খুলনার ট্রিপল মার্ডার: ১৭ দিন পর অস্ত্র-গুলি উদ্ধার,মূল হোতা আ.লীগ নেতা ধরা-ছোয়ার বাইরে
খুলনা মহানগরীর খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী গ্রামে গুলি চালিয়ে তিন গ্রামবাসীকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দুইটি ওয়ান শ্যুটার গান, দুই রাউন্ড গুলি এবং তিনটি কার্তুজের খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রিপল মার্ডারের ১৭ দিন পর রবিবার রাতে মশিয়ালী উত্তরপাড়া শেখ বাড়ির কবরস্থান ও সরদার বাড়ির পেছন থেকে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) এ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগর গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বলেন, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় রিমান্ডে থাকা আসামি শেখ জাফরিন হাসানের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী একটি বাড়ির বাগান থেকে অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে। বাগানটি তাদের বাড়ি থেকে আনুমানিক এক কিলোমিটার দূরে মশিয়ালী সরদার বাড়ি সংলগ্ন উত্তরপাড়ায়। ওই বাগানের একটি ডোবায় বাজারের ব্যাগে করে মাটি চাপা দেয়া ছিল উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গুলি। এছাড়া বাড়ির চারদিকে গোয়েন্দা সুইপিং করে ঘটনার দিন ব্যবহৃত তিনটি গুলির খোসাও (কার্তুজ) উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, উদ্ধারকৃত অস্ত্র দিয়ে গুলি চালিয়েই তিনজনকে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে বিষয়টি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) কানাই লাল সরকার জানান, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধারের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সূত্র মতে, ট্রিপল মার্ডারের অন্যতম অভিযুক্ত শেখ জাফরিন হাসানকে গত ১৮ জুলাই বিকেলে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার দাঁতপুর গ্রাম থেকে নগর গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে। সে প্রথম দফায় খানজাহান আলী থানা পুলিশের হেফাজতে ৮ দিনের রিমান্ডে ছিল। সেখানে সে অস্ত্রের তথ্য দেয়নি। কিন্তু মামলা নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে হস্তান্তর হলে দ্বিতীয় দফায় ৫ দিনের রিমান্ডে থাকাকালে সে অস্ত্রের কথা স্বীকার করে। আজ সোমবার তার রিমান্ড শেষ হবে।
অপরদিকে, ঘটনার মূল হোতা বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা শেখ জাকারিয়া হাসান ও তার ভাই মিল্টনসহ বাকি ১৮ জন আসামি এখনো ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। গত ১৭ দিনেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি। শেখ জাকারিয়া, শেখ জাফরিন হাসান ও শেখ মিল্টন তিন ভাই।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই রাতে খুলনার খানজাহান আলী থানার মশিয়ালী এলাকায় জাকারিয়া বাহিনীর গুলিতে মারা যান আটরা-গিলাতলা ইউনিয়নের মশিয়ালী গ্রামের মৃত বারিক শেখের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৬০) ও একই গ্রামের মো. ইউনুচ আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০)। এ সময়ে গুলিবিদ্ধ হন মো. সাইফুল ইসলাম, আফসার শেখ, শামীম, রবি, খলিলুর রহমান ও মশিয়ার রহমানসহ আরও কয়েকজন। আহত সাইফুল ইসলাম পরদিন সকালে মারা যান। অপরদিকে, বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী গণপিটুনি দিয়ে জাকারিয়া বাহিনীর সদস্য ও জাকারিয়ার চাচাতো ভাই জিহাদ শেখকে হত্যা করে। এ ঘটনায় মোট ৪ জন নিহতের ঘটনা ঘটে।