ঢাকার রাস্তায় জট, ঝুঁকির মধ্যেই খুলেছে অফিস, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান
দুই মাসেরও অধিক সময় রাজধানী ঢাকা ছিল ফাঁকা। কয়েকটি ব্যক্তিগত গাড়ি ছাড়া ব্যস্ত এই শহরকে চেনাই যেত না। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকার সাধারণ ছুটি দিয়ে রেখেছিল। তবে ৬৬ দিন পর ছুটি শেষে অফিসপাড়া কোলাহলে পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। রাজধানীর আনাচে-কানাচে প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই খুলে গেছে। তবে সরকারের তরফে বলা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাইকে অফিস করতে হবে। এদিকে দীর্ঘ ছুটির পর রাজধানীর চিরচেনা চেহারা স্বরূপে ফিরেছে। রোববার সকাল থেকেই দেখা গেছে রাজপথে গাড়ির জটলা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বুলেটিনে জ্যামিতিক হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির খবরেও যেন কারো ভীতি নেই মনে। ঢাকার পথে পথে মানুষ আর মানুষ। দলে দলে যোগ দিয়েছেন কর্মস্থলে। সকালেই বাড্ডা, মহাখালী, কারওয়ান বাজার, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সড়কে সড়কে গাড়ির জটলা। গণপরিবহনগুলোর কিছু স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করছে। আবার কোনোটিতে তা মানা হচ্ছে না।
যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণপরিবহন কখনোই সীমিত আকারে চালানো সম্ভব নয়। তারা বলছেন, করোনা সংক্রমণের দিক থেকে নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে এভাবে সব খোলার সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী। আপত্তি এসেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকেও। তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, অর্থনীতি সচলের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এসব খোলা হবে। ১৫ই জুন পর্যন্ত পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে। তবে ততদিনে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার অবস্থায় থাকবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিশেষজ্ঞদের। কেননা, দেশে ‘লকডাউন’ও ঠিকভাবে করা যায়নি, যে কারণে ভাইরাস এখন ৬৪ জেলায়ই ছড়িয়ে পড়েছে।
করোনা প্রাদুর্ভাব এড়াতে গত ২৬ মার্চ থেকে শুরু হয় সাধারণ ছুটি। দফায় দফায় তা বাড়িয়ে সর্বশেষ গত ১৯ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। ৬৬ দিন বন্ধ থাকার পর শর্তসাপেক্ষে আজ থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
এই সময় স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে জারিকৃত ১৩ দফা নির্দেশনা কঠোরভাবে অনুসরণের পাশাপাশি সবাইকে অবশ্যই মাস্ক পরে অফিসে আসতে বলা হয়েছে। তবে বয়স্ক, অসুস্থ ও সন্তান সম্ভবাদের এ সময় অফিসে আসা মানা।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা না এলে চরম মূল্য দেয়া লাগতে পারে বলে সতর্ক করেছেন । লকডাউন সঠিকভাবে কার্যকর না হওয়ায় সারাদেশে সামাজিক সংক্রমণ ঘটায় জুন মাসে দেশে করোনায় ব্যাপক প্রাণহানির আশঙ্কা করেছে ডক্টরস প্লাটফর্ম ফর পিপলস হেলথ। তারা মনে করছেন, সবকিছু খুলে দেয়ার ফলে নিয়ন্ত্রণহীন পর্যায়ে পৌঁছে যেতে পারে প্রাণঘাতী ভাইরাসটির প্রকোপ। তবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আজ থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবে প্রশাসন। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় সহায়তা দেয়ার জন্য সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।