে কার্ড জুটলেও অধিকাংশ দরিদ্র মানুষ হয়েছেন বঞ্চিত।  শুধু ভাতার কার্ড নয়, সরকারি ঘর করে দেওয়ার জন্য নূর ইসলামের ছেলের কাছ থেকে সাত ও নূর ইসলামের কাছ থেকে পাঁচ হাজার, আইয়ুব কাজীর  কাছ থেকে  ১৫ হাজার,  রিক্তা পারভীনের কাছ থেকে ১৫ হাজার, বাটুল মিয়ার কাছ থেকে ১৫ হাজার, মুক্তিযোদ্ধা সবুর মিয়ার কাছ থেকে ১৫ হাজার, সাহেব আলীর কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা নিয়েছেন। হালিমা বেগম বলেন, তিনি বিধবা তার উপর মাথা গোজার ব্যবস্থা নেই। হামিদ মেম্বর-এর কাছে সরকারি ঘরের জন্য অনেক ঘুরেছি। কিন্তু তার চাহিদা মত টাকা দিতে পারেনি বলে, কপালে ঘর জোটেনি। ঘুল্লিয়া গ্রামের আরব আলী বলেন, করোনার জন্য সরকারের দেওয়া ২৫শ’ টাকার থেকে পর্যন্ত হামিদ মেম্বর ৫শ’ টাকা করে কেটে রেখেছেন।
বিনোদপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি আতর আলী, সহ-সভাপতি ইমান উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ ম-ল সমাজসেবি আরব আলীসহ খালিয়া গ্রামের একাধিক ব্যক্তির দাবি, এলাকার প্রায় শতাধিক লোকের কাছ থেকে এ ধরনের ঘুষ গ্রনের প্রমান রয়েছে তাদের কাছে। আর এই অনিয়ম দুনীর্তির পেছনের মূল হোতা বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজান শিকদার।                                                           
বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মিজান শিকদার বলেন, হামিদ মেম্বর এর বিষয়টি ইউএনও সাহেব তদন্ত করছেন। তাছাড়া তিনি হামিদ মেম্বর এর কোন অনৈতিক কাজের সাথে জড়িত নন। মেম্বরদের ভোটে প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় হামিদ। তাই এ ব্যাপারে তার কোন হাত নেই।
তবে অভিযুক্ত ইউপি মেম্বর মেজবাউল হোসেন হামিদ মেম্বর  বলছেন, সামনে নির্বাচন। যে কারনে কিছু মানুষ তার রিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি করো কাছ থেকেই কোন ঘুষ গ্রহন করেননি। একটি মানুষও তার সামনে এসে টাকার নেওয়ার কথা বলতে পারবেন না।
মহম্মদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, হামিদ মেম্বর এর বিরুদ্ধে তার কছে একটি লিখিত আভিযোগ এসছে। সেটি তদন্ত করা হচ্ছে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com