সীমিত পরিসরে মার্কেট খোলার পর মানুষের ঢল

0

প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর সীমিত পরিসরে খুলেছে মার্কেট। খোলার প্রথম দিনই যশোরের বাজারে মানুষের ঢল নামে। রোববার (১০ মে) সকাল থেকে বিকেল অবধি ছিল মার্কেটে উপচেপড়া ভিড়।

অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক কিংবা শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। হাজারো মানুষ করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে শহরে কেনাকাটা করেছেন। তবে প্রশাসন বলছে, স্বাস্থ্যবিধি তদারকি করার জন্য মাঠে রয়েছে প্রশাসনের একাধিক টিম।

জানা যায়, টানা ৪৪ দিন পর যশোরে স্বাস্থ্যবিধি মানার শর্তে সীমিত পরিসরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন। শনিবার জেলা প্রশাসনের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক রোববার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়। স্বাস্থ্যবিধিসহ বেশকিছু শর্ত দিয়ে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

যশোর শহরের এইচএমএম রোড, এমকে রোড, কালেক্টরেট মার্কেটসহ বিভিন্ন মার্কেট ও সংলগ্ন সড়কে মানুষের ঢল নামে। অনেক দিন পর দোকানপাট খোলায় ক্রেতার উপচেপড়া ভিড় ছিল। সবচেয়ে বেশি ভিড় সিট কাপড়ের দোকানে দেখা যায়। কিন্তু জেলা প্রশাসনের শর্ত অনুযায়ী অধিকাংশ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। ছিল না সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব। কেনাকাটার অজুহাতে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়।

রাকিবুল নামে এক ক্রেতা বলেন, মার্কেট খোলার প্রথম দিনই এসেছি। ভেবেছিলাম লোকজন কম হবে। এজন্য পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করতে এসেছি। এসে দেখি উপচেপড়া ভিড়। যাই হোক আজই সব কেনাকাটা শেষ করব। যাতে দ্বিতীয়দিন আসা না লাগে।

এইচ এম ক্লাথ স্টোরের মালিক রাফিউল আলম বাবু বলেন, জেলা প্রশাসনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলা হয়েছে। মার্কেটের ভেতরে ঢোকার আগে তাপমাত্রা মাপা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে তারপর দোকানে ঢুকতে দেয়া হয়েছে। তবে অনেকেই স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। বাধা দিলেও জোর করে দোকানে ঢুকছেন। কয়েক দিনের মধ্যে ক্রেতারা সচেতন হবেন বলে আশা করছি।

এমএম রোডের সিট সম্ভারের মালিক শাহজাহান কবির শিপলু বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখা হয়েছিল। প্রথম দিনই ক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। দোকানিরা স্বাস্থ্য সচেতন হলেও ক্রেতারা সেক্ষেত্রে কিছুটা অসচেতন।

আবদুস সালাম নামে এক স্কুলশিক্ষক বলেন, সরকার করোনা পরিস্থিতিতে দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত হয়নি। যশোরে ৪৪ দিন পর দোকানপাট খুলেই সড়কে যানজট এবং মার্কেটে ছিল উপচেপড়া ভিড়। দোকানপাট খোলার কারণে মনে হয় করোনা সংক্রমণ আরও বাড়বে।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী। এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য আমরা শনিবার মানববন্ধন করেছি। রোববার শহরে বের হয়ে দেখলাম মানুষের ঢল। একজন আরেকজনের ঘাড়ের ওপর উঠে যাচ্ছে। সরকার জনগণকে বিপদে ফেলে দিচ্ছে। আর জনগণ সচেতন নয়; তারা আত্মাহুতি দিতে প্রস্তুত। এর ফল জনগণ ও সরকারকেই নিতে হবে।

যশোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. শফিউল আরিফ বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ী ও ক্রেতা সাধারণকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এটি নিশ্চিত করার জন্য জেলা প্রশাসনের একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। বিধি অমান্য করলে জেল-জরিমানাসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার মতো পদক্ষেপ নেয়া হবে।

তুমি এটাও পছন্দ করতে পারো

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com