টান দিলেই উঠে আসছে কার্পেটিং, প্রতিবাদ করায় এলাকাবাসীকে হুমকি

0

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার হোসেনাবাদ-মথুরাপুর সড়কের ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯ লাখ ২৭ হাজার ২৭৬ টাকা। সিডিউল অনুসারে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর কাজটি শুরু হয়ে চলতি বছরের ১২ মার্চ সম্পন্ন হওয়ার কথা।

তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এখনও রাস্তার নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি। এখন চলমান রয়েছে রাস্তার নির্মাণ কাজটি।

তবে হাত দিয়ে টান দিলেই উঠে আসছে সদ্য নির্মিত রাস্তার কার্পেটিং। বহুল প্রতিক্ষিত রাস্তার কাজের এই মান নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। রাস্তার নির্মাণ কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে উল্টো ঠিকাদারের লোকজনের হুমকির মুখে পড়েছেন স্থানীয়রা।

জানতে পেরে সরেজমিনে রাস্তার কাজ পরিদর্শনে গিয়ে অনিয়ম দেখতে পেয়ে উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দার কাজটি আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলায় বেশ কয়েকটি রাস্তার কাজ চলছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) অর্থায়নে। এর মধ্যের একটি হোসেনাবাদ স’মিল পাড়া থেকে মথুরাপুর গোহাট পর্যন্ত। ১.৭ কিলোমিটার এ রাস্তার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৯ লাখ ২৭ হাজার ২৭৬ টাকা।

jagonews24

সিডিউল অনুসারে গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর কাজটি শুরু হয়ে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল চলতি বছরের ১২ মার্চ। তবে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও এখনও সেই কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এখন তড়িঘড়ি আর যেন-তেনভাবে চলছে এ রাস্তার কাজ। নিম্নমানের ইট, খোয়া, পাথর এবং বিটুমিন দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করায় এর প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসী এলজিইডির নির্বাহী প্রকোশলীর (কুষ্টিয়া) কাছে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।

এর প্রেক্ষিতে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দার সোমবার (১৫ জুন) সংশ্লিষ্ট রাস্তার কাজ দেখতে যান। এ সময় প্রকৌশলীর সঙ্গে থাকা ঠিকাদারের লোকজন প্রতিবাদকারীদের হুমকি দেন বলে তারা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন।

তারা জানান, রাস্তার কাজ এতই নিম্নমানের হয়েছে যে, হাত দিয়ে টান দিলেই কার্পেটিং উঠে আসছে। তাদের অভিযোগ দ্রুত কাজ শেষ করতে ঠিকাদার বৃষ্টি বাদল কিছু মানছেন না। বৃষ্টির মধ্যেও চলে কার্পেটিংয়ের কাজ।

তারা বলেন, এখনও রাস্তার কাজ শেষই হয়নি, এর মধ্যেই যদি কার্পেটিং উঠে যায় তাহলে অল্পদিনেই রাস্তা আগের অবস্থায় ফিরে যাবে।

এলাকাবাসী জানান, টিটু এন্টারপ্রাইজ নামে একটি প্রভাবশালী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের মাধ্যমে এ রাস্তার কাজ পায়। তবে ওই প্রতিষ্ঠান পরে নাসির উদ্দিন নামে এক ঠিকাদারকে কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়।

স্থানীয় বাসিন্দা বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মোতাছিম বিল্লাহ অভিযোগ করে বলেন, রাস্তার কাজে অনিয়ম হচ্ছে এটি বেশ কিছুদিন ধরে শোনা যাচ্ছে। এলাকাবাসী বাধা দিতে গেলে তাদের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

জানতে চাওয়া হলে ঠিকাদার নাসির উদ্দিন বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টিটু এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী টিুটু তার চাচা হন। তারা যৌথভাবেই এ সড়ক নির্মাণের কাজ করছেন। তিনি দাবি করেন দৌলতপুর উপজেলা প্রকৗশলী নিজে দাঁড়িয়ে থেকে কাজ দেখছেন। তাই এখানে অনিয়মের কোনো সুযোগ নাই।

তবে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী ইফতেখার উদ্দিন জোয়ার্দার বলেন, রাস্তার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে এমন অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি নিজে এলাকায় গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে জেলা অফিসে পাঠানো হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার পর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com