সব কর্মীকে একসঙ্গে কাজে না ফেরাতে আইএলও’র সতর্কতা
সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত আজ রোববার থেকে সীমিত আকারে খুলছে। তবে এর আগেই আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলও এ বিষয়ে সতর্কতা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরাও এ বিষয়ে সতর্কতা দিয়েছেন। তারা বলেছেন, এভাবে সব খুলে দিলে তাতে সংক্রমণ বাড়বে। কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন সব পক্ষই। বলা হয়েছে, তা না হলে ভয়াবহ বিপদ অপেক্ষা করছে। আইএলও বলেছে, সব কর্মীকে একসঙ্গে কাজে ফেরানো যাবে না। এক্ষেত্রে কর্মীদের ভিতর থেকে বাছাই করে নিতে হবে।
যেসব কর্মী বাসায় বসে কাজ করতে পারবেন, তাদেরকে বাসায় থেকে কাজ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাছাড়া কোন কর্মী আগে অফিসে যোগ দেবেন তাও প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্ধারণ করার পরামর্শ দিয়েছে আইএলও। দীর্ঘদিন করোনা ভাইরাস মহামারির কারণে বন্ধ থাকার পর খুলছে এসব প্রতিষ্ঠান। তবে তার আগেই কর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে আইএলও। সম্প্রতি বিভিন্ন স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা পরামর্শের ভিত্তিতে সংস্থাটি ‘নিরাপদে কাজে ফেরা’ শীর্ষক একটি নির্দেশনা প্রকাশ করে। এতে কর্মস্থল খুলে দেয়ার আগে তার নিরাপত্তার মান বা সেখানে সংক্রমণের ঝুঁকি কতটা তা আগেভাগে মূল্যায়ন করে নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কর্মীদের নতুন করে কাজে ফেরার আগেই কিভাবে তারা কাজে ফিরবেন এবং কি পদ্ধতিতে ফিরবেন এসব নিয়ে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন। প্রয়োজনে তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। সচেতন করতে হবে।
ওদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অফিস আদালত খুলে দেয়ার বিষয়ে বলেছেন, এতে বিপদের ঝুঁকি বাড়বে। এভাবে অফিস আদালত খুলে দেয়ার আগে প্রমাণ করতে হবে যে, সংক্রমণ কমে যাচ্ছে। কিন্তু তা না করে, এমন সময়ে সবকিছু খুলে দেয়া হচ্ছে যখন সংক্রমণ প্রতিদিন বাড়ছেই। তারা অফিস আদালত সহ সব স্থানে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছেন। তা না হলে ভয়াবহ বিপদের আভাষ দিয়েছেন তারা। আইএলও তার নির্দেশনায় বলেছে, যেসব কর্মী কাজে ফিরবেন বাধ্যতামূলকভাবে দৈনিক নিজের কনটাক্ট লগ বা সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। সারা দিনে কর্মস্থলের কোন কোন সহকর্মীর কাছাকাছি গেছেন বা সংস্পর্শে এসেছেন, সেটি লিখে রাখতে হবে। এর ফলে অফিসের কেউ করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হলে তার সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। অতি জরুরি না হলে অফিসে সভা করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সভা করলে উপস্থিতি নিবন্ধন করতে হবে। এই নির্দেশনায় কর্মীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আইএলও আরো কিছু শর্ত দিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে কর্মীর ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা, কর্মস্থল পরিচ্ছন্ন করা, কর্মস্থলে বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা, কর্মীদের বাসা থেকে কর্মস্থলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে গণপরিবহন ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করা, কর্মস্থলে প্রবেশের আগে উপসর্গ পরীক্ষা করা অন্যতম। কোনো কর্মীর বাড়ির সদস্যদের কেউ আইসোলেশনে (বিচ্ছিন্নকরণ) থাকলে তাকে কাজে আসতে মানা করতে হবে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব হাবিবুর রহমান খান মিডিয়াকে বলেছেন, জনগণকে অনেক দিন ধরে সচেতন করা হচ্ছে। অফিস-আদালতে নিজস্ব কর্তৃপক্ষ রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মানতে হবে। পদে পদে চোখে রাখার মতো লোকবল সরকারের নেই।
একটি আইনি সহায়তা প্রতিষ্ঠানের এক কর্মী বলেছেন, তাদেরকে মাস্ক, গ্লাভস পরতে বলা হয়েছে। অফিসে নিয়মিত হাত ধুতে বলা হয়েছে। এর বাইরে বিশেষ কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্যবিধি কী কী মানতে হবে, সে বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি।