কামারখন্দে ছাত্রলীগ নেতাসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ থানায় হামলার অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন শেখসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) রাতে কামারখন্দ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) পলাশ চন্দ্র দেব বলেন, ৪ আগস্ট গভীর রাতে উপ-পরিদর্শক (এসআই) বিপ্লব বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
মামলায় এজাহারে বলা হয়েছে, ছাত্রলীগ নেতা এনামুল হক বিজয় হত্যা মামলার বাদী ও তার বড় ভাই রুবেলকে অপহরণের অভিযোগ এনে তাদের বাবা কাদের প্রমানিক ৩ আগস্ট থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওইদিনই এজাহারনামীয় আসামী কামারখন্দ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পারভেজ রেজা পাভেলকে গ্রেফতার করা হয়। প্রতিবাদে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন শেখ এক থেকে দেড়শ নেতাকর্মীকে নিয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে উস্কানীমূলক শ্লোগান বক্তব্য দেয়। এসময় উত্তেজিত হয়ে পাভেলকে ছিনিয়ে নেয়ার হুমকি দেয়।
এক পর্যায়ে আসামী পাভেলকে ছিনিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে মামুনের নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা আরও ১৪-১৫ থানার থানা কম্পাউন্ডে ঢুকে মূল ভবনে প্রবেশ করে। এতে বাধা দিলে তারা পুলিশের উপর চড়াও হয় এবং ধস্তাধস্তি শুরু করে। এ অবস্থায় লাঠিচার্জ করে তাদের ছাত্রভঙ্গ করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে অন্যরা পালিয়ে গেলেও অপহরণ মামলার প্রধান আসামী মামুনকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে ২ আগষ্ট বিজয় হত্যা মামলার বাদী বড় ভাই রুবেলকে কামারখন্দ বাজার এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে করে অপহরণ করা হয়। হত্যা মামলা তুলে নিতে এবং নিহত বিজয়ের ব্যবহৃত মোবাইল ও মেমোরী কার্ডের জন্য চাপ দেয় অপহরণকারীরা। একপর্যায়ে রুবেলের চিৎকারে বেকায়দায় পড়ে গিয়ে অপহরণকারীরা তাকে বগুড়ার মাঝিরা ক্যান্টরমেন্ট এলাকায় মাইক্রোবাস থেকে ফেলে দেয়। স্থানীয় একটি মসজিদের মুসুল্লীরা তাকে অসুস্থ্য অবস্থায় পায়। শাহজাহানপুর থানা পুলিশ তাকে সেখান থেকে উদ্ধারের করে।
এর আগে ২৬ জুন শহরে সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের স্মরণে দোয়া মাহফিলে যোগ দিতে যাওয়ার পথে জেলা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ও কামারখন্দ সরকারী হাজী কোরপ আলী ডিগ্রি কলেজ শাখার সভাপতি বিজয়কে মাথায় কুপিয়ে আহত করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯দিন পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় বড় ভাই রুবেল বাদী হয়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ মামলায় বর্তমানে ৩ জন জেলে রয়েছে।
এ অবস্থায় নিহত বিজয় স্মরণে মিলাদ মাহফিলকে কেন্দ্র করে ৭জুন ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। এসব ঘটনায় পাল্লাপাল্টি আরও ৪টি মামলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে বিভক্তি দেখা দেয়ায় কেন্দ্রীয় কমিটির হস্তক্ষেপে ৮ জুলাই থেকে জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয় তালা বন্ধ এবং সকল অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের দলীয় কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে।