মুন্সীগঞ্জে হিমাগারগুলোর অর্ধেক ফাঁকা
পর্যাপ্ত আলু সংরক্ষণের অভাবে মুন্সীগঞ্জে হিমাগার মালিকরা বড় অঙ্কের লোকসানের আশঙ্কা করছেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে জেলার হিমাগারগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু সংরক্ষণ করা যায়নি। গণপরিবহনের পাশাপাশি শ্রমিক-সংকটের কারণে হিমাগারগুলোতে অন্তত ৪০ ভাগ জায়গা ফাঁকা রয়ে গেছে।
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. মোশারফ হোসেন পুস্তি আশঙ্কা ব্যক্ত করে বলেন, এ অবস্থায় জেলার ৬টি উপজেলার ৭৪টি হিমাগারকে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা লোকসান গুনতে হবে।
মার্চের মধ্যে বিস্তীর্ণ জমি থেকে আলু উত্তোলনের পর প্রতি বছরের মতো এপ্রিলের শুরু থেকে কৃষক-ব্যবসায়ীদের আলু সংরক্ষণে ব্যস্ত থাকার চিত্র এবার দেখা যায়নি। করোনা পরিস্থিতিতে আলু সংগ্রহে পরিবহন ও শ্রমিকের অভাবে প্রতিকূল অবস্থায় পড়তে হয়েছে তাদের। ফলে হিমাগারগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু সংরক্ষণ করা যায়নি।
মোশারফ হোসেন পুস্তি বলেন, সংরক্ষণ মৌসুমে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। আর ওই সময় অস্বাভাবিক হারে আলু কিনেছে ক্রেতারা। ফলে বাজারে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় দামও বেড়েছে। এ কারণে বাড়তি দামে কিনে আলু সংরক্ষণে আগ্রহ কমে যায় ব্যবসায়ী ও কৃষকের। আবার যারা সংরক্ষণ করতে চেয়েছেন, তারাও পর্যাপ্ত আলু পাননি। যেসব কৃষক ও ব্যবসায়ী বাজার থেকে কিছু পরিমাণ আলু সংগ্রহ করতে পেরেছেন, তারাও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়ছেন। তিনি আরও বলেন, এখন সঠিকভাবে সংরক্ষণ করা সম্ভব না হলে আলুতে বছরব্যাপী চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে না। মৌসুমের শেষদিকে ঘাটতি দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা তার।
জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার রহিমগঞ্জ বাজারের একতা হিমাগারের ব্যবস্থাপক দ্বীন ইসলাম বলেন, সারা দেশেই হিমাগারগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলু সংরক্ষণ করা যায়নি। হিমাগারগুলোতে সংরক্ষণের জায়গা কিছুটা হলেও ফাঁকা রয়েছে।
শহরের উপকণ্ঠ পশ্চিম মুক্তারপুর এলাকার আবির এগ্রো ফুডের কর্মকর্তা রাসেল শেখ জানান, তাদের হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা ৫০ কেজি ওজনের তিন লাখ বস্তা। এ পর্যন্ত তাদের দুই লাখ ৪০ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষণ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত : জেলার ৬টি উপজেলায় সাড়ে ১২ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। আর জেলার ৭৪টি হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা প্রায় পাঁচ লাখ মেট্রিক টন।